আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কিচ্ছু দেখিনা, কিচ্ছু শুনিনা, কিচ্ছু বলিনা (নরপশুদের রুখতে হবে.........দিল্লী থেকে এখন তাদের আস্তানা টাঙ্গাইলে)

নরপশুদের রুখতে হবে.........দিল্লী থেকে এখন তাদের আস্তানা টাঙ্গাইলে.........তবে আমরা মহাত্মা গান্ধির বানর `কিচ্ছু দেখিনা, কিচ্ছু শুনিনা, কিচ্ছু বলিনা'Õ দৈনিক সমকালের শীর্ষ শিরোনামে চোখ আটকে যায়...........প্রতিবেদনটি আপনাদের জন্য তুলে দেয়া হল: নরপশুদের রুখতে হবে: টাঙ্গাইলে গণধর্ষণের শিকার মেয়েটি এখন মানসিক ভারসাম্যহীন টানা চার দিন গণধর্ষণের শিকার হওয়ার পর চিকিৎসা অবহেলায় কেটেছে ২১ দিন। এর মধ্যে বাবা তাড়িয়ে দিয়েছে বাড়ি থেকে। মামাবাড়িতে আশ্রয় নিতে গেলে সেখানেও জায়গা হয়নি সমাজের চাপে। অবশেষে সোমবার রাতে টাঙ্গাইলের মধুপুরের সেই কিশোরী স্কুলছাত্রীকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার মা ও বড় ভাই। প্রায় ১০ ঘণ্টা বারান্দায় থাকার পর হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) নতুন বছরের প্রথম রোগী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হলো তার নাম।

এখন সে মানসিক ভারসাম্যহীন। ইনজেকশন দিয়েও তাকে ঘুম পাড়াতে পারছেন না চিকিৎসকরা। পুরুষ লোক আর মোবাইল ফোন দেখলেই চিৎকার করে ওঠে সে। ওসিসির কো-অর্ডিনেটর ডা. বিলকিস বেগম সমকালকে বলেন, মেয়েটি মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছে। হাইপাওয়ার ঘুমের ওষুধ দিয়েও তাকে ঘুম পাড়ানো যাচ্ছে না।

এ কারণে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত তার চিকিৎসা পুরোপুরি শুরু করা যায়নি। তিনি আরও বলেন, মেয়েটি শারীরিকভাবে যতটা সংকটে রয়েছে, তার চেয়ে অনেক বেশি সংকটাপন্ন মানসিকভাবে। চিকিৎসায় বিলম্ব হওয়ার কারণে তার অবস্থার অবনতি ঘটেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতারের পর গতকাল মঙ্গলবার টাঙ্গাইল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ বুধবার আসামিদের রিমান্ড আবেদনের শুনানি হবে বলে জানিয়েছে স্থানীয় থানা পুলিশ।

পৈশাচিক এ ঘটনার ২১ দিন পর গত সোমবার পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেছেন মেয়েটির বড় ভাই। ওই দিনই বিষয়টি সমকালে গুরুত্বসহকারে ছাপা হয়। এদিকে গতকাল ওই স্কুলছাত্রীকে দেখতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইকবাল খান চৌধুরী ও মহিলা আইনজীবী সমিতির নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট সালমা আলী। তিনি সমকালকে বলেন, মেয়েটির অবস্থা সংকটাপন্ন। মেয়েটিকে সব ধরনের আইনি সহায়তা দেবেন তারা।

সালমা আলী বলেন, সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তুলেই নারী নির্যাতনকারী নরপশুদের রুখতে হবে। এ ক্ষেত্রে সবাইকে উদ্যোগী হতে হবে। দিলি্লতে ধর্ষণের শিকার এক মেডিকেল ছাত্রীর মৃত্যুর পর সেখানে তীব্র আন্দোলন গড়ে উঠেছে। প্রায় একই সময়ে সংঘটিত টাঙ্গাইলের ঘটনাটি নিয়ে সমকাল কথা বলে নারীনেত্রী ও বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে। তারা সবাই বলেন, দিলি্লর ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ দেশেও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।

টাঙ্গাইলের মধুপুরে কিশোরী ধর্ষণের সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর। গতকাল পরমাণু শক্তি কমিশনে বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক সভা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'গণমাধ্যমে প্রকাশের পর এ ঘটনা দেশের সবার নজরে আসে। প্রথমে ভিকটিমের পরিবার এ ব্যাপারে মুখ খোলেনি। যথাযথ তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের শনাক্ত করে শাস্তি দেওয়া হবে। ' গতকাল ওসিসিতে কথা হয় মেয়েটির মা ও বড় ভাইয়ের সঙ্গে।

তার অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে কেঁদে ওঠেন মা। কী বলবেন তিনি? উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে এসেছেন মেয়েকে। সেখানেও তিনি পাশে পাননি মেয়ের জন্মদাতা বাবাকে। আক্ষেপ ঝরে পড়ে কণ্ঠে। মেয়ের সুস্থতাই এখন তার কাম্য।

পাশাপাশি দাবি, তার মেয়েকে নির্যাতনকারী মানুষরূপী দানবদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার। মেয়েটির বড় ভাই সমকালের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, সমাজের ভয়ে প্রথমে তারাই চেয়েছিলেন ঘটনাটি লুকাতে। 'বোন ধর্ষিতা'_ এ অপবাদ তারা সইবেন কেমন করে! এ কারণেই তারা মামলা করেননি, এমনকি হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসার ব্যবস্থাও গ্রহণ করেননি। তিনি ঘটনার বিবরণ দিয়ে বলেন, বান্ধবীর বিয়ের কথা বলে গত ৬ ডিসেম্বর ইভা নামে এক মেয়ে তার বোনকে গালা গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে মধুপুর নিয়ে যায়। মধুপুরের নুরুজ্জামান ওরফে গেদা ভাই নামে পরিচিত এক লোকের বাড়িতে নিয়ে চার-পাঁচ যুবক টানা চার দিন তাকে ধর্ষণ করে এবং মোবাইল ফোনে নগ্ন ছবি ধারণ করে।

