আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সরকারের তৈরী ব্ল্যাক লিষ্টে আমার নাম দেখে আজ সেই আঙ্কেল বলেলন কি ভাতিজা বলছিলাম যে মনে আছে

মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অহংকার, ধর্মান্ধতা ও দলান্ধতা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার পরিপন্থী। সাভারের গনহত্যা নিয়ে যখন ফেসবুক, ব্লগ ও মিডিয়ায় টুক-টাক করে একটি আওয়াজ উঠতে শুরু করেছে “সোহেল রানার” আগে শাস্তি হওয়া প্রয়োজন সেই সকল রাজনৈতিক নেতাদের যারা সোহেল রানাদের সৃষ্টি করেন। হোক সে যে কোন দলরই, ঠিক সেই সময় কিছু চিহিৃত ফেসবুক, ব্লগ ও মিডিয়া দালাল ফেকাস নিয়ে গেল অন্যদিকে। ৯৩ বছর বয়সের একজন বৃদ্ধের হেলি যাত্রাকে নিয়ে এতটাই শোরগোল তৈরী করলো, আড়ালে চলে গেল সোহেল রানাদের যারা সৃষ্টি করে তাদের আলোচনা। আবার কিছু মানুষকে দেখা যায় ২রা মে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের ডাকা হরতাল নিয়ে বলতে যে, হরতাল হলো দেশ কে পিছিয়ে দিয়ে অর্থ নৈতিকভাবে ধ্বংস করার হাতিয়ার।

অথচ এরাই মানবতা বিরোধী অপরাধী কাদের মোল্লার রায়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠা আন্দোলনের পিঠে ছুরি মারা শাহরিয়ার কবির গংদের ডাকা হরতালের পক্ষে কথা বলে মুখে ফেনা তুলে ছিল। এমন কিছু চিহিৃত বেহায়া দালাল ও সখের নাস্তিকের কারনে দেশে যে সংঘাতময় অবস্থা তৈরী হয়েছে, তা কি তারা বুঝে? ৫ই ফেব্রুয়ারী মানবতা বিরোধী অপরাধী কাদের মোল্লার রায়কে কেন্দ্র করে আমরা যখন রোস্তায় নামি, তখন মুক্তিযুদ্ধের স্বঘোষিত গবেষক একজন ফেসবুক সেলিব্রেটি এই রাস্তায় নামার বিরুদ্ধে তার ফেসবুক ওয়ালে লেখা দিয়েছিলেন। ব্লগীয় ভাষায় গদাম খেয়ে তিনি পরে তার সেই লেখা সরিয়ে ফেলেন। তারপরে “শহীদ রুমি ব্রিগেড” যখন যুদ্ধাপরাধী দল জামাতকে নিষিদ্ধের দাবীতে শাহবাগে অনশণ শুরু করে স্নেহের ছোট ভাই নিলয়ের নেতৃত্বে তখনও সেই মুক্তিযুদ্ধের স্বঘোষিত গবেষক ফেসবুক সেলিব্রেটি নিলয়ের চরিত্র হরনের চেষ্টায় মাধ্যমে শহীদ রুমী ব্রিগেড এর অনশণকে বিতর্কিত করার চেষ্টা করে। যদিও শোনা যায় (কতটুক সত্য জানিনা)সেই মুক্তিযুদ্ধের স্বঘোষিত গবেষক ফেসবুক সেলিব্রেটির নানা শশুর ছিলেন একজন রাজাকার কমান্ডার।

মুক্তিযুদ্ধের ব্যবসায়ী রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের একজন নেতা যিনি গত আওয়ামী সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ন মন্ত্রীও ছিলেন শোনা যায় তার স্ত্রী গোলাম আজমের আপন ভাগনী (কতটুক সত্য জানিনা)। তবে যখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী সংসদে দাড়িয়ে বলেন সাংবিধানিক বাধার কারনে জামাতকে নিষিদ্ধ করা সম্ভব নয়, মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট প্রশ্ন আপনার পিতাকে জাতির পিতা ঘোষনা করার জন্য যদি সংবিধান সংশোধন করা যায় তবে কেন জামাতকে নিষিদ্ধ করার জন্য সংবিধান সংশোধন করা সম্ভব নয়? নাকি আপনাদের রাজনৈতিক ধাপ্পাবাজীর ইসু চিরতরে শেষ হয়ে যাবার ভয়ে জামাতকে নিষিদ্ধের দাবীতে সাড়া দিলেন না? আওয়ামী জোট বলেন আর বিএনপি জোট বলেন,এরা যে যখন ক্ষমতায় যায় একে অন্যের অপকর্মের রক্ষা কবজ হয়েই কাজ করে। গত কিছুদিন আগে “রামপাল বিদুৎ কেন্দ্র” এর জ্বলন্ত উদাহরন। ‍রামপাল কয়লা ভিত্তিক বিদুৎ কেন্দ্র নিয়ে যে চুক্তি হয় এবং সেখানে যে সকল টেকিনোলজি ও মাল-মসলা দিয়ে বিদুৎ কেন্দ্রটি তৈরী হবে তা প্রাগৈতিহাসিক যন্ত্রপাতি, যা বিশ্বে কোথাও ব্যবহার হয় না। এতে করে পরিবেশ ও সুন্দরবন পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে যাবে।

