আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সামাজিক অবক্ষয় যৌনতার প্রদর্শনী ; বাংলাদেশ

মমমমমম

আমাদের বাংলাদেশ একটা মডারেট মুসলিম দেশ। এখানে নেই যেমন ধর্মীয় গোড়া শ্রেনী তেমনি নেই সামাজিক অবক্ষয়। কিন্তু বর্তমান সময়ে সামাজিক বন্ধন গুলো অনেকটা আগলা হয়ে গেছে, যার কারনে সমাজে নানাবিধ সমস্যা বটবৃক্ষের আকার ধারন করেছে আস্তে আস্তে। সামাজিক অবক্ষয় আমাদের সমাজে অনেকটা স্লো পয়জনিং এর মত কাজ করছে। আস্তে আস্তে আমাদের সামাজিক-পারবারিক রীতিনীতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ।

একটা সমাজ টিকে থাকে তার কিছু মৌলিক কাঠামোর উপর • সামাজিক বিধি-বিধান • পারিবারিক বন্ধন • রাষ্ট্রীয় আইন কাঠামো • নাগরিক সুযোগ সুবিধা , সেবা • মৌলিক অধিকার এর প্রাপ্যতা। আমাদের সমাজ ব্যবস্থা বর্তমানে আমাদের দেশের নাগরিকদের মৌলিক চাহিদা পুরনে কেবল ব্যার্থই নয় বরং সামজিক নানা অবক্ষয় আমাদের দেশের তরুন-তরুনী, নারী-পুরুষ কে নিজেদেরকে অবক্ষয়ের দিকে এগিয়ে যেতে সাহয্য করে চলেছে। এখন আসি মুল কথায়, সময়ের সাথে সাথে আমাদের সমাজ ও এগিয়ে চলছে খুবই দ্রুত গতিতে। এই ক্রম পরিবর্তনশীল সমাজের সাথে তাল মেলাতে যেতে আমাদের তরুন সমাজের অনেকে নিজেদের বিপথে নিয়ে যাচ্ছে। বিপথ কথাটা যদিও অপেক্ষিক তারপর ও বলা যায় যে সমাজের সব কিছু ঠিকঠাক মত চলছে না।

আর এটা আমি পাঠকদের উপরই ছেড়ে দিব। আজকাল আমরা কম বেশী সবাই রাস্তায় বের হই। চোখ বন্ধ করে রাস্তায় চলার উপায় নেই তাই বাধ্য হয়ে দেখতে হয় রাস্তায় চলছে উন্মত্ত যৌনতার অবাধ প্রর্দশনী, যা সমাজের মানুষ কে ভাবিয়ে তুলছে বলে আমার ধারনা। সমাজের এই পরিবর্তনের সাথে উঠতি বয়সের মেয়েরা যেমন এগিয়ে এসেছে নিজেদের তুলে ধরতে সেই সাথে ছেলেরাও এসেছে ভ্রমরের মত। সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বিদেশী সিনেমা, নাটক আমাদের দেশে এখন প্রদর্শিত হচ্ছে যেখানে নেই কোন সেন্সর।

হিন্দী চ্যানেলের খোলামেলা উন্তত্ত যৌন উদ্দীপক নাচ গান ও এর বাহারী পোশাক আশাক মেয়েদের বেশি আকর্ষন করে। আজকাল রাস্তা, কলেজ, ভার্সিটি, বিপনী বিতান, কর্পোরেট দুনিয়াতে মেয়েরা এমন ভাবে চলে যেন আমাদের দেশ আমেরিকা হয়ে গেছে। মেয়ারা আজকাল নিজেদের কে পন্য বানিয়ে চলতে শুর করেছে। রাস্তা ঘাটে তারা যৌনতার ফেরিওয়ালা হয়ে চলতে শুরু করেছে। এমন সব কাপড় পরে চলাচল করে যে ভিতরের অর্ন্তবাস কোন রঙের তা বোঝা যায়, আবার দেখা যায় যে কিছু মেয়ে আধুনিক পোশাকের নামে বিশেষ ধরনের পাজামা পরে যা তার কোমর থেকে শুরু করে পায়ের পাতা পর্যন্ত প্রতিটা বাক দর্শকের সামনে তুলে ধরে।

