আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার বৃহস্পতি : দুই

আগ্রহ মোর অধীর অতি— কোথা সে রমণী বীর্যবতী । কোষবিমুক্ত কৃপাণলতা — দারুণ সে , সুন্দর সে উদ্যত বজ্রের রুদ্ররসে , নহে সে ভোগীর লোচনলোভা , ক্ষত্রিয়বাহুর ভীষণ শোভা।

আমাদের রুমটা মোটামুটি সুন্দর। দরজা দিয়ে ঢুকে হাতের বাম কর্নার বরাবর জাতনিম কাঠের একটা বিশাল খাট পাতানো। খাটের বাম পার্শেই বিশাল একটা জানালা।

জানালাটার একটা বৈশিষ্ট্য আছে। সাধারণ জানালা মেঝের একটু উপর থেকে শুরু হয়। কিন্তু এই জানালাটা একদম মেঝে থেকে শুরু হয়েছে। জানালাটার কোন গ্রিল নাই। কফি কালারের কাঁচ লাগানো।

আর হালকা নিল রঙের মোটা কাপড়ের পর্দা। আমার PhD করার সময় আমরা যখন নিউ জার্সিতে ছিলাম, সেখানে আমি আকবর নামের এক ভদ্র লোকের বাসায় থাকতাম। উনি প্রত্যেক মাসে বাংলাদেশি টাকায় পাঁচ হাজার টাকার বিনিময়ে আমাকে একটা ঘর ভাড়া দিয়েছিলেন। যদিও ঘর হিসেবে ভাড়াটা অতি নগণ্য, তাঁরপরও তিনি আমাকে দিয়েছিলেন। কারন একটাই, আমাদের দেশ ছিল এক "বাংলাদেশ" ।

আমি প্রথম যখন বিদেশে যাই, আমার থাকার যায়গা ঠিক করা হয় এক প্রফেসরের বাসায়। তিনি ছিলেন ব্যাচেলর। কিন্তু বাসা দেখে সেটা বোঝার উপায় নাই। ঝকঝকে পরিষ্কার, পরিপাটি। ওয়াশ রুম দেখে মনে হয় বসে খাবার খাওয়া যাবে।

আমি তো এক্কেবারে ফিদা হয়ে গিয়েছিলাম। সাথে সাথে পরিকল্পনা করে ফেললাম, আর যাই হোক, আমি এই বাসা ছাড়তেছিনা। বেশ ভালো ভাবেই কাটতেছিল দিনগুল। দুই একদিন যাবার পরে আমিও যেন একটা সিস্টেমের মাঝে ঢুকে গেলাম। সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠা।

উঠেই চায়ের পানি উঠিয়ে দিয়ে বিছানা ঠিক করা, তারপর ওয়াশ রুম থেকে বের হয়ে মগে ভর্তি করে এক মগ দুধ চা বানিয়ে নিয়ে দরজার পাসের পেপার হোল্ডার থেকে পেপার নিয়ে পড়তে পড়তে ভার্সিটিতে যাবার জন্য প্রুস্তুত হই। সারাদিন এসাইন্মেন্ট এর কাজ, আন্ডার গ্রাজুয়েটদেরকে তাঁদের কাজে সাহায্য করা, দুপুরে ঠিক সময়ে খাবার খাওয়া, তারপর বাসা ফেরার সময় বাজার করে নিয়ে ফেরা। আমি যেন একটা চক্রে ঢুকে গেলাম। প্রুতিদিন নতুন নতুন জিনিস শেখা, আড্ডা, বন্ধের দিনে নতুন যায়গায় ঘোরাঘুরি, ছবি তুলে ফেসবুকে আপলোড। কি যে মজার ছিল দিনগুলো, বলে বোঝানো যাবেনা।

খারাপ যে লাগতনা, তা কিন্তু নয়। রাতের বেলা করে বাসার জন্য মন কাঁদত। মা-বাবা, নতুন বউ, আপা, সবার জন্য খারাপ লাগতো। আমি যে ওদের কতটা ভালবাসতাম, সেটা প্রথম টের পেয়েছিলাম এই পর দেশে এসে। প্রুতি রাতেই বাসার সবার সাথে কথা বলতাম।

