আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গ্রামীণ ব্যাংক আইনের খসড়া মন্ত্রিসভায় উঠছে বৃহস্পতিবার

গ্রামীণ ব্যাংক আইনের খসড়া আগামী বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠেয় মন্ত্রিসভার বিশেষ বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে। মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হলে দ্রুততম সময়ে তা পাঠানো হবে জাতীয় সংসদে। সরকারের বর্তমান মেয়াদেই পাস করানো হবে এই আইন।
সচিবালয়ে গতকাল সোমবার ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস, বাংলাদেশের (আইসিএমএবি) সঙ্গে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এসব কথা বলেন। আইসিএমএবির সভাপতি এ কে এম দেলোয়ার হোসেন, সাবেক সভাপতি জহিরউদ্দিন আহমেদ প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।


অর্থমন্ত্রী বলেন, গ্রামীণ ব্যাংক আইনে খুব বেশি পরিবর্তন থাকবে না। মূল কাজ ছিল আইনটাকে বাংলা করা। তা হয়ে গেছে। ১৯৮৩ সালের গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশে যা ছিল, আইনেও মোটামুটি তা-ই থাকবে।
গ্রামীণ ব্যাংকের জন্য কর অবকাশ-সুবিধা নির্দিষ্ট করে দেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান অর্থমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘যাদেরই কর অবকাশ-সুবিধা দেওয়া হয়, তা দেওয়া হয় মূলত একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য। গ্রামীণ ব্যাংকের ক্ষেত্রেও এখন তা-ই করা হবে। ’
অবশ্য গ্রামীণ ব্যাংক অধ্যাদেশের বলে গ্রামীণ ব্যাংক বর্তমানে কর অবকাশ নয়, বরং কর অব্যাহতির সুবিধা পেয়ে আসছে।
গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালক নির্বাচিত হওয়ার বিধিটা এরই মধ্যে হয়ে গেছে বলে উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, এত দিন এ বিষয়ে কোনো নিয়মকানুন ছিল না।


৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে গ্রামীণ ব্যাংক কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদন অর্থ মন্ত্রণালয়ে জমা পড়বে বলে গত ২২ সেপ্টেম্বর সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী। ইতিমধ্যে জমা পড়েছে কি না, জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘কমিশনের চেয়ারম্যান এখনো যোগাযোগ করেননি। কাল-পরশুও দিতে পারেন। ’
এদিকে গ্রামীণ ব্যাংকের সম্ভাব্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে আবারও বাংলাদেশ ব্যাংকের নাম উল্লেখ করেন অর্থমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘গ্রামীণ ব্যাংক একটি বড় ও ভালো প্রতিষ্ঠান।

তাই মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির (এমআরএ) পরিবর্তে এটি বাংলাদেশ ব্যাংকের আওতায় থাকাই ভালো হবে। ’
এদিকে আর্থিক প্রতিবেদন আইন, ২০১৩ (এফআরএ) চূড়ান্ত করা হলেও পাস করানো সম্ভব হচ্ছে না বলে জানান অর্থমন্ত্রী। আর্থিক খাতের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে এই আইন জরুরি বলে অর্থমন্ত্রীকে জানান এ কে এম দেলোয়ার হোসেন। বলেন, ১৯৯৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আইনটি করবেন বলে মত দিয়েছিলেন। অর্থমন্ত্রী আইনের প্রয়োজনীয়তার পক্ষে আইসিএমএবির সঙ্গে একমত পোষণ করেন।


আইসিএমএবির সভাপতিকে উদ্দেশ করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী যদি আমাকে বলেন, বোঝান তো কেন এই আইন দরকার। এই তথ্যটা আগে জানা থাকলে আমি প্রধানমন্ত্রীকে বলতে পারতাম, ১৫ বছর আগে আপনিই তো চেয়েছিলেন এই আইন। ’
আইসিএমএবির সঙ্গে বৈঠকের আগে গতকাল সকালেই ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস, বাংলাদেশের (আইসিএবি) একদল হিসাববিদও (সিএ) অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করে গেছেন। আইনের বলে গঠিতব্য ফাইন্যানশিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলের (এফআরসি) পর্ষদ সদস্য হিসেবে আইসিএমএবিকে না রাখার পরামর্শ দিয়ে তাঁরা অর্থমন্ত্রীকে জানান, শেষ পর্যন্ত আইন হওয়ার পক্ষে তাঁরা। তবে প্রস্তাবিত আইনে কিছু সংশোধন করতে হবে।


অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘কিছু সংশোধন করব। তবে আইন করবই। মুশকিল হলো, খসড়াটা পেলাম খুব দেরিতে। আইন হওয়ার জন্য সাধারণত দুটি মন্ত্রিসভার বৈঠকে তা অনুমোদিত হতে হয়। এখন পর্যন্ত একটা হয়েছে।

সময়ই পাচ্ছি না। সামনে যে সময় আছে, এর মধ্যে আইন করাটা সম্ভব হবে না। ’
এর আগে গত ১২ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে অর্থমন্ত্রী সংসদের চলতি অধিবেশনেই এফআরএ উপস্থাপনের কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন। অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, সিএদের অনেক প্রতিবেদনেই বাস্তবতার সঙ্গে কোনো সম্পর্ক থাকে না। তাঁরা যেসব ভুলত্রুটি করেন এবং ফাঁকি দেন, তাঁরা চান না যে এগুলো ধরা পড়ুক।

তাই তাঁরা এই আইনের ব্যাপক বিরোধিতা করছেন। সিএদের বিরুদ্ধে যথেষ্ট অভিযোগ থাকার কথা বলে ওইদিন অর্থমন্ত্রী আরও বলেছিলেন, স্টক এক্সচেঞ্জগুলো বলে, সিএ ফার্মগুলো তাদের ধ্বংস করে দিচ্ছে।
তবে গতকাল অর্থমন্ত্রী ২৪ অক্টোবরের আগে সংসদে এফআরএ উপস্থাপনে সন্দিহান বলে জানান। তিনি বলেন, ‘আর কিছু করতে না পারি, সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে এটি রেখে যাব। ’
এমএলএম আইন যেমন রাষ্ট্রপতির অধ্যাদেশে করা হয়েছে, এফআরএ সেভাবে করা যায় কি না, জানতে চাইলে অর্থমন্ত্রী বলেন, না, অধ্যাদেশ আর নয়।

তা ছাড়া এফআরএর ভেটিং (পরীক্ষা-নিরীক্ষা) এখনো শেষ হয়নি। তিনি বলেন, ‘আইন হবেই। তবে এফআরসি একটা দৈত্য হয়ে যাক, সেটাও আমরা চাই না। ’
এফআরসিতে আইসিএবির কোনো প্রতিনিধিকে রাখা ঠিক হবে না বলে মনে করেন আইসিএমএবির সভাপতি এ কে এম দেলোয়ার হোসেন। তিনি বলেন, ‘যে আইসিএবির কার্যক্রম যাচাই করবে এফআরসি, সেখানে আইসিএবির প্রতিনিধি থাকা বাঞ্ছনীয় নয়।

সোর্স: http://www.prothom-alo.com

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.