আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

অনুপ্রেরনা।

ইমান ছাড়া এত্তেবা হয়না, এত্তেবা ছাড়া মত্তাবেইন হওয়া যায়না।
ফেইসবুক থেকে শেয়ার করা। এক যুগ আগের ঘটনা। দিনটি ছিলো ২০০০ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর। ফিলিপাইনের জাম্বানগা গ্রামে বাস করতো মেরিচেল আপাটান নামের এগারো বছর বয়সী এক দুরন্ত মেয়ে।

পানির তেমন সুব্যবস্থা ছিলো না তাদের গ্রামে। প্রতিদিন তাই দূরের ঝর্না থেকে পানি আনতে হতো তাদের। প্রতিদিনের মতো মেরিচেল তার চাচার সাথে সেও পানি আনতে যাচ্ছিলো। পথে হঠাৎ চারজন লোক তাদের ঘিরে ধরলো। মেরি লোকগুলোকে চিনতে পারলো।

এরা সবাই ছিলো তাদের প্রতিবেশি। চারজনের হাতেই ছিলো ধারালো ছুরি। মেরির চাচাকে তারা প্রথমে মাটিতে ফেলে দিলো। এরপর সেই ছুড়ি দিয়ে আঘাত করতে থাকলো। কিছুক্ষন পর চাচার দেহ মাটিতে নিথর পড়ে রইলো।

ঘটনার আকস্বিকতায় মেরি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলো। সে বলতে লাগলো,দয়া করো। আমাকে মেরো না। কিন্তু তার কথা কেউ শুনলো না। মেরির ঘাড় ও হাতের কব্জিতে ছুড়ি দিয়ে আঘাত বসালো।

সে তৎক্ষনাত মাটিতে পড়ে গেলো এবং জ্ঞান হারালো। যখন তার জ্ঞান ফিরলো সে দেখলো যে চারিদিকে শুধু রক্ত আর রক্ত। তার দুই কব্জিও সোজা করতে পারছিলো না সে । মেরি প্রচন্ড ভয় পেয়ে কাঁদতে থাকলো। অনেক কষ্ট করে ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়িয়ে সে বাড়ির দিকে দৌড়াতে লাগলো।

পথে বার বার সে পরে যাচ্ছিলো। অজ্ঞান হয়ে পড়ছিলো। কিন্তু আবার উঠে তবু যত দ্রুত সম্ভব তার মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য ছুটে চলছিলো। বাড়ির সামনে এসে সে তার মাকে একবার ডেকেই অজ্ঞান হয়ে পরে গেলো। মেয়ের এই অবস্থা দেখে মা ভয়ে কেঁদে উঠলো।

তাকে কম্বলে জড়িয়ে হাসপাতালের দিকে ছুটতে লাগলো। হাসপাতালও ছিলো সেখান থেকে প্রায় ১২ কিঃমিঃ দূরের হাঁটা পথ। প্রায় ৪ ঘন্টা পর তারা হাসপাতালে পৌছালো। ডাক্তাররা প্রথমে ভাবলো যে মেরিকে বাঁচানো সম্ভব হবে না। প্রায় ৫ ঘন্টার অপারেশন আর ২৫ টি সেলাই শেষে মেরি বেঁচে গেলো।

অলৌকিক ভাবে বেঁচে গেলো মেরি কিন্তু তার হাতের কব্জিদুটো কেটে ফেলতে হলো। দুর্ভাগ্য এখানেই শেষ হলো না। তারা যখন বাড়িতে গেলো দেখতে পেলো যে তাদের সেই শত্রুরা বাড়িটি আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। অপারেশনের পর হাসপাতালও প্রায় ৫০ হাজার টাকা পায় তাদের কাছে। এন্টোনিও লেডেসমা নামের এক দূর সম্পর্কের আত্বীয় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন।

হাসপাতালের বিল শোধ হলো। মেরিদের মাথাগোঁজার ঠাঁই হলো। এমনকি সেই অপরাধীদের প্রত্যেকেই ধরা পড়লো। তাদের সবার আজীবন কারাদন্ডও হয়ে গেলো। মেরিকে ভর্তি করা হলো প্রতিবন্ধীদের স্কুলে।

প্রকৃত জয়ীরা কখনো আশা হারায় না। দুই হাত না থাকার জন্য মেরি আল্লাহকে দোষ দিলো না। সে তার কনুইকে কাজে লাগাতে শিখলো অবিশ্বাস্যভাবে। মেরি হয়ে উঠলো তার স্কুলের সবচেয়ে পরিশ্রমী, কম্পিটারে দক্ষ এবং সবচেয়ে ভদ্র মেয়েটি। ২০০৮ সালে সে হোটেল এবং রেস্টুরেন্ট ম্যানেজমেন্টে তার গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করলো।

শুধু তাই নয় এই কোর্সে সে একটি গোল্ড মেডেলও পেল। ২০১১ সালে সে একজন শেফ হিসেবে তার পড়াশুনা শেষ করলো। পাচঁতারা হোটেলের একজন প্রধান বাবুর্চী। যার দুটি হাতের কব্জি নেই। মেরির স্বপ্নকে ছোঁয়ার পথে কোনো কিছুই বাধা হয়ে দাড়াতে পারেনি।

কারন ঐ যে! প্রকৃত জয়ীরা কখনো আশা হারায় না। মেরি পেরেছে। আমরা কেন পারবো না? লিংক
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.