শুধু দোলন ছাড়া। বিদেশ যাওয়ার ব্যাপারটাতে ওর আগ্রহই সবচেয়ে বেশি ছিলও। কিন্তু যখন জানতে পারলো, ও আমার সাথে যেতে পারবেনা, তখন ও সরাসরি বলল-"আমি তোমাকেও একা যেতে দিবনা"। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমি একাই আসলাম, আর এই বিষয়টা নিয়ে ও আমার উপর অনেক রেগে আছে। আমি এখনও ওর রাগ ভাঙ্গাতে পারিনি।

আমি ওকে ফোন দেই, ও ধরে চুপ করে থাকে। আমি শুধু কান্নার শব্দ শুনতে পাই। আমি একাই কথা বলে যাই। ওকে হাসানোর চেষ্টা করি, কিন্তু ও কিছুই বলেনা। একসময় ফোন রেখে দেয়।

আমি রাখিনা। ফোনটা কানে লাগিয়ে বসে থাকি। হ্যালো, হ্যালো করতে থাকি। জানি, ও পাঁশে কেউ নাই। তারপরও কথা বলি।

আমার ভালো লাগে। এক সময় ফোন নামিয়ে রেখে ছাদে চলে যাই। চাঁদ দেখি আর ওয়াইন খাই। এভাবেই আনন্দ, বেদনার মাঝ দিয়ে কেটে যাচ্ছিলো দিনগুলো। সব মিলিয়ে খারাপ না, ভালই।

সুখের দিন বেশি স্থায়ি হয়না। আমার ও হলনা। আমার প্রোফেসর যেহেতু ব্যাচেলর ছিল, মাঝে মাঝেই সে নতুন নতুন বান্ধুবি নিয়ে আসতো বাসায়। আমার তাঁতে কোন সমস্যা ছিলনা। আমিও যেহেতু ব্যাচেলর, একদিন সে আমাকে যা বলল, তাঁর অর্থ অনেকটা এমন -"তুমিও কি আমার সাথে মাছ ধরতে চাও"?? আমি প্রথমে বুঝি নাই।

যখন বুঝতে পারলাম, হাসি মুখে শুদ্ধ বাংলায় বললাম-" মাছ তোর পাছা দিয়ে ঢুকাই দিবো "। উনি বলল-"what"? আমি বললাম-"No sir. thank you". উনি আর কিছু বললেন না। এমনি করেই চলছিল। একদিন উনি বাসায় ফিরলেন চার পাঁচ জন বন্ধু এবং বান্ধুবি নিয়ে। যেহেতু আগে থেকেই আমি অভ্যস্ত, আমিও ওদের সাথে জমিয়ে আড্ডা দিলাম।

আমরা ছোট খাটো একটা বারবিকিউ পার্টির মতো করে ফেললাম। রাত যত গভীর হতে লাগলো, ওদের খোলামেলা ভাবটা আরও বেশি করে প্রকাশ পেতে শুরু করল। আমার উপস্থিতি অনাকাঙ্ক্ষিত ভেবে আমি ওদের কাছ থেকে বিদায় নিয়ে আমার রুমে গেলাম। সেদিন আর বাসায় ফোন দিলাম না। মদ্য পানের ফলে ঘুম আসলো তাঁরাতাড়ি।

আমি গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলাম। সকালে আমার ঘুম ভাঙল আটটার কাছাকাছি সময়ে। আমি চোখ খুলে আবিস্কার করলাম, আমি বিছানায় একা না, আমার পাঁশে কেউ একজন শুয়ে আছে। ওদের সাথে ইয়ুন নামের একটা মেয়ে ছিল। সে যায়গা না পেয়ে আমার এখানে এসে ঘুমিয়েছে।

আমার মেজাজ খুবি খারাপ হল। বারবার দোলনের কথা মনে হচ্ছিলো। ও কি এই জন্যই আমাকে একা আসতে দিতে চায় নাই?? আমি প্রোফেসরকে জানালাম যে, আমি তাঁর বাসায় আর থাকবো না। ওরা সবাই অবাক হল। ইয়ুন কিছুতেই বুঝতে পারলনা, ও আমার পাঁশে রাতে ঘুমিয়েছে, তাঁতে সমস্যাটা কি? আমি ওকে যা বললাম তাঁর অর্থ অনেকটা এমন-"আম্মাগো, তুমি যদি বুঝতা সমস্যা টা কি, তাহলে আর আমার পাঁশে লেংটু হয়ে শুয়ে থাকতা না"।

