আমার চোখে ঠোটে গালে তুমি লেগে আছো !!
প্রথম পর্ব
মিলি প্রথমে ভেবেছিল ট্রেন মানে হল এক গাদা লোক একসাথে যাওয়া আসা করা । আসলে মিলির খুব একটা ট্রেন জার্নি করাও হয় নি । অনেক আগে একবার বাবার সাথে ট্রেনে উঠেছিল শোভন শ্রেনীর বগিতে । একটা লম্বা মত সিটে চারপাচ জন চাপাচাপি করে বসতে হয়েছিল । মিলির সেটা মোটেই ভাল লাগে নি ।
তাও সে কবেকার কথা ।
কিন্তু মিলি যখন প্রথমে কেবিন টাতে ঢুকলো ওর খুবই পছন্দ হল । অত বড় বগি তো নয় । ছোট্ট একটা কামরার মত । দুপাশে দুটো লম্বা মত সিট ।
তিন জন করে বসতে পারে । সাথে একটা বাধরুমও আছে । আগের বার যখন উঠেছিল পুরো বগির জন্য মাত্র দুইটা বাধরুম । বাধরুমের জন্যও লাইন ধরতে হয় । এখানে নিশ্চই সে রকম কিছু হবে না ।
মিলির মনে হল পুরো কামরাটা ওদের হলে ভাল হত । জার্নির ছসাত ঘন্টা আবীরের সাথে থাকা যেত । কেবল ওরা দুজনে আর কেউ না ! কিন্তু মিলি চাইলেই তো আর হবে না । মানুষতো উঠবেই ।
একটু পরেই ট্রেনের বাশি শুনা গেল ।
ট্রেনটা এখনই ছেড়ে দিবে । মিলির মনটা একটু অস্থির হয়ে উঠল ।
আবীর কোথায় ?
আবীর ওকে কামড়ায় তুলে দিয়ে আবার বাইরে গেছে । মিলির একবার মনে হল এই সময় বাইরে যাওয়ার কি দরকার ? জানালা দিয়ে বাইরে তাকালো ।
কোথাও নাই !
ঠিক তখনই ট্রেনটা একটু নড়ে উঠল ।
তারপর চলতে শুরু করলো আস্তে আস্তে ।
আবীর কে এখনও দেখা যাচ্ছে না । মিলির বুকের ভিতর আরো জোরে ধরফর শুরু হয়েছে ।
কোথায় গেল মানুষটা ?
নাহ ! আর কামড়ায় বসে থাকা যাবে না । মিলি জানলা থেকে মুখ সরিয়ে দরজার দিকে রওনা দিল ।
ট্রেন ততক্ষনে বেশ গতিতে চলতে শুরু করেছে । মিলি দরজা খুলতে যাবে ঠিক তখনই আবীর দরজা খুলে ভিতরে ঢুকলো । মিলির হঠাত্ করেই এতো রাগ হল ! নিজেকে আর ধরে রাখতে পারল না । আবীরকে খানিকটা কড়া করেই বলল
-কোথায় ছিলেন এতোক্ষন ?
নিজের কন্ঠস্বর মিলি নিজেই চমকে উঠল । আবীরও খানিকটা অবাক হল ।
মিলি কখনও তার সাথে এমন করে কথা বলে না । আবীর বলল
-আমিতো পাশেই ছিলাম । কেন কি হয়েছে ?
মিলি ততক্ষনে নিজেকে সামলে নিয়েছে । বলল
-না মানে ট্রেন চলতে শুরু করেছিল তো ...
আবীর বলল
-ভয় পেয়েছ ? আমি ট্রেন মিস করি কিনা এই ভয়ে !
তারপর একটু হাসলো !!
মিলি খানিক ক্ষন মুর্তির মত তাকিয়ে রইল আবীরের দিকে । আবীরের মুখটা ওর মনের ভিতর এক অদ্ভুদ অনুভূতির উদ্ভব ঘটিয়েছে ! একটু যেন খুশি হয়েছে মিলির অস্থিরতা দেখে !