মেয়েদের কে কেন এভাবে চলতে হবে? বা কেন ভাবে হবে যে “আমাকে আমার যৌনতা ব্যবহার করে আগাতে হবে”। কিছুদিন আগে বসুন্ধারা শপিং মলে লিফটের ভিতরে এক মহিলাকে দেখি এমন এক পোশাক পরেছে যে তার উপরের শরীরের অনেকটা প্রকাশ পেয়ে যাচ্ছে । এটা এমন একটা ব্যাপার ছিল যে নিজের পরিচিতাদের সাথে চলতে ইতহস্ত লাগছিল তখন। সমাজের এই পরিবর্তন টা মেয়েদের দিকে তাকালে বেশী বোঝা যায়। অনেকে বলে যে আজকাল মেয়েরা নাকি এগিয়ে এসেছে তারা নিজেদের মেলে ধরছে।

হ্যা মেয়েরা সামাজিক কাজ কর্মে তাদের নিয়োজিত করবে, চাকরি করবে, ব্যবসা করবে এটা আমাদের সবার কাম্য। কিন্তু এগিয়ে আসার মানে এটা না যে মেয়েদের বেহাল্লা পোশাকে বের হতে হবে বা তাদের কে ছোট ছোট পোশাকে বের হতে হবে যা মানুষের মনে কামনার আগুন জ্বালবে। আধুনিক হবার মানে এটা নয় যে পাতলা শাড়িতে নাভি বের করে রাস্তায় আসতে হবে। অনেকে মনে করে যে আধুনিক মানে পোশাকে আধুনিক। রাস্তায় গাড়িতে বসে চুমু চাটি খাওয়া, গায়ে হাত দেওয়া বা নিজের বুকের অর্ধেক বের করে কোমর বাকিয়ে হাটা কোন কিছুর ভিতর পড়ে না।

ছেলেরা দেখি এমন সব প্যান্ট পরে যে দেখলে মনে হয় ওটা লিঙ্গের সাথে বেধে আছে বা পিছন দিয়ে খুলে পড়ে যাচ্ছে। আবার উৎকট ভাবে হেয়ার কাট দিয়ে ছেটে চলেছে সেই সাথে মুখে বিড়ি দিয়ে যেন সেই রাজা। গাজার ধোয়া আগে ছিল বনের ভিতরে কিন্তু এখন রিকসায় বসে খাচ্ছে ছেলে-মেয়েরা। এগুলো আধুনিকতার মান্দন্ড হতে পারে না, এগুলো সামাজিক অবক্ষয় যা আমাদের সমাজ কে অন্ধকারের নিয়ে যাচ্ছে। আধুনিক মানে চিন্তা চেতনায় আধুনিক , জ্ঞানে মেধায় আধুনিক হওয়া।

আবার অনেক মেয়ে ইদানীং আধুনিক হতে গিয়ে দেখছি সিগারেট, গাজা টানছে বিভিন্ন জায়গায়। কে কিভাবে নিবেন আমি জানি না ? অভিজাত এলাকার রেষ্টুরেন্ট , বারে ও ডিজেতে গেলে দেখা যায় যৌনতার অবাধ বিনিময়। সবায় ব্যস্ত সবার কাজে কারো দিকে ফিরে তাকানোর সময় নেই। আজকাল দেখি নাটকে মেয়েদের বিড়ি খেতে দেখাচ্ছে এটা সামাজিক ভাবে মেয়েদের বিড়ি খেতে উৎসাহিত করবে যা মোটেও কাম্য নয়। মেয়েদের কে তাদের অজান্তে তাদের কে পন্য হিসাবে ব্যবহার করে যৌনতাকে সবার সামনে এনে মেলে ধরছে।

