আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পুরনো চেহারায় মোহামেডান

শেষ পর্যন্ত ভালোভাবেই ঘর সাজিয়েছে ঐতিহ্যবাহী ঢাকা মোহামেডান। গত মৌসুম চলাকালেই শোনা যাচ্ছিল সাদাকালোরা নতুন মৌসুমের জন্য সেরাদল গড়বে। এ লক্ষ্যে দেশের অধিকাংশ তারকা ফুটবলারদের সঙ্গে আলাপও শুরু করে দেয়। কাউকে কাউকে আবার নিশ্চিত করতে অগ্রিম পেমেন্টও দেওয়া হয়। সব কিছু ঠিক রাখার পরও চোখে শর্ষা ফুল দেখা শুরু করেন কর্মকর্তারা।

কেননা অগ্রিম নেওয়ার পরও তারকা ফুটবলার মামুন মিঞা, জাহিদ হোসেন, শাকিল ও নাহিদরা শেখ রাসেলের সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেন। এমনকি তারা বলতে বাধ্য হন সময়মতো বাকি টাকা না দেওয়াতে শেখ রাসেলের সঙ্গে চূড়ান্ত আলাপ করে ফেলেছেন। চার ফুটবলার নিশ্চিত বলে মোহামেডান বিকল্প হিসেবে কারও সঙ্গে কোনো রকম আলাপই করেনি। সুতরাং তারা ছাড়া দলতো আর শক্তিশালী হবে না। এর মধ্যে আবার যারা খেলবেন তারাও পেমেন্টের জন্য পীড়াপীড়ি শুরু করে দেন।

এমনকি প্রশিক্ষণে নামাও বন্ধ রাখে। অবস্থা এতটা সংকটাপন্ন হয়ে উঠে যে মোহামেডানের মাঝারি মানের দল গড়াও অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। শেষ পর্যন্ত ক্লাবের ডাইরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভূঞা ও ফুটবল ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবুর হস্তক্ষেপে খেলোয়াড়রা অনুশীলনে ফেরেন। কিন্তু চার ফুটবলারের সমস্যা থেকেই যাচ্ছিল। তারা মোহামেডান না শেখ রাসেলে খেলবে এ নিয়ে চলে চরম বিতর্ক।

রহস্যের উদঘাটন না হলেও দুই ক্লাব সমঝোতার মাধ্যমে ঠিক করে ফেলে চারজনকে তারা ভাগাভাগি করে নেবে। এক্ষেত্রে লাভ হয় মোহামেডানেরই। কেননা জাহিদ ও নাহিদের মতো কুশলী খেলোয়াড়কে পেয়ে যায়। মোহামেডান থেকে মরিসন, মোবারক ছাড়াও বেশ ক'জন খেলোয়াড় চলে গেলেও জাহিদ ও নাহিদ আসাতে সেই ক্ষতি পুষিয়ে এখন কাগজে-কলমে শেখ জামালের পর সাদাকালোরা সেরা দল গড়েছে বলা যায়। ২০০৯ সালের পর মোহামেডান শক্তিশালী দলই গড়তে পারেনি।

অনেকটা জোড়াতালি দিয়েই মাঠে নেমেছে। গতবারে সুপার কাপ ছাড়া তিন মৌসুমেই ঐতিহ্যবাহী দলটি শিরোপাহীন ছিল। এবারে জাতীয় দলের ছয় খেলোয়াড়ই তাদের ঘরে। দেশ সেরা স্ট্রাইকার জাহিদ হোসেন এমিলি, জাহিদ হোসেন, নাহিদুল ইসলাম, আরিফুল ইসলাম, গোলরক্ষক মামুন ও ওয়াহিদের মতো পরিচিত মুখ আছে। তারপর আবার অনূধর্্ব ১৯ দলের হেমন্ত বিশ্বাস ছাড়া বাকি যে তিনজন খেলোয়াড় যোগ দিয়েছেন তাতে লোকাল কালেকশনে জামালের সমানই বলা যায়।

অর্থাৎ অনেক দিন পর দলবদলে মোহামেডান পুরনো রূপেই ঘর সাজিয়েছে। তবে বিদেশিদের মান কেমন হবে সেটাই প্রশ্ন। পাঁচজন বিদেশির নাম রেজিস্ট্রেশন করানো হয়েছে। কর্মকর্তাদের কথা তাদের মান নিয়ে সংশয় নেই। তবে এদের মধ্যে মরক্কোর মোস্তফা দর্শকদের নজর কাড়বে বলে আশা কর্মকর্তাদের।

শেখ জামালের সঙ্গে মোহামেডানের শক্তির পার্থক্য হতে পারে বিদেশিদের ঘিরে। শেখ রাসেলের সনি নর্দেকে ঢাকার ফুটবল ইতিহাসে সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক দিয়ে অন্তর্ভুক্ত করেছে শেখ জামাল। তাছাড়া অনেক যাচাই-বাছাই করে তারা বিদেশিদের নাম নিবন্ধন করেছে। জামালের প্লাস পয়েন্ট ঘর গুছিয়ে তারা দুই মাস আগে থেকেই খেলোয়াড়দের অনুশীলন করাচ্ছে। দুই প্রীতিম্যাচে প্রথমটিতে মোহমেডান ১-০ গোলে হারলেও পরেরটাতে আবাহনীকে রীতিমতো বিধ্বস্ত করেছে ৫-১ গোলে হারিয়ে।

একেতো তারকা ভরপুর তারপর আবার মাঠে নামার প্রস্তুতিটাও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। যা ময়দানি লড়াইয়ে টনিক হিসেবে কাজ করবে।

মোহামেডানের ম্যানেজার আমিরুল ইসলাম বাবু বলেছেন, এবার আমরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতোই দল গড়েছি। তিনি বলেন, প্রতিটি পজিশনেই নির্ভর যোগ্য তারকা আছে। বিদেশিদেরও মান যাচাই করে নেওয়া হয়েছে।

আর পেমেন্টের কথা যদি বলা হয় তাহলে বলব অধিকাংশ খেলোয়াড়ই আশিভাগ অর্থ দেওয়া হয়েছে। যা অন্য ক্লাব করেছে কিনা সন্দেহ। অর্থাৎ বাবুর মতে অতীতে যাইহোক না কেন মোহামেডান এবার মাঠে নামবে মোহামেডান রূপেই। এতে কি সব ট্রফি জেতা সম্ভব? বাবু বলেন, আশা রাখি। মোহামেডানকে এবার নেতৃত্ব দেবেন এমিলি।

তিনি বলেন, মাঝে কিছুটা চিন্তিত থাকলেও এখনতো দেখেছি মোহামেডান ভালোই দল গড়েছে। লোকাল ও বিদেশিরা ঠিকমতো জ্বলে উঠতে পারলেই আমার মনে হয় সব ভয়কে জয় করা সম্ভব। তবে এমিলি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন পেশাদার লিগকে। আবাহনী, শেখ জামাল বা শেখ রাসেলে খেলে আমি লিগ জেতার অংশীদার হয়েছি। আশা রাখি এবার মোহামেডানও লিগ জেতার উল্লাস করব।

পেশাদার লিগে গত কয়েক মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি ঐতিহ্যবাহী দলটি। এবার তাই আমরা চ্যালেঞ্জ নিয়েই মাঠে নামব।

 

 

সোর্স: http://www.bd-pratidin.com/

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।