মিলির মনে হল আবীর যদি সারা জীবন এভাবে হাসি মুখে থাকে ও তাহলে সারা জীবনই আবীরের দিকে একভাবে তাকিয়ে থাকতে পারবে ।
ইস কত দিন পর আবীরকে হাসতে দেখল ! এর আগে কোন দিন দেখেছে কিনা মিলি মনেও করতে পারল না ।
আজ হলটা কি মিলির ? পদে পদে কেবল নতুন ভাবে সব কিছু আবিস্কার করছে । সব কিছু কেমন নতুন নতুন লাগছে ।
সকালবেলা আবীরের ঐ রকম ভাবে কথা বলা এখন এই ভাবে হাসা !
বিকেল বেলা যখন মিলি তৈরি হচ্ছিল তখনও আবীরের আচরন অন্য দিনের মত ছিল না । একটু যেন ভিন্নতা ছিল ।
আবীর মিলির পছন্দের শার্ট টাই পরেছে । মিলি অবশ্য কিছু বলে নি ! আবীর হাত মুখ ধোয়ার জন্য বাধরুমে গিয়ে ছিল । মিলি কেবল শার্ট টা বিছানার উপর বিছিয়ে রাখলো । এমন জায়গায় রাখলো যেন বাথরুম থেকে বের হয়েই আবীরের চোখে পড়ে !
মিলি আর ও ঘরে থাকে নি ! ঘর থেকে বের হয়ে গেছিল । রান্না ঘরে এমনি টুকটাক কাজ করছিল ।
যদিও ওর চোখ ছিল শোবার ঘরের দরজার দিকে । কখন আবীর বের হয়ে আসে !!
কিছুক্ষন পরেই আবীর বের হয়ে এল ! আবীরের গায়ে আকাশী রংয়ের শার্ট ! মিলির যে কি ভাল লাগলো ! কিছু বলতেও হল না । স্টেশন আসার পুরো রাস্তাটা মিলি কেবল আবীরের দিকেই তাকিয়ে ছিল ! কেবল যখন আবীর ওর দিকে তাকাচ্ছিল মিলি খানিকটা লজ্জায় চোখ সরিয়ে নিচ্ছিল !!
-জানলাটা বন্ধ করে দাও ! ঠান্ড আসবে !
মিলি কেবিনের জানলা টা বন্ধ করে দিল ! আবীক ওর সামনেই বসে আছে । মিলির খানিকটা ইচ্ছা হল আবীরের পাশে গিয়ে বসতে ! অবশ্য একটু পরে এমনিতেই বসতে হবে । কেবিনে যখন অন্য লোক উঠবে তখন নিশ্চই আবীরের পাশে গিয়েই বসবে ! কিন্তু যতক্ষন কোন লোক না আসে ততক্ষন কিভাবে আবীরের পাশে গিয়ে বসা যায় ? মিলি ভাবতে থাকে !
এই তো পাওয়া গেছে ।
আবীরের পাশের জানলাটা এখনও খোলা । এমন কি হতে পারে না যে মিলি জানলাটা বন্ধ করে দিল তারপর খুব স্বাভাবিক ভাবে আবীরের পাশে গিয়ে বসলো ?
হতে পারে ?
মিলি একটু ইতস্তত করে উঠে দাড়ালো ! তারপর জানলাটা বন্ধ করে টুপ করে বসে পড়ল আবীরের পাশে !
-কিছু খাবে ?
মিলি হাসলো একটু ! বলল
-না এখন না !
মিলি আর একটু এগিয়ে যায় আবীরের দিকে ! মুখে একটু অস্বস্থি অবশ্য লেগে আছে ! আবীরের কাছে ধরা পরে গেলে লজ্জার সীমা থাকবে না !