অথচ দেশ বিরোধ এই চুক্তির বিরুদ্ধে বিএনপি জোট কোন উচ্চ-বাক্য তো দূরের কথা একটা হাঁচিও দিল না। সরকার যদি সত্যিকার অর্থেই দেশের বিদুৎ সমস্যা সমাধানের জন্য আন্তরিক হতো, তবে রাশিয়ার তৈরী ঘোড়ালশাল বিদুৎ কেন্দ্রকে নতুন আঙ্গিকে ঢেলে সাজানোর জন্য রাশিয়ার পক্ষ থেকে যে প্রপোজাল দিয়েছে এই সরকার ক্ষমতায় আসার পরপর সেটা বাস্তবায়ন করতো। বর্তমানে ঘোড়ালশাল বিদুৎ কেন্দ্র প্রতিদিন ৫৫০ মেগাওয়াড বিদুৎ উৎপাদনে যে পরিমান গ্যাস লাগে সেই পরিমান গ্যাস দিয়েই ১৮০০ মেগাওয়াড বিদুৎ উৎপাদন করা যেত, এমন একটি প্রপোজাল সরকার ফাইল বন্ধী করে রামপাল বিদুৎ কেন্দ্রের নামে সুন্দরবন ধ্বংসের জন্য উঠে-পড়ে লেগেছে। এদিকে দেশ বিরোধী রোমপাল বিদুৎ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলনের ডাক দেয়ার অপরাধে সরকার বিভিন্ন ব্লগার ও অন লাইন এক্টেভিসদের লিষ্ট করেছে তাদের দমানোর উদ্দেশ্য নিয়ে। সরকার আশা করছে হয়তো লিষ্টে যাদের নাম আছে তারা ভয়ে রামপাল বিদুৎ কেন্দ্র বিরোধী আন্দোলন থেকে সরে আসবে।

সেক্ষেত্রে সরকার দিবা স্বপ্নে বিভোর বলতে হবে। মনে পড়ে শাহবাগ আন্দোলন যখন শুরু হয় ঘটনাটা সে সময়কার। শাহবাগ থেকে এসে এলাকার চা দোকানে বসলাম চা খেতে, তখন এক আঙ্কেল (যিনি আগে থেকে জানতেন আমি ব্লগিং ও ফেসবুকে লেখা-লেখি করি) বলেলন ভাতিজা তোমাদের আন্দোলনের খবর কি? বিভিন্ন কথার এক পর্যায়ে আঙ্কেল বলেলন তোমরাতো এখন যে আন্দোলন করছো তা সরকারের বিপক্ষে যায় নাই, তাই সরকার তোমাদের কিছু বলছে না বরং নিরাপ্তা দিচ্ছে। কিন্তু ভাতিজা মনে রেখ, এই তোমরাই আজ যারা যুদ্ধাপরাধী দল জামাত নিষিদ্ধের আন্দোলন করছো তারা যখন এমন কোন আন্দোলনের ডাক দিবা যেটা সরকারের বিরুদ্ধে তখন দেখেবা সরকারের আসল চেহারা এবং সরকার দলীয় যারা আজ তোমাদের সাথে তারাই তোমাদের বিরুদ্ধে লিখবে। রামপাল বিদুৎ কেন্দ্র বাতিলের দাবীতে ডাক দেয়া আন্দোলনের মাধ্যমে এলাকার সেই আঙ্কেলের কথার প্রমান পাওয়া গেল।

সরকারের তৈরী ব্ল্যাক লিষ্টে আমার নাম দেখে আজ সেই আঙ্কেল বলেলন কি ভাতিজা বলছিলাম যে মনে আছে? ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৭ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.