রাস্তার ধারে নানা প্রকার বিজ্ঞাপনে মেয়েদের কে এমন ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে যেন অন্যকিছুর বিজ্ঞাপন চলছে। আর এই পালে হাওয়া দিয়ে চলেছে আমাদের সমাজের নানা শ্রেনীর বুদ্ধিজীবি। তারা নানা ভাবে এসব উতসাহিত করে চলেছে । এর মাঝে এগিয়ে আছে মিডিয়া হাউস গুলো ফ্যাশন হাউস ও কর্পোরেট ব্যবস্থা। কই দেখলাম না তো যে কোন মিডিয়া বলছে যে তারা বাংলাদেশের সেরা ৫০ জন ছাত্র-ছাত্রী কে (স্কুল , কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়) তাদের ভাল কাজের জন্য বা মেধার জন্য পুরস্কার দিচ্ছে।

এরা আছে যৌনতার সন্ধানে যা তাদের ব্যবসার চালিকা। হাউস গুলো ব্যস্ত আছে সেরা সুন্দরি, সেরা নাচিয়ে, গাইয়ে, সেরা মুখ, সেরা বুক-পিঠ এসব খোজার তালে। আবার কিছু আছে যারা খুজে চলেছে নায়ক, স্মার্ট ছেলেদের। মেয়েদের কে পন্যবানিয়ে পস্রা সাজিয়ে বসে পড়েছে এরা। আর সেই সাথে অভাব নেই দর্শক ও খরির্দার ।

একশ্রেনীর ছেলে রা আছে মেয়েদের এই পথে নিয়ে যাবার তালে। মেয়েদের মাদক হতে যা কিছু প্রয়োজন তা তাদের ছেলে বন্ধুরায় করে দেয়। মেয়রা খারাপ হবার পিছনে যেমন দায়ী তার পরিবার তেমনভাবে দায়ী তার বান্ধবী ও বন্ধুরা। সমাজে একটা শ্রেনীর মেয়ে ও ছেলেরা অনেক আগেই অতি আধুনিক হয়ে উঠেছে। এখন এদের সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে মধ্যবিত্ত শ্রেনীর মেয় ও ছেলেরা নানা অপকর্মে জড়িয়ে যাচ্ছে।

মেয়েরা তাদের চাহিদা মেটাতে গিয়ে নিজদের নানা জায়গায় বিকিয়ে দিচ্ছে একইভাবে ছেলেরা জড়িয়ে পড়ছে চুরি ছিন্তায় এর মত আজে । এখন বিভিন্ন বার পার্টি হাউস ও হোটেল গুলোর চোখ মধ্যবিত্ত শ্রেনীর মেয়েদের উপর এদের কে খুব সহজে উন্নত বিলাসী জীবনের লোভ দেখিয়ে যৌনতায় গা ভাসাতে রাজি করানো যায়। হচ্ছেও তাই এদের সাজগোছ চলাফেরা দেখলে বোঝা যায় পরিবতন্টা কিভাবে এসেছে ও কতটা হয়েছে। এসবের জন্য দায়ী আমাদের মত ছেলেরা যারা মেয়েদেরকে পন্য ছাড়া কিছু ভাবতে পারেনা। ছেলেরা তাদের অসৎ উদ্দেশ্য সাধনের জন্য মেয়েদের এ পথে নিয়ে আসে।

একটা ছেলে চাইনা যে তার বোন গাজা খাক বা তার বউ রাস্তায় বিড়ি খেয়ে বেড়াক কিন্তু নিজের বান্ধবী যখন পাশে বসে মদ খাই, বিড়ি টেনে গায়ে ঢুলে পড়ে তখন তাকে আরো উৎসাহিত করে। ছেলেদের এই মান্সিতকতা পরিবর্তন করতে হবে তা না হলে সমাজের দশা করুন থেকে করুনতর হবে । অফিস আদালতে যৌনতার অবাধ প্রর্দশনীর জন্য সমাজে নানা অপরাধ ঘটে চলেছে। প্রযুক্তি যেমন আমাদের জীবনে এনেছে সুখ তেমনি এনেছে অভিশাপ। আজকাল যৌনতার স্বাদ বিনিময় অনেক সহজ হোয়ে গেছে।

মেয়েদের যৌনতার দিকে হাত বাড়িয়ে দিচ্ছে সকল বয়সের পুরুষ । এতে করে সামাজিক অনেক বিধি নিষেধ ভেঙ্গে পড়ছে।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.