যাই হোক, আমি একদিনের নোটিশেই বাসা ছেড়ে দিলাম, এবং একটা বাঙালি পরিবার দেখে উঠে গেলাম। বাঙালি পেলাম ঠিকি, কিন্তু পরিবার পেলামনা। আকবর নামের লোকটাও ব্যাচেলর ছিলও। তবে যেহেতু সে বাঙালি, ওকে বলতে হবে-" পত্নী ত্যাগী "। ওর পুরো পরিবার দেশে থাকে।

এখানে ও একাই থাকে। আকবর মানুষটা ভালই। যখন বুঝতে পারলো, আমি এতো টাকা ভাড়া দিতে পারবোনা, ও অনেক সহজ ভাবে হাসি মুখে আমাকে বলল-" মানুষ ছোট থেকেই বড় হয় "। আকবরকে দেখে আমি অবাক হতাম। তাঁর টাকার কোন অভাব নাই।

ছোট খাটো একটা রেস্টুরেন্ট এর মালিক। কিন্তু তাঁরপরও একদম সাদা সিধে। পোশাক নিয়ে মাথা ব্যাথা নাই। খাবার নিয়ে কোন যন্ত্রণা নাই, যা পায় তাই খায়। মাঝে মাঝে নামাজও পড়ে।

কিন্তু সব সময় মন খারাপ করে থাকে। কিসের অভাব, আমি বুঝতেই পারিনা। একদিন বিকালে নাশতা করতে করতে বললাম-"আপনাই কি নিয়ে এতো মন খারাপ থাকে "? উনি আমাকে বেশ সহজ ভাবেই বললেন-"দেশে বউ বাচ্চা আছে। তাঁদের কাছে যেতে মন চায়, এই পর দেশে আর ভালো লাগেনা"। আমি বললাম- "আছেন কেন, চলে যান"।

উনি অনেকক্ষণ চুপ করে থাকলেন। তাঁরপর বললেন-"বিদেশে এসে একটা বিয়ে করেছিলাম। সেই খবরটা আমার পরিবারের সবাই জানে। বাচ্চারা বড় হয়েছে, এতো বড় অপরাধ করার পর, ওদের চোখে চোখ মেলানোর সাহস আমার নাই। এখন সবাই নিজের পায়ে দাঁড়িয়েছে, তাই কেউ আর যোগাযোগ ও করেনা।

আমারও ব্যাপারটা সহ্য হয়ে গেছে, এখন এই জীবনটাই আমার কাছে স্বাভাবিক "। আকবর না থাকলে, আমাকে পড়াশুনা ছেড়ে দেশে চলে আসতে হত। শেষের দিকে ও আর আমার কাছে ভাড়া নিতোনা। আমার জন্য মাঝে মাঝে রান্না করে রাখতো। মাঝে মাঝে দোলনের সাথে ঝগড়া করতাম ফোনে।

অনেক চিল্লাতাম, রাগ করে মদের বারে পড়ে থাকতাম। একটা সময় এমন হল, আমি সিদ্ধান্ত নিলাম, আমি আলাদা হবো। যে মেয়ে আমাকে বুঝতেই পারেনা, তাঁর সাথে সংসার কিসের?? আকবর কথাটা শোনার পর আমাকে বলল-"তোমরা কি এখন সংসার করছো নাকি??" বলে হাঁসতে হাঁসতে লুটিয়ে পড়ল। আকবরের উপর প্রুচুর মন খারাপ হল আমার। আমি উঠে যাচ্ছিলাম, হুট করে ও আমার হাত ধরে টেনে বসাল।

