আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আইসিটি সংশ্লিষ্ট ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পণা

"ধর্মীয় কুসংস্কারে যারা আবদ্ধ তারা সব সময়েই দরিদ্র থাকে। "

মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন
“তথ্য-প্রযুক্তি” -আধুনিক বিশ্বে এই শব্দটির প্রয়োগ সর্বক্ষেত্রে অনেক দূর এগিয়েছে। অধিকতর স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাসহ সার্বিক কার্যক্রমকে গতিশীল তথা সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে এর কোন বিকল্প নাই। “তথ্য-প্রযুক্তি” পরিণত হয়েছে একটি দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোর মেরুদন্ড হিসেবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বর্তমান বিশ্বে উন্নয়নের অন্যতম উপাদান হিসেবে পরিগণিত এবং জ্ঞানভিত্তিক সমাজের মূল চালিকা শক্তি এটা অস্বীকার করার কোন পথ নাই।

যেহেতু অন্যান্য আধুনিক প্রযুক্তির তুলনায় আইসিটির ক্ষেত্রে সম্পদের প্রয়োজনীয়তা অনেক কম এবং মানব সমাজের ভবিষ্যত নিবিড়ভাবে আইসিটির সাথে সম্পর্কযুক্ত, তাই দেশের কর্মসূচিতে এ প্রযুক্তিকে সম্পৃক্ত করা এবং বর্তমান পশ্চাদপদতা কাটিয়ে আইসিটিতে অগ্রগামী দেশ হিসেবে দ্রুত উত্তরণ ঘটাতে দৃঢ় কৌশল অবলম্বন করতে হবে।

দেশের সীমিত প্রাকৃতিক সম্পদ এবং বহুল মানব সম্পদের কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সবচেয়ে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সম্প্রসারণ ও বহুমুখী ব্যবহারের মাধ্যমে একটি স্বচ্ছ, দায়বদ্ধ ও জবাবদিহিতামূলক সরকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সরকারের কর্ম-প্রক্রিয়া, ব্যবসা-বাণিজ্য এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিভিত্তিক সেবা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে আইসিটি সংশ্লিষ্ট নিম্নোক্ত ভবিষ্যত কর্মপরিকল্পণা গ্রহণ করার প্রস্তাব পেশ করছিঃ

০১। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) সমৃদ্ধ আধুনিক বাংলাদেশ বিনির্মানের লক্ষ্যে আইসিটি বিশেষজ্ঞগণের সমন্বয়ে আইসিটি সংক্রান্ত ভবিষ্যত গৃহীতব্য উন্নয়ন কার্যক্রমের মাস্টারপ্লান (দীর্ঘমেয়াদী ধারাবাহিক কর্মপরিকল্পনা) গ্রহণ ও তা আইন আকারে পাশ করণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

০২।

দেশের আইসিটি সংক্রান্ত উন্নয়ন কার্যক্রম বজায় রাখতে উপজেলা ও জেলা পর্যায় থেকে শুরু করে সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগ/সংস্থাসমূহে অবশ্যই আইসিটি পেশাজীবী দ্বারা সজ্জিত আইসিটি সেল স্থাপন করতে হবে এবং আইসিটি ক্যাডার সার্ভিস প্রতিষ্ঠা করণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

০৩। দেশের সকল বন্দরসমূহে (বিমান/বাস/নৌ) সকলের জন্য ফ্রি ওয়্যারলেস ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করতে হবে এবং ইন্টারনেট ফি কমানোসহ দেশে অভ্যন্তরীন ইন্টারনেট এর গতি সর্বনিম্ন ১ এমবিপিএস (MBPS) করণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

০৪। দেশের দক্ষ ও বেকার জনগোষ্ঠির কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে জনশক্তিতে পরিণত করতে ফ্রিল্যান্স আউটসোর্সিং হতে পারে একটি সহায়ক নিয়ামক ও অর্থনৈতিক মুক্তির উপায়।

সেবিবেচনায় ফ্রিল্যান্সারদের ক্ষেত্রে বর্তমান আর্থিক লেনদেনের সীমাবদ্ধতা দূর করণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

০৫। বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি), বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন কোম্পানী লিমিটেড (বিটিসিএল), বাংলাদেশ সাবমেরিন কেবল কোম্পানী লিমিটেড (বিএসসিসিএল), টেলিফোন শিল্প সংস্থা (টিএসএস) ও টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড কে আইসিটি মন্ত্রণালয়ভুক্ত করণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

০৬। সরকারের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান যদি তাদের অভ্যন্তরীন প্রয়োজনে আইসিটি সংশ্লিষ্ট কোন উন্নয়ন (সফটওয়ার/হার্ডওয়ার সংশ্লিষ্ট) করে তবে সে প্রতিষ্ঠান হয়তো তাদের নিজস্ব গন্ডির মধ্যে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে, কিন্তু সে প্রতিষ্ঠানের সাথে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের আন্ত-যোগাযোগ দূরহ হবে বইকি।

এমনকি প্রতিটি প্রতিষ্ঠান যদি পৃথক-পৃথক ভাবে নিজস্ব ধ্যান-ধারনায় আইসিটি সংশ্লিষ্ট কোন উন্নয়ন কার্যক্রম পরিচালনা করে তবে সরকারী অর্থের অপচয় হওয়াটাও অস্বাভাবিক কিছু নয়। সেবিবেচনায়, আইসিটি সংক্রান্ত সকল উন্নয়ন কার্যক্রম কেবলমাত্র আইসিটি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমেই সম্পাদন করণের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

[লেখকঃ মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম হোসেন, প্রোগ্রামার, আইএমইডি, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়, ঢাকা। ই-মেইলঃ ]

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.