আগামী ফেব্রুয়ারি থেকেই চতুর্থ উপজেলা নির্বাচন শুরু করতে চাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। আগামী সপ্তাহের শুরুতে প্রথম দফায় অর্ধশত উপজেলার নির্বাচনের তফসিল হতে পারে। তবে এবার সারা দেশে কয়েক দফায় ভোট করার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির। জানা গেছে, ফেব্রুয়ারিতে ১১৫, মার্চে ২২৩, এপ্রিলে ৩৫, মেতে ৮৫ ও জুনে ১৮টি উপজেলার মেয়াদ উত্তীর্ণ হচ্ছে। বাকিগুলো জুলাই থেকে সেপ্টেম্বরে উত্তীর্ণ হবে।
গতকাল কমিশন সভা শেষে একজন নির্বাচন কমিশনার বলেন, রবিবারই কমিশন সভা শেষে প্রথম দফা নির্বাচনের তফসিল দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। পর্যায়ক্রমে মেয়াদোত্তীর্ণ বিবেচনায় উপজেলাগুলোর নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে। তিনি জানান, ফেব্রুয়ারির তৃতীয় সপ্তাহে যেসব উপজেলার মেয়াদ উত্তীর্ণ হতে যাচ্ছে এমন ৪০টি উপজেলার ভোটার তালিকা প্রস্তুতও রয়েছে। পর্যায়ক্রমে আনুষঙ্গিক কাজগুলো গুছিয়ে নেওয়া হবে। দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে নিরাপত্তা জোরদারে এবার একাধিক দিনে বা অন্তত সাত দিনে ভোট করার পরিকল্পনার কথা জানান এই নির্বাচন কমিশনার।
ইসি কর্মকর্তারা জানান, সাংবিধানিকভাবে স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচন করার দায়িত্ব ইসির না হলেও স্থানীয় সরকারের অনুরোধেই এ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করে ইসি। ইসি প্রস্তুত থাকলেও সব কিছুই স্থানীয় সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করছে এখন। এর আগে ২০০৯ সালের ২২ জানুয়ারি একযোগে একই দিনে ভোট করে এ টি এম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন ইসি।
জানা গেছে, উপজেলা নির্বাচন নিয়ে নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বরাবর নোটও লিখেছেন। নোটে তিনি লিখেছেন- আইনানুযায়ী উপজেলা পরিষদের তিনটি পদে (চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান) নির্বাচনের লক্ষ্যে সময়সূচিসংবলিত তফসিল ঘোষণা করা অপরিহার্য।
এ নির্বাচন কমিশনার তাতে জানান, বর্তমান নির্বাচন কমিশন ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে দায়িত্ব নেওয়ার পর রাষ্ট্রপতি নির্বাচন থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন পর্যন্ত অনেক নির্বাচন সুসম্পন্ন করেছে বটে। কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে কোনো নির্বাচন অনুষ্ঠানের পদক্ষেপ নেয়নি। এ তিন পদে নির্বাচনের ব্যাপারে ইসির বিভিন্ন বৈঠকে আলোচনা করা বা কোনো সভার কর্মসূচিভুক্ত না করায় কার্যবিবরণীভুক্তও করা হয়নি। উপজেলা পরিষদ নির্বাচন আইন অনুযায়ী, এ নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব ইসির। এ আইনানুযায়ী এর মেয়াদ প্রথম সভার তারিখ থেকে পাঁচ বছর এবং ১৭ ধারা অনুসারে পরিষদের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ববর্তী ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হবে।
আগামী ফেব্রুয়ারিতেই মেয়াদোত্তীর্ণ হবে শতাধিক উপজেলা পরিষদ। ১৯ ফেব্রুয়ারিই ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার মেয়াদকাল শেষ হতে যাচ্ছে। এ তিন পদে উপজেলা নির্বাচনের লক্ষ্যে সময়সূচিসংবলিত তফসিল ঘোষণা করা অপরিহার্য বলে নোটে উল্লেখ করেন নির্বাচন কমিশনার মোবারক। ইসি সচিবালয় জানায়, তফসিল ঘোষণার আগে প্রস্তুতিমূলক কাজ সম্পন্ন করতে ৪৫ দিন লাগবে। তফসিল ঘোষণা ১ দিন, মনোনয়নপত্র দাখিল ১৫ দিন, বাছাই ২ দিন, বাছাইয়ের পর আপিল ৩ দিন, আপিল নিষ্পত্তি ৩ দিন, প্রত্যাহার ১ দিন, প্রচারণা ও ব্যালট পেপার মুদ্রণ ২৭ দিন এবং ভোটের জন্য ১ দিন লাগবে।
দেড় যুগ পর তৃতীয়বারের মতো উপজেলা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০০৯ সালে। এর আগে ১৯৮৫ সালে প্রথম ও ১৯৯০ সালে দ্বিতীয় উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় একাধিক দিনে উপজেলা নির্বাচন হলেও সেবারই প্রথম একযোগে সারা দেশের উপজেলাগুলোর নির্বাচন হয়। মালামালও প্রস্তুত : দশম জাতীয় সংসদ ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের জন্য একই সঙ্গে ৬ লাখ ৪৮ হাজার স্ট্যাম্প প্যাড, ৯০ হাজার ব্রাশ সিল, ৬ লাখ ৪৮ হাজার অফিশিয়াল সিল, ১১ লাখ ২৩ হাজার মার্কিং সিল ও ১৭ হাজার ৩০০ কেজি সিলগালা (লাল রংয়ের) প্রয়োজন হবে। গত মাসে উপজেলা নির্বাচনের সব মালামাল নির্বাচন কমিশনে এসেছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।