আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গণভবনে যাচ্ছেন না খালেদা

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের দাবি নীতিগতভাবে মেনে নেওয়ার ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত বিরোধীদলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়া গণভবনের নৈশভোজের দাওয়াতে যাবেন না।

দাবি মেনে নিলেই আলোচনায় গণভবন বা যে কোনো স্থানে যেতে রাজি। দলের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, রবিবার রাতে স্থায়ী কমিটির প্রবীণ দুই নেতাকে তিনি এ কথা পরিষ্কার বলেছেন। এমনকি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপের সময়ও খালেদা জিয়া নীতিগতভাবে মেনে নেওয়ার কথা বলেছিলেন। দায়িত্বশীল এক নেতা জানান, বেগম খালেদা জিয়া অনেকটা দৃঢ়তার সঙ্গেই বলেছেন, নির্দলীয় সরকারের দাবি নীতিগতভাবে ঘোষণা দিলেই কেবল সেই সরকারের গঠন প্রক্রিয়া নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা হতে পারে।

অন্যথায় নৈশভোজ খাওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। 'নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের গণদাবি নীতিগতভাবে মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলেই তিনি আলোচনায় বসতে পারেন'- এ কথা প্রধানমন্ত্রীকে তিনি নিজেই শনিবার টেলিফোনে জানিয়ে দিয়েছেন বলেও উল্লেখ করেন। এদিকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আওয়ামী লীগের এই সংলাপ প্রক্রিয়াকে 'নাটক' আখ্যা দিয়ে বলেছেন, তারা সংলাপের নাটক করে এর দায় বিএনপির ওপর চাপাতে চায়। আসলে এর মধ্যে আওয়ামী লীগের কোনো আন্তরিকতা নেই। একদিকে সারা দেশে ১৮ দলের নেতা-কর্মীদের ওপর গুলি চালাচ্ছে, অন্যদিকে সংলাপের নামে নাটক করছে আওয়ামী লীগ।

গত তিন দিনেই সারা দেশে ১৫-১৬ জন মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। তবু আমাদের নেত্রী স্পষ্ট ভাষায় বলে দিয়েছেন যে 'আমরা সংলাপের মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করতে চাই। আপনারা (সরকার) নির্দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচনের গণদাবি নীতিগতভাবে মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিন, যখন যেখানে বলবেন, সেখানেই আমরা আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। ' এ বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলামের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, 'ম্যাডাম' নিজেই তো বলেছেন শেষ পর্যন্ত কেউ না থাকলে তিনি একলা হলেও লড়ে যাবেন মানুষের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার এ আন্দোলনে। তবুও নির্দলীয় সরকারের দাবিতে চলমান আন্দোলন থেকে পিছপা হবেন না।

খালেদা জিয়া আরও বলেন, ঢাকায় যা-ই হোক না কেন, সারা দেশে মানুষ রাজপথে নেমে পড়েছে। গণতন্ত্রের জন্য অকাতরে জীবন পর্যন্ত বিলিয়ে দিচ্ছে। সরকার ১৮ দলের নেতা-কর্মীদের ওপর পাখির মতো গুলি চালিয়ে তাদের হত্যা করে চলেছে। এ অবস্থায় দাওয়াত কিংবা ভোজসভায় অংশ নেওয়ার মতো পরিস্থিতি নেই। পাশাপাশি আন্দোলন থেকে পিছিয়ে আসারও কোনো সুযোগ নেই।

বরং সময় দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে সরকার দাবি মেনে না নিলে আরও কঠোর কর্মসূচিতে যাবে জনগণ। তরিকুল ইসলাম আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী টেলিফোনে বিরোধীদলীয় নেতাকে তার বাসায় আমন্ত্রণ জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি বা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তার নিজের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আলোচনা করতে চলমান নৈশভোজ কর্মসূচির অংশ হিসেবে। এ কথা সব মিডিয়ায়ই প্রচার ও প্রকাশিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী স্পষ্টতই বলেছেন যে অন্যান্য দলকেও দাওয়াত করছি, তারই অংশ হিসেবে ২৮ অক্টোবর আমার বাসভবনে আপনাকেও নৈশভোজের দাওয়াত করছি।

কাজেই প্রধানমন্ত্রীর দাওয়াতটি ছিল 'ইন-জেনারেলি'। বিদ্যমান রাজনৈতিক সংকটের সমাধানের জন্য গুরুত্বারোপ করে নয়। এর পরও বলব নির্দলীয় সরকারের দাবি নীতিগতভাবে মেনে নেওয়ার ঘোষণা দিলে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া প্রয়োজনে একাধিকবার গণভবনে যাবেন। অন্যথায় যাবেন বলে মনে হয় না। স্থায়ী কমিটির অন্য একজন সদস্য জানান, আগামীকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ৬০ ঘণ্টার হরতাল শেষ হওয়ার পর সরকারকে চার দিন সময় দেওয়া হতে পারে।

এর মধ্যে দাবি মেনে না নিলে আগামী রবিবার থেকে আবারও টানা ৬০ থেকে ৭২ ঘণ্টার হরতালের ডাক দেওয়ার কথা ভাবছে ১৮ দলীয় জোট। আন্দোলনকে স্তব্ধ করার জন্য দলের ভেতরে ও বাইরে থেকে অনেক রকমের চেষ্টা-তদবির চালানো হচ্ছে। কিন্তু এসব অপচেষ্টার ব্যাপারে সবাইকে সতর্ক থাকারও আহ্বান জানিয়েছেন বেগম খালেদা জিয়া। এ ছাড়া কারা কীভাবে দলের সঙ্গে এবার বেইমানি করতে কিংবা ফায়দা লুটতে পারেন কোনো ভূমিকা না রেখেই সেসব নেতার সম্পর্কেও তিনি খোঁজখবর রাখছেন বলে জানা গেছে।

 

 



সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.