আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আর্থিক সংকটে সরকার

রাষ্ট্রের ব্যয় পরিচালনায় আর্থিক সীমাবদ্ধতার মধ্যে রয়েছে সরকার। সে কারণে সরকারি প্রতিষ্ঠানের দাবি-দাওয়া মেটাতে পারছে না অর্থ বিভাগ। সম্প্রতি নিত্যপণ্যের বাজার স্থিতিশীল রাখতে সরকারের কাছে ৩০০ কোটি টাকা চেয়ে অর্থ বিভাগে চিঠি দেয় সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবি। তবে আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণ দেখিয়ে টিসিবির দাবি নাকচ করে দিয়েছে অর্থ বিভাগ।

১৭ ডিসেম্বর অর্থ বিভাগ থেকে এ-সংক্রান্ত একটি চিঠি বাণিজ্য সচিবের কাছে পাঠানো হয়।

সংশ্লিষ্ট বিভাগের মনিটরিং সেলের ফিন্যানশিয়াল অ্যানালিস্ট জামালউদ্দিন খান স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়- 'সরকারের আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে প্রস্তাবিত বিষয়ে অর্থ বিভাগের অপারগতা জ্ঞাপন করা হলো। '

জানা গেছে, নির্বাচনী বছর হওয়ায় এমনিতেই অনুন্নয়ন খাতসহ বিভিন্ন খাতে সরকারের ব্যয় বেড়েছে। বিভিন্ন পেশাজীবী ও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীর বর্ধিত বেতন-ভাতা কার্যকর হচ্ছে পর্যায়ক্রমে। পাশাপাশি নির্বাচন অনুষ্ঠান, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ঝুঁকিভাতাসহ বিভিন্ন খাতে অতিরিক্ত অর্থ খরচ করতে হচ্ছে সরকারকে। অন্যদিকে, রাজনৈতিক অস্থিরতায় ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগে অর্থনৈতিক সংকট ঘনীভূত হচ্ছে।

সব মিলিয়ে সরকারের আর্থিক সীমাবদ্ধতার বিষয়টি ধীরে ধীরে স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে টিসিবিকে টাকা না দেওয়ার ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয় অপারগতা প্রকাশ করেছে বলে জানা গেছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (আমদানি) মনোজকুমার রায় বলেন, দ্রব্যমূল্য সহনীয় রাখা সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকারে রয়েছে। এ বিষয়টি উল্লেখ করে টিসিবির জন্য সুদমুক্ত কার্যকর মূলধন বাবদ ওই টাকা চাওয়া হয়েছিল। এ ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয়ে লবিং করেছিলেন বলেও জানান তিনি।

এ ব্যাপারে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলেন, ২০১২-১৩ অর্থবছরে টিসিবিকে ৮০০ কোটি টাকার কাউন্টার গ্যারান্টি দেওয়া হয়েছে। বাজেটের বাইরে এ মুহূর্তে কোনো প্রতিষ্ঠানকে অর্থ দেওয়া সম্ভব নয়। তবে টিসিবি জানিয়েছে, বাজার স্থিতিশীল রাখার লক্ষ্যে সারা বছর নিরবচ্ছিন্নভাবে পণ্য সংগ্রহ করতে হয় তাদের। কিন্তু সরকারের কাউন্টার গ্যারান্টি নিলে ব্যাংক থেকে এলটিআর (লোন-অ্যাগেইনস্ট ট্রাস্ট রিসিপ্ট) গ্রহণের মাধ্যমে পণ্য সংগ্রহ করতে হয়। এলটিআরের ক্ষেত্রে ব্যাংককে ১৪ থেকে ১৬ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দিতে হয়।

এর ফলে পণ্যের মূল্য বেড়ে যায় এবং ভর্তুকি দিতে হয়। সরকারের কাছে নগদ টাকা পেলে, ওই টাকা দিয়ে যে কোনো বিরূপ পরিস্থিতিতে দ্রুত পণ্য সংগ্রহ করে ভোক্তার কাছে অপেক্ষাকৃত কম মূল্যে তা সরবরাহ করা সম্ভব বলে জানায় সংস্থাটি। সংস্থাটি আরও জানায়, গত অর্থবছর (২০১২-১৩) সরকারের কাউন্টার গ্যারান্টির বিপরীতে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে পণ্য কেনায় প্রায় ১৩৯ কোটি টাকা ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। এ টাকা দিয়ে ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ (এলটিআর) পরিশোধ করা হবে। এর আগে ২০১১-১২ অর্থবছরে টিসিবিকে ৭৭ কোটি ৫৮ লাখ টাকা ভর্তুকি দিতে হয়েছে, যার মধ্যে ব্যাংক ঋণের সুদ বাবদ পরিশোধ হয়েছে প্রায় ২৭ কোটি টাকা।

 

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.