আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হরতাল: উদ্বিগ্ন ২১ লাখ শিক্ষার্থীর পরিবার

এই ব্যাংক কর্মকর্তার মেয়ের মতো ২১ লাখ শিক্ষার্থী যখন জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছে, তখন রোববার বিরোধী দলের ৬০ ঘণ্টার হরতালের ঘোষণা এল।
আগামী ৪ নভেম্বর সারাদেশে একযোগে জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষা শুরুর কথা রয়েছে। এর প্রথম দুটি পরীক্ষাই পড়েছে হরতালের মধ্যে।   অস্থির রাজনীতিতে পরবর্তী পরীক্ষাগুলোও সময়মতো হবে কি না, তা নিয়ে সংশয়ে এখন অভিভাবকরা।
এর আগে এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার মধ্যেও হরতাল ছিল বিএনপি-জামায়াতের।

তার কারণে বারবার পরীক্ষা পেছানোয় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে শিক্ষার্থীদের।
হরতালের কারণে গত এসএসসি ও সমমানের পাঁচটি পরীক্ষা পিছিয়ে যাওয়ায় ৩৭টি বিষয়ের পরীক্ষা পিছিয়ে যায়। আর এইচএসসিতে হরতালের ফলে ৩২টি বিষয়ের পরীক্ষাসূচি পরিবর্তন করায় পিছিয়ে যায় ৪১টি পরীক্ষা।
হরতালের শেষ দিন রাজধানীর ফার্মগেইটে একটি বাসে আগুন দেয় হরতাল সমর্থকরা। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম পাবলিক পরীক্ষার মধ্যে বিরোধী দলকে হরতাল না দিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ অনুরোধ জানিয়েছিলেন।


হরতালের শেষ দিন রাজধানীর ফার্মগেইটে একটি বাসে আগুন দেয় হরতাল সমর্থকরা। ছবি: বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
তারপরও হরতালের ঘোষণায় ক্ষোভ প্রকাশ করে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন,“দেশের নতুন প্রজন্মকে ধ্বংস করে দিতেই বিরোধী দল এমন বিবেকহীন-দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মসূচি দিয়েছে। ”
হরতালের মধ্যে পরীক্ষা নেয়া হবে কি না, শিক্ষামন্ত্রী রোববার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে সেই সিদ্ধান্ত জানাবেন বলে জানিয়েছেন ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক এস এম ওয়াহিদুজ্জান।
এছাড়া আগামী ২০ নভেম্বর থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী, নভেম্বর-ডিসেম্বরজুড়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা এবং ডিসেম্বর মাসে দেশের বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই বার্ষিক পরীক্ষা হবে।
পাবলিক পরীক্ষার মধ্যে হরতালের ঘোষণায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ঢাকার শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সংগঠনের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু।


আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে যে কোনো সমস্যার সমাধান করতে রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “এভাবে কর্মসূচি ঘোষণা করলে পরীক্ষার্থীরা নিরাপদ থাকতে পারে না।
“বারবার পরীক্ষার্থীরা যদি এ ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচির বলি হয়, তাহলে রাজনীতিবিদদের সম্পর্কে তাদের মনে অন্য রকম ধারণা হতে পারে। ”
ঢাকার একটি মাদ্রাসার জেডিসি পরীক্ষার্থী রকিবুল ইসলাম জানান, শনিবার সকালেও সোমবারের পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। এর মধ্যেই হরতারের খবর শোনেন।
“৪ তারিখ পরীক্ষা হবে কিনা জানি না।

৬ তারিখেও হরতাল, কী যে হবে? এখন কোন বিষয়টি পড়ব, বুঝে উঠতে পারছি না। ”
পরীক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে পরীক্ষার আগে-পরে হরতালের কর্মসূচি দেয়া যেত বলে মনে করেন এক জেএসসি পরীক্ষার্থীর অভিভাবক সুলতানা বেগম।
রাজধানীর মিরপুরের এই বাসিন্দা বলেন, তার ছেলের পরীক্ষা কেন্দ্র বাসা থেকে অনেক দূরে। হরতালে পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত হলেও অনেক ভোগান্তিতে পড়বেন তারা।
শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভবাকদের জন্য হরতাল ‘কষ্টকর’ মন্তব্য করে রাজশাহী বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. তানভিরুল আলম বলেন, পরীক্ষার মৌসুমে দেয়া এই হরতালে শিক্ষার্থীরা পিছিয়ে যাবে।


প্রধানমন্ত্রী-শিক্ষামন্ত্রীর অনুরোধ সত্ত্বেও হরতাল দেয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন এই অধ্যাপক।
জেএসপসি পরীক্ষার্থী অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাফাত আদনান বলেন, “আমরা হরতাল চাই না, ঠিকমতো পরীক্ষা দিতে চাই। ”
“হরতাল খুব খারাপ জিনিস,” বলেন ক্ষুদে এই শিক্ষার্থী।

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.