আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিস্ময়কর প্রযুক্তি ব্রেনওয়েভ এনট্রেইনমেন্টঃ পর্ব -০৬ (এ প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য বিধিনিষেধ ও সাবধানতা)



কেমন আছেন আপনারা? আশা করি ভাল। গত পর্বে আপনাদেরকে বিভিন্ন ধরণের ব্রেনওয়েভ এবং সেগুলোর সাথে সম্পর্কিত মানসিক অবস্থা সম্বন্ধে জানিয়েছিলাম। আজকের পর্বে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য কিছু বিধি-নিষেধ এবং সাবধানতা সম্বন্ধে জানাব। যেহেতু এই প্রযুক্তি আমাদের ব্রেন এর কার্যক্রম ও মনের অবস্থায় পরিবর্তন আনতে পারে তাই এ প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছেন। এ পর্বে আমি এই বিষয়গুলো নিয়েই আলোচনা করব।

তবে বিধি-নিষেধগুলো জানানোর আগে একটা ব্যাপার জানিয়ে রাখা দরকার। প্রথম পর্বেই বলেছিলাম এই প্রযুক্তির মাধ্যমে আমাদের ব্রেনওয়েভ নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশেষ প্রকৃতির আলো বা শব্দ আলাদা আলাদাভাবে বা একসাথে প্রয়োগ করা যায়। ব্যপারটা এরকম যে, এই প্রযুক্তির সুফল পাওয়ার জন্য আপনি শুধু শব্দ ব্যবহার করতে পারেন অথবা শুধুমাত্র আলো ব্যবহার করতে পারেন অথবা একইসাথে শব্দ ও আলো দুটোই ব্যবহার করতে পারেন। যদি কারও মৃগী বা খিচুনী রোগ থাকে তাহলে....আলোর মাধ্যমে এই প্রযুক্তি ব্যবহার তার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হবে। সেক্ষেত্রে ঐ ব্যক্তি শুধুমাত্র শব্দের মাধ্যমে এটির ব্যবহার করতে পারবেন।

তবে অধিক সতর্কতার জন্য শুধুমাত্র শব্দের মাধ্যমে এটি ব্যবহার করাও হয়তোবা তার জন্য ঠিক হবেনা। এছাড়া নির্দিষ্ট কিছু সমস্যায় ভুগছেন এমন সব ব্যক্তি এবং নির্দিষ্ট ধরণের কিছু ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তির ব্যবহার অনাকাঙ্খিত পরিস্থিতির তৈরী করতে পারে। প্রতিটি মানুষের ক্ষেত্রে যে সমস্যা হবে তা কিন্তু নয়। তারপরও অধিক সতর্কতার জন্য সাবধান থাকাই ভাল। সার্বিকভাবে শুধুমাত্র শব্দের মাধ্যমে এই প্রযুক্তির ব্যবহার অনেক অনেক নিরাপদ।

