আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

এক্সট্রিম বান্দরবান অভিযান (পর্ব -২)-স্বর্ণ মন্দির, শহর

“হারিয়ে যেতে এসেছি মোরা সব বাধা ভেঙ্গেচুরে মন আমার যায় চলে যায় দূর থেকে আরও দূরে, কষ্টরা আজ দূরে পরে থাক,ব্যস্ততা কোন ছার এমন সময় জীবনে মোদের আসবেনা বারবার”। আসলেই জীবনের সব টেনশন দূরে রেখে কয়েকদিন কাটানোর ভাগ্য সবার থাকে না বান্দরবান শহর, হলুদ রেখাগুলো রাস্তা... *পাহাড়ি শহর বান্দরবান* আমার দেখা বাংলাদেশের সবচেয়ে সুন্দর জেলা। আয়তন-৪,৪৭৯ বর্গ কিমি, শহর- ৫২ বর্গ কিমি। চারিদিকে পাহাড়ে ঘেরা সাঙ্গু নদী বিধৌত নীরব সপ্নভুমি। আসার আগে সেনানিবাসে থাকার জন্য চেষ্টা করেছিলাম কিন্তু ফারহান ভাই (Ex AFMC) বদলি হয়ে যাওয়ায় তিনি সাহায্য করতে পারলেন না।

রুপকের এক বন্ধুর মাধ্যমে Horticulture Centre এর খোঁজ পেলাম। এইখানে রুম ম্যানেজ করাটা ছিল মজার ঘটনা... রুপক ফোন করলো। ওপাশ থেকে জনৈক মেয়ের কণ্ঠ ভেসে আসলো, রুপক শুধু সালাম দিয়েই ফোন কেটে দিল। আমি- কল কাটলি কেন? রুপক-এর আগে তো পুরুষ মানুষ ধরেছিল। আমি- ধুর তাতে কি হইছে,উনার মেয়ে হবে হয়তো??আবার কল কর।

কিন্তু ওপাশ থেকে আর কল ধরে না। হয়তো ভাবছে disturb করতে কল করতেছে। পরদিন আমি কল করলাম। আবার মেয়ে। যাক উনি বললেন এটা বাসার ফোন,আব্বার নাম্বার নেন।

নতুন নাম্বারে কল করে আর্মি মেডিক্যাল থেকে আসব বলে রুম ম্যানেজ করলাম। আসার দিন বাপের নাম্বারে কল দিলাম- আবার সেই মেয়ে?? -আব্বু তো অফিসে?? যাই হোক এসে রুম দেখে মন ভরে গেল। ১২ জনের জন্য ৩ রুম। ১২ টা বেড। ভাড়া প্রতিজন ৫০ টাকা।

রেস্টহাউজ, হরটিকালচার সেন্টার ফ্রেশ হয়ে নামাজ পরে লাঞ্চ সারলাম। এবার স্বর্ণ মন্দির.....পথে সবাই আখ কিনল। এত সুমিষ্ট আখ জীবনে খুব কমই খেয়েছি। *স্বর্ণ মন্দির* পাহাড়ের উপর (৬০ মি) এই মন্দির। বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বৌদ্ধ মন্দির।

শহর থেকে ৪ কিমি,রাঙ্গামাটি রোডে। খাড়া রাস্তা ধরে উপরে উঠতে উঠতে সবাই বলল-এখানে রোলিং করছে কিভাবে?কিন্তু জানতাম না কি ভয়ঙ্কর খাড়া রাস্তার অভিজ্ঞতা আমাদের হবে। খুব সুন্দর জাঁকজমক পূর্ণ সোনালি রঙের স্থাপত্য শিল্প। দূরে উঁচু পাহাড়গুলো দেখে খুব অস্থির লাগছিলো, কখন যাবো ঐদিকে। ফটোগ্রাফি চলছে পুরোদমে।

শুনলাম এখানে ভিতরে সোনার একটা বুদ্ধ মূর্তি আছে। স্বর্ণ মন্দিরের সিঁড়িতে আমি...... স্বর্ণ দণ্ড অপূর্ব কারুকাজ *দেবতার পুকুর* মন্দিরের কাছেই এটা শুনে গেলাম। কি আজব,ইট দিয়ে চৌবাচ্চার মত করা। এইটা আবার উদ্বোধন করছে মায়ানমারের প্রধানমন্ত্রী জেনারেল খিন স্ক্রুত। এই চৌবাচ্চার মাহাত্ম্য কি বুঝলাম না।

ফেরার পথে গালে একটা মশা... চিন্তা আসলো ম্যালেরিয়া হলে বান্দরবান কি ঠেলা বুঝবো?? *শহর* সাঙ্গু নদী,ব্রিজ থেকে সন্ধ্যার আগে আগে সবাই শহরে এসে একসাথে নামাজ পরলাম। এরপর যে যার মত বার্মিজ মার্কেট ঘুরতে লাগলো,কেনাকাটা করলো প্রিয়জনদের জন্য। আমি আর রুপক পরদিনের চান্দের গাড়ি ঠিক করলাম স্থানীয় পরিচিত শাহনেওয়াজ ভাইয়ের সাহায্যে। বান্দরবান বাজার মসজিদ এরপর আড্ডা গান সাঙ্গুর ব্রিজের উপরে... যেন নীরব মৃত একটা শহর প্রান ফিরে পেয়েছে। নিচে পাহাড়ি নদী,বামে পাহাড়,আকাশে অসংখ্য তারা,আমরা কয়েক যুবক।

ভাসছি চিন্তামুক্ত সুখের সাগরে। আম্মুকে ফোন করে শুনালাম আমাদের আনন্দ। ভাবতেই thrilling লাগছে,কোথায় তুমি আর কোথায় আমি। দেশের এক কোণায় নিভৃত এক শহরে......... ওপাশে গান পাহাড়ের বুকে প্রতিধ্বনি তুলছে- “এখন অনেক রাত,খোলা আকাশের নিচে............... ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.