আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রস্তুত ইসি, আগামী সপ্তাহে তফসিল

আগামী সপ্তাহের যে কোনো দিন দশম সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হতে পারে। সে অনুযায়ী সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এদিকে আগামী সপ্তাহে নির্বাচনের তফসিল হতে পারে বলে গতকাল সাংবাদিকদের জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ। মঙ্গলবার কমিশন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করে এসেই তফসিলের যাবতীয় খুঁটিনাটি পর্যালোচনা করেছে। আগামী রবিবার কমিশনের আনুষ্ঠানিক বৈঠকে চূড়ান্ত করা হবে ভোট গ্রহণের তারিখ।

এরপর যে কোনো সময় তফসিল ঘোষণা করা হবে। তবে ইসির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, ইসির বৈঠকের পর দিন ২৫ নভেম্বর তফসিল হতে পারে। ২৪ জানুয়ারির মধ্যে নির্বাচনের বাধ্যবাধকতায় তফসিলের সময়ও ঘনিয়ে আসছে। এ জন্য ইসি সচিবালয় নির্বাচন পরিচালনার প্রস্তুতি শেষ করে তফসিলের সময়সূচির খুঁটিনাটি কমিশনে উপস্থাপন করছে।

ইসি সচিবালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, তফসিল ঘোষণা থেকে ভোট গ্রহণ পর্যন্ত ন্যূনতম ৩৮ দিন সময় হাতে রাখতে হবে।

এ ক্ষেত্রে ডিসেম্বরের শেষে ভোট করার আর সুযোগ নেই। ২৪ বা ২৫ নভেম্বরের মধ্যে তফসিল দিলে ডিসেম্বরে ভোট করা দুরূহ হবে। এ ক্ষেত্রে ২ জানুয়ারি ভোটগ্রহণ হলে ৩৮ দিন হাতে থাকবে। আর ৯ জানুয়ারি ভোট গ্রহণ হলে ৪৫ দিন হাতে থাকবে। তবে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে ভোট করতে হলে ২ ডিসেম্বরের মধ্যে তফসিল করা ভালো হবে।

আর জানুয়ারির দ্বিতীয়ার্ধে (১৬ জানুয়ারি) ভোটের সময় নির্ধারণ করলে ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে তফসিল দিতে হবে। তফসিল দেওয়ার সময় সব দলের অংশগ্রহণের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিলের সুযোগ দিতে পুনঃতফসিল করার সময়ও হাতে রাখে ইসি।

তফসিল বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার শাহনেওয়াজ বলেন, আমরা দু-এক দিনের মধ্যেই কমিশন বৈঠকের সিদ্ধান্ত নেব। এ ক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে সমঝোতা হলেও তফসিল ঘোষণায় দেরি হবে না। যথাসময়ে তফসিল দেওয়া হবে।

আগামী সপ্তাহের মধ্যেই তফসিল ঘোষণা হতে পারে। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে ইসির বৈঠকের বিষয়ে শাহনেওয়াজ বলেন, আমরা সব দলকে নির্বাচনে আনার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে অনুরোধ জানিয়েছি। আমরা চাই একটা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন। ইসির অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে সংবিধান-প্রদত্ত ক্ষমতার পুরোটা ব্যবহার করবেন বলে রাষ্ট্রপতি তাদের আশ্বাস দিয়েছেন। এ ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি সবার নিরাপত্তার জন্য রাষ্ট্রপতির কাছে সেনাবাহিনীর সহায়তা চাওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

ভোটারদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই সেনাবাহিনী চাওয়া হয়েছে বলে উল্লেখ করেন এই নির্বাচন কমিশনার। জানা গেছে, এর আগে সবচেয়ে কম সময় ৪২ দিনে ভোট হয় অষ্টম সংসদ নির্বাচনে। তবে ষষ্ঠ ও নবম সংসদে ৪৭ দিন সময় দিলেও সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে তিনবার পুনঃতফসিল হয়। ইসি কর্মকর্তারা বলছেন, ৩৮ দিনের কম সময় দেওয়া সম্ভব নয়।

ইসি সচিবালয়ের নির্বাচন ব্যবস্থাপনা ও সমন্বয় শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব ফরহাদ হোসেন জানান, তফসিলে মনোনয়ন দাখিল, বাছাই ও প্রত্যাহারে কদিন সময় দেওয়া হবে তা নির্বাচনী আইনে বলা নেই।

তবে প্রচারণার সময় তিন সপ্তাহের বেশি করার বিধান নেই। এ ক্ষেত্রে দুই সপ্তাহের কম সময় দেওয়ারও সুযোগ নেই। গত নয়টি সংসদ নির্বাচনে ভোটের জন্য সর্বোচ্চ ৭৮ দিন ও সর্বনিম্ন ৪২ দিন রেখে তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। সব দলের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে কখনো কখনো পুনঃতফসিলও করে। এ ক্ষেত্রে ৩৭ থেকে ৩৯ দিন পর্যন্ত সময় রাখা হয়।

কর্মকর্তারা জানান, দশম সংসদের তফসিল ঘোষণার জন্য ভোটের দিনের আগে নূ্যনতম ৩৮ দিনের প্রস্তাব তুলে ধরবে ইসি সচিবালয়। সাধারণত উপনির্বাচনে নূ্যনতম সময় দিয়ে ৩৮ দিনের মধ্যে নির্বাচন করা হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে মনোনয়ন দাখিল ১০-১২ দিন, যাচাই-বাছাই ২ দিন করে ৪ দিন, প্রত্যাহারের সময় ৭ দিন ও প্রচারণার জন্য ১৫ দিন সময় দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

ভোটের জন্য কেন্দ্র ৩৭ হাজার ৭১১টি, ভোটকক্ষ ১ লাখ ৮৯ হাজার ৫৩টি, ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা ৬ লাখ ৬৫ হাজার ৩৫৯ জন প্রস্তুত থাকবেন। রাজনৈতিক উত্তাপের মুখে প্রধান দুই দলের সমঝোতার দিকেও তাকিয়ে রয়েছে ইসি।

সব দলের অংশগ্রহণে রাষ্ট্রপতির উদ্যোগ অব্যাহত রাখারও অনুরোধ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। তফসিল 'যথাসময়ে' ঘোষণা করা হবে জানিয়ে সাংবিধানিক সংস্থাটি সমঝোতার জন্য 'শেষ মুহূর্ত' পর্যন্ত অপেক্ষা করার কথাও বলেছে।

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.