আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উস্কানিতে ভারত: মির্জা আব্বাস

শুক্রবার এক সমাবেশে ভারতের হাইকমিশানারের সমালোচনার পর শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় পুনরায় সরাসরি ভারতের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য।
এর আগে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন,আন্তর্জাতিক মাস্টার‌প্ল্যানে একতরফা নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে আওয়ামী লীগ।
ফখরুল ভারতকে ইঙ্গিত করলেও মির্জা আব্বাস সরাসরিই বলেন, “এই সরকারের ওপর আজ ভারতীয় সিন্দাবাদের ঘোড়া চেপে বসেছে। ”
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গত বছর নয়া দিল্লি সফরে গিয়ে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে বৈঠক করে প্রতিশ্রুতি দেন, তারা ক্ষমতায় গেলে ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী কোনো গোষ্ঠীকে বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেবেন না।
ভারত বাংলাদেশের ‘বিশেষ’ কোনো দলের সঙ্গে নয়, বরং জনগণের প্রতিনিধিত্বকারী সব দলের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায় বলে তখন বিএনপির পক্ষ থেকে বলা হয়।


বিরোধী দলের ওপর দমন-পীড়নের নিন্দা জানিয়ে মির্জা আব্বাস বলেন, “অতীতেরাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশ ও মিছিলে প্রয়োজনে লাঠিচার্জ, কাঁদানে গ্যাস কিংবা রবার বুলেট ছোড়া হত। কিন্তু এই সরকারের আমলে পুলিশ মানুষের ওপর সরাসরি গুলিবর্ষণ করছে।
“আমার মনে হয়, প্রতিবেশী দেশের উস্কানিতেই সরকার এভাবে বেপরোয়া গুলিবর্ষণ করছে, যা অতীতে কখনোই হয়নি। ”
সরকারকে হুঁশিয়ার করে তিনি বলেন, “একদিন না একদিন সকল গুলির জবাব  আপনাদের দিতে হবে। ৪০ বছর পর স্বাধীনতা বিরোধীদের বিচার হলে যারা এভাবে গুলি করছেন, আরো ৪০ বছর পর হলেও ওই সব গুলির জবাব দিতে হবে।

প্রয়োজনে অভিযুক্তদের মরণোত্তর বিচার করা হবে। ”
বর্তমান সরকার ‘অবৈধ হয়ে গেছে’ দাবি করে তাদের নির্দেশ না মানতে পুলিশসহ প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপি নেতা।

ভারতের হাইকমিশনার পঙ্কজ সরণের সমালোচনা করে মির্জা আব্বাস আবারো বলেন, “প্রতিবেশী দেশের একজন কর্মকর্তা লম্ফ-ঝম্প দিচ্ছে। তিনি বলেছেন, বাংলাদেশে তাদের স্বার্থ রয়েছে। এদেশেকে তাঁবেদার রাষ্ট্র বানানোর জন্য তিনি তৎপর আছেন।


“আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- ভারত চায়, আবার আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে। এই কারণে সরকার একতরফা নির্বাচন করে দেশকে একদলীয় শাসনের দিকে নিয়ে যেতে চাচ্ছে, যাতে ভারতের তাঁবেদারি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা পায়। ”
ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির সমালোচনা করেন মির্জা আব্বাস,  ট্রানজিট দেয়ার সমালোচনাও করেন তিনি।
“আমরা অনেক রক্ত ও ত্যাগের বিনিময় এই দেশকে স্বাধীন করেছি, কারো গোলামী করার জন্য নয়। আমরা কখনো এই স্বাধীনতা বিলীন হতে দেব না।

এদেশটা কারো তালুকদারি নয় যে যা ইচ্ছা তা-ই করবে। ”
জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে তারেক রহমানের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এই আলোচনা সভায় সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক ফরহাদ হালিম ডোনার সভাপতিত্ব করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, ড. হারুন অর রশীদ, ড. করিম ওয়াহিদী, সাংবাদিক আমিরুল ইসলাম কাগজী সভায় বক্তব্য রাখেন।
তারেকের জন্মদিন উপলক্ষে সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে স্বাধীনতা ফোরামের এক আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য মুহাম্মদ জমির উদ্দিন সরকার সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেন, “নির্দলীয়সরকার না হলে এর দায়দায়িত্ব সরকারকেই নিতে হবে। ”
‘ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও হানা দিচ্ছে পুলিশ’
পুলিশ বিরোধী দলের নেতাদের বাসা-বাড়ির পাশাপাশি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও হানা দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।


শনিবার সকালে নয়া পল্টনে দলীয় কার্যালয়ে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘সরকার দেশটাকে ‘পুলিশি রাষ্ট্রে’ পরিণত করেছে।
“শুধু বিরোধী দলের কর্মসূচি হলেই নয়, যখন-তখন আমাদের নেতাদের বাসা-বাড়ি এমনকি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও পুলিশ হানা দিচ্ছে। ”
রিজভী অভিযোগ করেন, যুবদলের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি হামিদুর রহমান হামিদের সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে গত ৫ দিনে পুলিশ কয়েকবার অভিযান চালিয়েছে। আসবাবপত্র তছনছের পাশাপাশি কর্মচারীদের নির্যাতন ও হুমকি দেয়া হয়েছে।
শুক্রবার হাই কোর্টের কাছে বিএনপি নেতা নয়ন বাঙালির হাত পুলিশ ভেঙে দিয়েছে জানিয়ে রিজভী বলেন,তিনি এখন আশঙ্কজনক অবস্থায় ট্রমা সেন্টারে চিকিৎসাধীন।



রাজধানীর উত্তরা, সাতক্ষীরা, নারায়ণগঞ্জ, টাঙ্গাইল, রাজশাহী, মুন্সীগঞ্জ, ময়মনসিংহে নেতা-কর্মীদের ওপর গত দুই দিনে পুলিশি নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব।
নির্দলীয় সরকার ছাড়া ‘একতরফা’ নির্বাচনের চেষ্টা প্রতিহত করা হবে জানিয়ে রিজভী বলেন,  “আমরানীল নকশার নির্বাচন হতে দেব না। ”
তফসিল ঘোষণা হলে দেশ অচল করে দেয়া হবে’- শুক্রবারের বিক্ষোভ সমাবেশে দলের মুখপাত্র মির্জা ফখরুলের এই ঘোষণা উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, “ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের এই আহ্বানে সারাদেশে প্রস্তুতির টেউ লেগেছে। যদি এখনো সরকারের বোধদয় না হয়, তাহলে করুণ পরিণতির জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হবে। ”


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।