১০ ডিসেম্বর মেয়েটিকে অচেতন অবস্থায় এক মাইল দূরে রসুলপুর রেললাইনে ফেলে যায়। প্রতিবেশীদের কাছে খবর পেয়ে রেললাইন থেকে উদ্ধার করে তাকে প্রথমে বাসায় নিয়ে যাওয়া হয়। ওই দিন বাড়িতে ছিলেন না দাবি করে মেয়েটির ভাই বলেন, "বোনের শারীরিক অবস্থা দেখে আমার মা দুই দিন পর তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। কিন্তু ডাক্তার বোনকে দেখে ভর্তির যে কাগজ দেন, তাতে 'পুলিশ কেস' সিল দেখে মা ভয় পেয়ে যান। লোকজন জেনে যাবে_ এই ভয়ে ওই হাসপাতালে ভর্তি না করে বাসায় নিয়ে যান।

" তিনি আরও বলেন, 'বাসায় নেওয়ার পর বাবা এই খবর জানতে পান। এতে বাবা ক্ষিপ্ত হয়ে মা ও বোনকে বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। তারা বেরিয়ে না গেলে ১৪ ডিসেম্বর তাদের বাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়। মা-বোনকে নিয়ে দুই মাইল দূরে এলেঙ্গায় মামাবাড়িতে আশ্রয় নেন। তত দিনে বোনের অবস্থার অবনতি হচ্ছিল।

পুরুষ দেখলেই চিৎকার করে উঠত। এ ছাড়া মোবাইল ফোন হাতে কাউকে দেখলেও উন্মাদের মতো আচরণ করত। ' ধর্ষকরা তার বোনের নগ্ন ছবি মোবাইল ফোনে ধারণ করেছিল উল্লেখ করে বড় ভাই বলেন, এ কারণেই সে মোবাইল হাতে কাউকে দেখলেই চিৎকার করে বলত_ 'ওরা আমার ছবি দেখছে। ' মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে জানা যায়, মাসহ মেয়েটিকে তার বাবা বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার পর মামাবাড়িতে আশ্রয় নিলেও তত দিনে খবরটি সেখানেও ছড়িয়ে পড়ে। মেয়েটির চাচাতো ভাইসহ আত্মীয়স্বজনও ঘটনার জন্য মেয়েটিকে দায়ী করে বাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হবে না বলে মামার বাড়িতে খবর পাঠায়।

তত দিনে এ ঘটনা জেনে যায় গ্রামের লোকজনও। গ্রামের প্রভাবশালীদের অনেকে জানিয়ে দেয়, মা-মেয়েকে গ্রামে থাকতে দেওয়া হবে না। নির্দেশের অন্যথা হলে তাদের পুরো পরিবারকে 'একঘরে' করে রাখা হবে। এরপর মা ও মেয়েটি বিতাড়িত হয় সেখান থেকেও। এতে মেয়েটির অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে।

একপর্যায়ে মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে। ২২ ডিসেম্বর অনেকটা বাধ্য হয়ে তাকে আবার টাঙ্গাইল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তখন চিকিৎসকরা উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দেন। কিন্তু আর্থিক অনটনের কারণে ঢাকায় পাঠানোর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেননি অসহায় মা। এরপর ঘটনাটি সাংবাদিকরা জানতে পেরে স্থানীয় মানবাধিকার কর্মী ও পুলিশ প্রশাসনে জানান।

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি আবদুর রহিম জানান, মামলা দায়েরের আগেই টাঙ্গাইল গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ধর্ষণে সহায়তাকারী মেয়েটির বান্ধবী ইভা, ধর্ষক এসএম নুরুজ্জামান ওরফে গেদা ভাই, মধুপুর পৌরসভা এলাকার সুপ্তি কম্পিউটারের মালিক মনিরুজ্জামান মনি, কর্মচারী হারুন ও শাহজাহানকে গ্রেফতার করে। একই সময় মনির দোকান থেকে একটি কম্পিউটারও জব্দ করা হয়েছে। ওই কম্পিউটারে মেয়েটির নগ্ন ভিডিও ফুটেজ রয়েছে বলে পুলিশ ধারণা করছে। গ্রেফতারের পর ইভা মেয়েটিকে বাসা থেকে ডেকে নেওয়ার কথা স্বীকার করে। একই সময় গ্রেফতারকৃতরা ওই স্কুলছাত্রীকে বাসায় আটকে রেখে ধর্ষণ করেছিল বলেও ইভা পুলিশকে জানায়।

গতকাল আদালতের নির্দেশে গ্রেফতারকৃতদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। আজ বুধবার তাদের পুনরায় আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হবে বলেও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মধুপুর থানার ওসি মজিবর রহমান জানিয়েছেন। টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের গাইনি চিকিৎসক জাকিয়া রশিদ জানান, পরীক্ষায় মেয়েটিকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তার ওপর অমানুষিক নির্যাতন হওয়ায় সে মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়েছে। পাদটীকা: দিল্লীর পথে টাঙ্গাইলের মেয়ে...আমরা চুপচাপ।

দিল্লীর তাপ ঢাকায় ছুয়েছে........সমবেদনায় পুড়েছি কিন্তু ............এই কিন্তুর জবাব আমি, আপনি, আপনাদের কাছে? ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।