তবে অতিরিক্ত সতর্কতা এবং অনাকাঙ্খিত কোন পরিস্থিতি এড়ানোর জন্য গবেষকরা নিম্নে উল্লেখিত ধরণের এবং নিম্নে উল্লেখিত শারীরিক সমস্যা আছে এমন সব ব্যক্তিদের “ব্রেনওয়েভ এনট্রেইনমেন্ট” প্রযুক্তির ব্যবহার থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। এ কারণে আপনি যদি নিম্নে উল্লেখিত ধরণের কোন ব্যক্তি হন তাহলে এই প্রযুক্তির ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুনঃ (১) আপনার হার্টে যদি কোন পেসমেকার থাকে (২) আপনার যদি কোন হৃদরোগ থাকে (৩) আপনার যদি কোন গুরুতর মানসিক রোগ বা সমস্যা থাকে (৪) আপনি যদি গর্ভবতী হন (৫) অ্যালকোহল বা আপনার মানসিক অবস্থার পরিবর্তন করে এমন কিছু দ্বারা যদি আপনি আসক্ত হন (৬) আপনার মাথার ভিতরে বা ব্রেন-এ যদি কোন আঘাত থাকে (৭) আপনার বয়স যদি ১৮ বছর বা তার কম হয় কারণ ১৮ বছর বা তার কম বয়সী ব্যক্তিরা মৃগী রোগ বা খিচুনীতে আক্রান্ত হওয়ার অধিক ঝুকিতে থাকেন পরিস্থিতি অনুযায়ী এই প্রযুক্তির সর্বোৎকৃষ্ট ব্যবহারঃ এই প্রযুক্তির বিভিন্ন ধরণের ব্যবহার আছে। বিভিন্ন কারণে এটি ব্যবহারের সময় আপনার মানসিক অবস্থার পরিবর্তন হয়ে যাবে এবং আপনি এই পরিবর্তনগুলো অনুভব করতে পারবেন। কোন কোন ক্ষেত্রে আপনার মানসিক অবস্থা সচেতন অবস্থা থেকে তন্দ্রাচ্ছন্ন অবস্থায় চলে যেতে পারে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে আপনি মানসিকভাবে বেশী রিলাক্সড হওয়ার কারণে ঘুমিয়েও যেতে পারেন। এসব কারণে নিম্নে উল্লেখিত অবস্থায় এই প্রযুক্তির ব্যবহার না করাই সবচেয়ে যুক্তিযুক্তঃ (১) যখন আপনি গাড়ি চালাবেন (২) যখন আপনি এমন কোন যন্ত্রপাতি চালাবেন যেগুলো আপনি অমনোযোগের সাথে চালালে আপনার শারীরিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে (৩) যখন আপনি এমন কোন কাজ করবেন যেটি করার সময় আপনার সম্পূর্ণ মনোযোগ দরকার বা সম্পূর্ণরুপে জেগে থাকা দরকার (তবে এর কিছু ব্যতিক্রম আছে যেমনঃ আপনি যদি মনোযোগ বাড়ানোর জন্য এই প্রযুক্তি ব্যবহার করেন তাহলে আপনি অন্য সব কাজ করার সময় এই প্রযুক্তি দিয়ে তৈরী করা শব্দ শুনতে পারবেন) সহনশীল পর্যায়ের ভলিউমে শুনুনঃ যদি শুধুমাত্র শব্দের মাধ্যমে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয় তাহলে আপনাকে অবশ্যই শব্দগুলো আপনার সহ্যসীমার মধ্যে শুনতে হবে।

অন্য যে কোন শব্দ আমাদের সহ্যসীমার বাইরে শুনলে যেমন বিভিন্ন ধরণের অনাকাঙ্খিত শারীরিক সমস্যার উদ্ভব হতে পারে তেমনি “ব্রেনওয়েভ এনট্রেইনমেন্ট” প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরী করা শব্দ বা মিউজিক প্রডাক্ট আপনার শ্রবণ সহ্যসীমার বাইরে শুনলে আপনিও অনাকাঙ্খিত শারীরিক সমস্যায় পড়তে পারেন। তাই এই প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি করা শব্দ বা মিউজিক প্রডাক্ট আপনার জন্য সহনশীল পর্যায়ের ভলিঊমে শুনুন। আশা করি আজকের পর্বে দেয়া তথ্য ও আলোচনা থেকে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের সাথে সংশ্লিষ্ট ঝুঁকিগুলো সম্বন্ধে আপনার একটি ধারণা হয়েছে। আগামী পর্বে এই প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরী করা মিউজিক আপনি বাংলাদেশে কোথায় এবং কিভাবে পাবেন সে বিষয়ে আপনাকে তথ্য দিব। আপনি ভাল থাকুন, সুস্থ থাকুন এই কামনায় আজ এখানেই শেষ করলাম।

~ এহসান (চলবে.........) আগের পর্বঃ ১। পর্ব -০১: বিস্ময়কর প্রযুক্তি ব্রেনওয়েভ এনট্রেইনমেন্টঃ (পরিচয় হওয়ার গল্প) ২। পর্ব -০২: বিস্ময়কর প্রযুক্তি ব্রেনওয়েভ এনট্রেইনমেন্টঃ (আমাদের জীবনে এর ব্যবহার) ৩। পর্ব -০৩: বিস্ময়কর প্রযুক্তি ব্রেনওয়েভ এনট্রেইনমেন্টঃ (ইতিহাস) ৪। পর্ব -০৪: বিস্ময়কর প্রযুক্তি ব্রেনওয়েভ এনট্রেইনমেন্টঃ (কিভাবে এই প্রযুক্তি কাজ করে) ৫।

পর্ব -০৫: বিস্ময়কর প্রযুক্তি ব্রেনওয়েভ এনট্রেইনমেন্টঃ (বিভিন্ন ধরণের ব্রেনওয়েভ) বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ এই লেখাটির সর্বস্বত্ব লেখক কর্তৃক সংরক্ষিত


আরো পড়ুন

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।