আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টেলিফোন

“হ্যালো। কে বলছেন?”
 
“হাতি বলছি ভাই। ”
 
“তাই নাকি? কোথায় এখন তুমি?”
 
“এই তো বসে আছি বুনো শহরে। ৩ নম্বর ক্যামেল স্ট্রিটে। ”
 
“কী চাই বল।


 
“ছেলের জন্যে একটুখানি মিষ্টি চকলেট। ”
 
“কতখানি চাই? এক না দুপাউন্ড?”
 
“আরে কী যে বল না তুমি! পাঠাও এক টন। কামড় দু-তিন খাবে আমার ছেলে। জানো তো সে এখনও এইটুকু ছোট্ট পুটু?”
 
একটু পরেই ফোন করল কুমির। খুবই বিরক্ত তার গলা: “শুনছ ভাই, আমি তো ভেবেছি তুমি পাঠাবে কয়েক জোড়া গলোশ-- আমার স্ত্রী, মেয়ে তুতোনা আর আমার জন্য।


 
“আরে, বুধবারই তো পাঠালাম ডজন-দুই। সেগুলো আগে শেষ হোক। ”
 
“সেগুলো তো কবেই খাওয়া হয়ে গেছে। এখন বসে আছি ডিনারের জন্যে। এক ডজন মিষ্টি নতুন গলোশ পাঠাও দেখি।


 
ফোন করল খরগোশেরা। হাঁপাচ্ছে তারা। শোনা গেল তাদের হ্যাচ্চোর শব্দ। জানতে চাইলাম কী চায় তারা।
 
“পাঠাও কিছু দস্তানা।

ঠান্ডায় থাবা জমে গেল গো!”
 
ফোন এল শিম্পাঞ্জিদের কাছ থেকেও। বলল তারা: “কিছু বই পাঠাও না ভাই। ”
 
ফোন করল ভালুক ভায়া। তার কথা তো আর কথা নয়-- কামানের গর্জন। কানের পর্দা এই ফাটে কী সেই ফাটে!
 
তাকে বলি: “শোনো বন্ধ্, চেঁচিও না ষাঁড়ের মতো।

একটু থামো। নামাও একটু গলা। আস্তে কথা বল ভাই। ”
 


ভালুক কিন্তু চেঁচানি থামায় না। ষাঁড়ের মতোই তার হাম্বা-বাম্বা চলতেই থাকে।

এমনি বিরক্তিকর আমাদের ভালুক ভায়া।
 
আবার বলি: “রিসিভারটা একটু রাখ না ভাই। ”
   
জলা থেকে বকদের ফোন এল। বলল ওরা: “ব্যাঙ খেয়ে খেয়ে রদহজমে ভুগছি। পেটের ব্যথায় আর বাঁচি না।

এদিকে দার“ণ শীত। কিছু ওষুধ পাঠাও না ভাই-- কৃতজ্ঞ থাকব। ”
 
ফোন করল শূয়োর মা। বলল: “হ্যালো, হ্যালো। জানো তো, নাইটিঙ্গেলরা আমার সঙ্গে কোরাস গাইবে? পারলে তাকে পাঠাও।

আমরা খুব সুন্দর গাইব। ”
 
আমি কিন্তু অবাক। নাইটিঙ্গেল গাইবে শূয়োরের সঙ্গে! শূয়োর মা-কে বলি : “গানের জন্যে বরং এক্ষুণি এক কাককে ডেকে আন।
 
ফোনে আবার ভালুক। দ্রুত বলল সে: “এস, বাঁচাও একটি সিল।

সে ছুঁয়েছে বিজলি-ছোঁড়া ঈল। ”
 
এই হচ্ছে সারাদিন। কেবল ক্রিং ক্রিং-- কেবল টিঙ-এ লিং, টিঙ-এ লিং, টিঙ-এ লিং।
 
কদিন আগে হতাশ দুটি হরিণ ফোন করেছে। বিষণœ তাদের গলা: “মেলার কী হল রে ভাই বল।

ঢেঁকি-খেলনা কি নেই সেখানে? কী দুঃখের কথা বল দেখি!”
 
আমি বলি: “ঐ তো ওখানে সবই আছে। দোলনা, ঢেঁকি-খেলনা সব পাবে। ”
 
এইসব ফোনকল-- হৈ চৈ হাক্কামাক্কা চেঁচানি আর কাঁদুনি সারাদিন। আর সহ্য হয় না আমার। মনে হয় মেলা ছেড়ে চলে যাই।


 
গত শুক্রবার ক্যাঙ্গারু ফোন করে বলল: “এটা কি ভাই ধোবা রাড়ি?”
 
শুনে আমি রেগে টং। বললাম: “না এটা তাÍ বাড়ি নয়। ”
 
“তবে কোথায় সেটা?”
 
“জানি না। সাত সাত ছয় শূন্য তিন তিন- এ রিং করুন। ”
 
              তিনটি রাত্রি জ্বলছে আমার আলো
              আধেক মরা ঘুমের নেশায় ঢুলি, তবু
                      ঘুমেরা চমকাল,
              ভাবছি কখন শেষ হবে ফোন-রিং
              হঠাৎ তবু বাজল ক্রিং ক্রিং
 
“কে বলছেন, কে?”
 
“গণ্ডার বলছি।


 
“আছেন তো ভাই ভালো?”
 
“আসুন দ্রুত। শুনতে পেলে চমকে যাবে তালু। ”
 
“কী হয়েছে শুনি? ভূমিকম্প নাকি লাগল আগুন?”
 
“না রে ভাই। হিপো সাহেব কাদায় গেছেন দেবে। ”
 
“জলহস্তী কাদায়? কেমন করে হল?”
 
“আসুন।

তাকে এবার তুলতে হবে ডাঙায়। দেরি করলে কিন্তু দেখতে পাবেন না। মাছির মতো ডুববে বিশাল হিপো। ”
 
“আসছি আমি। তুলতে চাই তাকে।


 
জলা থেকে হিপোকে তোলা!  বাপ রে, সে এক সাংঘাতিক কাণ্ড।
 
*  বিদেশি কাহিনি অবলম্বনে

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।