তাঁর পর বলল-"তোমার বউ দেশে কি করে??" আমি বললাম-"কিছুই না"। তখন আকবর আমাকে বলল-"তাহলে ওর সময় কাটে কিভাবে?" আমি চিন্তায় পড়ে গেলাম। আসলেই তো কথা ঠিক ওর সময় কাটে কি করে? তোমাদের কি প্রেমের বিয়ে? আমি চুপ করে থাকলাম। আকবর হাসল, এবং বলল-"তুমি হয়তো জাননা, আমারও প্রেমের বিয়ে। আমরা তিন বছর প্রেম করে বিয়ে করেছিলাম।

বিয়ের পর সংসার বড় হল, সংসারে অভাব, অনাটন লেগেই থাকতো। আমি তখন সিদ্ধান্ত নিলাম দেশের বাইরে আসব। যেই ভাবা সেই কাজ। টাকা পয়সা ধার করে চলে আসলাম। কিন্তু বিদেশে আমার মন টেকে না।

তখন এতো ফোনও ছিলনা। ধিরে ধিরে আমার রোজগার বাড়তে থাকলো। আমি ওদের অনেক করে টাকা পাঠাতাম। তখন আমার মনে হল, ওরা তো সুখেই আছে। আমি কি একটু সুখের মুখ দেখতে পারিনা? তখন আমার পরিচিত একটা মেয়ে, নাম শেলি।

আমি ওর শরণাপন্ন হলাম। ধিরে ধিরে আমাদের সম্পর্ক গাড় হল, আমরা বিয়ে করে ফেললাম। আমার বাসায় যখন খবরটা জানলো, আমার বড় মেয়েটা আমাকে ফোন দিলো, বলল- "বাবা, যখন আমরা খেতে বসি, আম্মা তোমার চেয়ারটাতে কাউকে বসতে দেয়না। সবার মতো তোমার চেয়ারের সামনেও খাবার প্লেট দেয়, খাবার তুলে দেয়। মাঝে মাঝে হাত পাখা দিয়ে বাতাস করে খাবার ঠাণ্ডা করে দেয়।

আমি মুখ টিপে টিপে হাসি। বলি-আম্মা, আপনি তো আব্বার জন্য পাগল হয়ে যাবেন। আম্মা কিছু বলেনা। শুধু কাঁদেন। তুমি কি জান বাবা, তুমি সব সময় গরম পানি দিয়ে গোছল করতে বলে আম্মাও সব সময় গরম পানি দিয়ে গোসল করেন।

যত গরমের দিনই হোকনা কেন। তোমার গরুর মাংস অনেক পছন্দ, তাই বলে আম্মা কখনও গরুর মাংস খায়না। তুমি আসলে এক সাথে খাবে বলে। আমাদের কথা না হয় নাই ভাবলা, আমার মায়ের এতো ভালবাসাকে তুমি উপেক্ষা করলে কোন সাহসে? আমরা কি এখন তোমার চেয়ারটাতে টাকা বসিয়ে রাখবো? বাবা, আমরা তোমাকেই চেয়েছি সব সময়, তোমার টাকাকে নয়। তুমি কিভাবে ধরে নিলে, তোমার পাঠানো টাকায় আমরা অনেক সুখি?" কথাগুলো বলেই আকবর হাউ মাউ করে কাঁদতে লাগলেন আর বলতে লাগলেন-"তুমি কি কখনও ভেবে দেখেছ, তোমাকে ছাড়া ওর দিনগুলো কিভাবে কাটছে?" আকবর আমাকে সেই দিন কথা গুলো না বললে হয়তো আমি আর দোলন আজ এতটা সুখে থাকতে পারতাম না।

প্রকৃত সুখ কিসে, সেটা বুঝতে পারা অনেক অনেক বড় একটা ব্যাপার। আমি নিউ জার্সির আকবরের বাসার রুমের মতো করে আমার বাসার রুমটা সাজিয়েছি। মেঝেতে ঝক ঝকে সাদা টাইলস। দেয়ালে হালকা গোলাপি রঙ করা। ছোট ছোট রঙ্গিন লাইট সেই দেয়ালে নানা রঙের ইফেক্ট তৈরি করছে।

