আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সরকারী কর্মকর্তাদের বেতন নির্ধারণে স্বর্ণের দাম বিবেচনায় নেয়া দরকার

Only I know what is my goal, My heart is my temple.

সরকার সম্প্রতি সরকারী চাকুরীজীবিদের বেতন ভাতা পুণ:নির্ধারনের জন্য পে এ্যান্ড সার্ভিসেস কমিশন গঠন করেছে। এর আগে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ২০ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা জুলাই ২০১৩ সাল থেকে দেয়ার ঘোষণা ও বাস্তবায়ন করছেন। এ ঘোষণার পর আমি ব্যক্তিগতভাবে দুই হাজার টাকা বেতন বেশি পাচ্ছি। আমার ফেসবুকে অসংখ্য সরকারী চাকুরিজীবি রয়েছেন। সরকারী কর্মকর্তাদের নিয়ে ফেসবুকে বেশ কিছু গ্রুপের সদস্যও আমি।

অবাক হলেও সত্যি-মহার্ঘ্য ভাতা পাওয়ার পর এ বিষয়ে কারও মধ্যে কোন প্রতিক্রিয়াও দেখিনি। খুশি বা অখুশির কোনটিরই নয়। ইতোমধ্যেই সরকারের পে এ্যান্ড সার্ভিসেস কমিশন গঠনের ঘোষণায় সবার মধ্যে একটি প্রশান্তির ভাব লক্ষ্য করেছি। কারণ বর্তমান পে স্কেল ২০০৯ সালের জুলাই মাসে কার্যকর করা হয়েছিল। নিয়ম অনুযায়ী তিন বছর পরপর নতুন পে স্কেল পাওয়ার হকদার সরকারী চাকুরীজীবিরা।

বর্তমান কমিশন গঠন করা হলো-পঞ্চম অর্থ বছরে। তবে পূর্ববর্তী পে স্কেল ঘোষণার ইতিহাস এই রকমের- ১৯৭৭-১৯৮৫-১৯৯১-১৯৯৭-২০০৫-২০০৯। যাই হোক একজন সরকারী কর্মচারীর বেতন কত হওয়া উচিত? এটিই আমার মুল ভাবনার বিষয়। আমি একজন বিসিএস কর্মকর্তার এন্টি লেভেলে পে স্কেলের ৯ম গ্রেডে বেতন কত হওয়া উচিত সে বিষয়টি নিয়ে একটি চিন্তা করেছি। এ গ্রেডের বর্তমান বেতন ১১০০০/= মাত্র।



আজকের পত্র পত্রিকায় দেখেছি- ২০১৩ সালে জীবন যাত্রার ব্যয় বেড়েছে শতকরা ১১ ভাগ। এটি কনজিউমার এসোসিয়েশন (ক্যাব) এর দেয়া তথ্য। সাংবাদিকতা করা কালে আমি নিজেও এই ক্যাবের সঙ্গে কাজ করেছি। আমি জানি এর তথ্য উপাত্ত কতটা সঠিক। আর এ কারণেই এর তথ্য বিশ্লেষন করছি।

ক্যাব এর দেয়া হিসাবে ২০১২ সালে জীবন যাত্রার ব্যয় ৬.৪২ ভাগ, ২০১১ সালে ১১.৯৬ ভাগ এবং ২০১০ সালে ১৬.১০ ভাগ বেড়েছিল। এ হিসেবে একজন ব্যক্তির ২০০৯ সালে ১০০ টাকায় জীবন ধারণ সম্ভব হলে ২০১০ সালে তার ১১৬/= টাকা প্রয়োজন হয়েছে। ২০১৩ সালের পর তা দাড়িয়েছে ১৫৩.৫৩ টাকা। এটি বিবেচনা করে বেসরকারী চাকুরিতে বেতন বেড়েছে। মজার কথা হলো- এসময় সরকারী চাকুরীজীবিদের বেতন বাড়েনি।



ধরে নেই, সরকার বাহাদুর সদাশয় হয়ে সরকারী চাকুরীজীবিদের জন্য ২০১৪ সালের পর তিন বছর অন্তে ২০১৭ সালে পুনরায় পে স্কেল দেবেন। তাহলে আগামী ৬ বছরের জন্য একজন এন্ট্রি লেভেলের বিসিএস সরকারী কর্মকর্তার কত বেতন হওয়া যুক্তিযুক্ত? ক্যাবের হিসাবে ৩ বছরে ১০০ টাকায় ৫৩ ভাগ ব্যয় বেড়েছে। তাহলে ৬ বছরে জীবন যাত্রার ব্যয় বাড়বে ১০৬ ভাগ। অর্থ্যাৎ কেউ ২০০৯ সালে ১০০/= টাকায় যেভাবে জীবন ধারণ করেছেন, ২০১৭ সাল পর্যন্ত গড়ে তার ওই মান রাখতে গেলে ২০৬/= টাকা ব্যয় করতে হবে।

তাহলে ১১০০০/= টাকার স্কেল ঘোষণা হতে যাওয়া পে স্কেলে কত হওয়া যুক্তিযুক্ত।

আমি ঐকিক নিয়ম করে দেখেছি, জীবন যাত্রার ব্যয় হিসাব করলে এর পরিমাণ হওয়া উচিত- ২২,৬৬০/= টাকা। একজন বিসিএস পাস করা কোন কর্মকর্তা এন্ট্রি লেভেলে এ পরিমাণ টাকা পেলেই খুশি হবেন বলে আমার বিশ্বাস।

তবে আমার মতে, বেতন নির্ধারণ করা উচিত স্বর্ণের দামের ভিত্তিতে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরপর প্রথম শ্রেণির একজন কর্মকর্তা এন্ট্রি লেভেলে বেতন ভাতা, বাড়িভাড়াসহ সবমিলিয়ে প্রতিমাসে যে অর্থ পেতেন তা দিয়ে একভরি স্বর্ণ কিনতে পারতেন। বর্তমানে ১১০০০/= টাকা স্কেলের একজন কর্মকর্তা সর্বসাকুল্যে ১৬৩০০/-১৭০০০/ টাকা পান।

অথচ বর্তমানে স্বর্ণের প্রতিভরি ৫০,০০০/= টাকারও বেশি। এখন পূর্বের চিন্তা করা পুরাই আকাশ কুসুম কল্পনা। কারণ ২০০৯ সালের বেতন স্কেলে মন্ত্রী পরিষদ সচিবের বেতনই ৪০,০০০/= টাকা (নির্ধারিত)।
বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের একজন কনিষ্ঠ সদস্য হিসেবে বর্তমান ‘পে অ্যান্ড সার্ভিসেস কমিশন’এর কাছে আমার নিবেদন থাকবে- আমাদের বেতন নির্ধারণে স্বর্ণের দাম বিবেচনায় নিলেই আমরা খুব খুশী হবো।



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.