ঠিক যেন মায়া কাড়া একটা ভাব। দোলনের এমন টা ভালো লাগেনা। ও আমাকে মাঝে মাঝেই বলে-"দেয়ালের রঙটা পালটাই প্লীজ"। আমি তখন ওকে বলি-"আমার এক বন্ধুকে আমি এমন করে বাঁচিয়ে রাখতে চাই। যে আমাকে শিখিয়েছে, ভালোবাসার মানুষটাকে কিভাবে ভালবাসতে হয়"।

দোলন কিছু না বুঝে মুখ ভার করে চলে যায়। ঘুম জড়ানো চোখে অতীত নিয়ে ভাবতে ভাবতে কখন যে ভোর হয়ে গেছে, বুঝতেই পারিনি। কাল রাতে দোলন কান্না করতে করতে ঘুমিয়ে পরেছে। আমার অনেক মন খারাপ ছিলও বলে নানা দুশ্চিন্তায় ঘুম আসেনি। ভোর রাতের ঘুম আমার খুব প্রিয়।

সব দিক ঠাণ্ডা হয়ে যায়, কেমন নিরব একটা পরিবেশ। পাতলা একটা কাঁথা গায়ে দিলে কি যে আরাম লাগে, বলে বোঝানো যাবেনা। যে আমার মতো ঘুম পাগল, সেই শুধু বুঝবে। আমি গভীর ঘুমে তলিয়ে আছি। হুট করে দেখি আমি একটা বনের মাঝে শুয়ে আছি।

ঘুমাইনি, চোখ বুঝে আছি। একটা সুন্দর মায়া কাড়া হরিণ আমার মুখের উপর ওর মুখ ধরে আছে। এটা স্বপ্ন নাকি বাস্তব, দেখার জন্য চোখ খুলতেই দেখি দোলন আমার মুখ বরাবর ওর মুখ ধরে আছে। আমি ভয় পেয়ে ধুড়পুড় করে উঠে বসলাম। দোলন বলে উঠল- এই, কি হয়েছে তোমার? ভয় পেয়েছ নাকি? সকাল কতো হয়েছে যান, উঠবে না? অফিস নাই নাকি? আমার তন্দ্রা ভাব তখনও কাটেনাই।

আমি চোখ মেলে ড্যাব ড্যাব করে ওর দিকে তাকিয়ে থাকলাম। ও আর কিছু না বলে আমার হাতে চায়ের কাপ ধরিয়ে দিয়ে ঘর গুছানো শুরু করল। আমি বিছানায় হেলান দিয়ে চায়ে চুমুক দিচ্ছি, আর দলনকে দেখছি। প্রুতিদিন দোলন এই কাজটা করবে। সকালে আমাকে চা দিয়ে ঘর গুছাবে।

তখন ওর পরনে থাকবে হালকা রঙের কোন শাড়ি। হালকা গোছের একটু সাজ গোছ করবে। কিন্তু অনেক পরিপাটি করে সাজবে। চুলে বেণী করা থাকবে ওর। খালি পায়ে এমন সাজে ওকে অনেক সুন্দর লাগে।

ঘরে গুছানোর কিছু নাই। তাঁরপরও যতক্ষণ পর্যন্ত আমার চা শেষ হবেনা, ও আমার সামন থেকে যাবেনা। ও জানে আমি ওকে মুগ্ধ নয়নে দেখি আর চা খাই। আর আমার মতো নগণ্য একজন মানুষকে একটু সুখ দেবার জন্য মেয়েটা সেই সাত সকালে উঠে কতই না পরিশ্রম করে। আহারে বেচারি।

আমি চায়ের কাপে শেষ চুমুক দিতে দিতে বলি- " কোনদিন যদি আমি এই সকালটা না দেখি, আল্লাহ্‌ যেন আমাকে সেই সকালটা না দেখান। " বলতে বলতে আমি চোখ বুঝতে শুরু করি। আর অমনি দোলন চিৎকার করে ওঠে-" এই এই, ওঠো ওঠো, নাহ আর ঘুমাবা না" বলেই ও আমার দিকে তেড়ে আসে। আমি ওর এই তেড়ে আসার মানে বুঝি। একটু ছলনার আশ্রয় নিয়ে প্রিয় মানুষটার একটু কাছে আসা, একটু ভালোবাসার স্পর্শ পাওয়া।

আহা, "মানুষের জীবন কতই না সুখের। "


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.