অবশ্য আবীরের লক্ষ্য এখন ল্যাপ্টপের দিকে ! মিলি হঠাৎ বলল
-ট্রেন সামনে কোন স্টেশনে থামবে ?
-কি জানি ? কেন ? কিছু লাগবে ?
-না মানে অন্য কোন যাত্রী উঠবে না এখানে ?
-থামবে হয়তো কোথাও ! তবে এটা রিজার্ভ করা ! এখানে আর কেউ উঠবে না ।
-তাই ?
মিলির আসলেই খুব ভাল লাগল কথাটা শুনে । পুরোটা পথ কেবল ওরা দুজন ! মিলির ভাবতেই ভাল লাগছে !
ওদের বাংলোটা একেবারে টিলার উপরে । পুরো টিলাটায় কেবল সবুজের ছড়াছড়ি ।
জোছনার আলো পড়ে সবুজ গাছের উপর কেমন একটা অদ্ভুদ রং তৈরি করেছে । মিলি কেবল দুরে তাকিয়ে থাকে । চারিদিকে এতো সৌন্দর্য তবুও যেন ওকে এসব কিছুই স্পর্শ করে না ।
মিলি জানালা দিয়ে আর একবার উকি দিল । আবীর ল্যাপটপে কি যেন করছে ।
মিলির খুব ইচ্ছা করে আবীরকে ডেকে আনতে । এই চমত্কার পরিবেশে আবীরের সাথে বসে বসে গল্প করতে ।
কিংবা নিচে আঁকা বাঁকা পথটা বেশ ভালই বোঝা যাচ্ছে । ঐ পথ ধরেও হাটা যায় !
আচ্ছা এমন কি হতে পারে না, মিলি এখন সোজা আবীরের ঘরে যাবে । তারপর ল্যাপটপটা বন্ধ করে দেবে ।
আবীর খানিকটা রাগ করবে । চোখ গরম করবে । এটা দেখে মিলি বলবে চোখ গরম করে লাভ নাই । বাইরে কি চমত্কার জোঁছনা উঠেছে আর তুমি নিজের বউকে একা রেখে এখানে ল্যাপটপ টিপছো । এখনই এসো আমার সাথে ।
তারপর মিলি আবীরের হাত ধরে বাইরে নিয়ে আসবে । তারপর দুজন বারান্দায় দাড়িয়ে জোঁছনা দেখবে !
কিন্তু সেই বারান্দায় মিলি একা দাড়িয়ে । বাইরে তাকিয়ে আছে শূন্য দৃষ্টিতে । বাইরের কিছুই যেন মিলিকে স্পর্শ করছে না ।
-একা একা দাড়িয়ে কি করছো ?
আবীরের কথায় মিলি খানিকটা চমকে ওঠে ।
আবীর ঠিক ওর পাশের দাড়িয়ে । আসলে এমন তন্ময় হয়ে আবীরের কথা ভাবছিল যে বুঝতেই পারে নি আবীর কখন এসে পাশে দাড়িয়েছে । মিলি আবীরের কথার উত্তর না দিয়ে দাড়িয়েই রইল । আবীর বলল
-ঐ আঁকা বাঁকা পথটা সুন্দর লাগছে না ?
আবীর হাত দিয়ে সামনের দিকে দেখাল । মিলির এখন সামনের দিকেই তাকানো উচিত্ কিন্তু মিলি তাকিয়ে আছে আবীরের দিকে ।
কথা বলার সময় আবীরের কন্ঠ যেন একটু কাঁপছিল । সকাল বেলাতেও আবীর যখন ওকে এখানে আসার কথা বলছিল তখনও আবীরের কন্ঠস্বরটা এমন ছিল । যেন কিছুটা অস্বস্থি লাগছে ।
মিলির ভাবতে অবাক লাগে মানুষ নিজের বউয়ের সাথে কথা বলতে এতো অস্বস্থি বোধ কেন করবে ?
মিলি আবীরের দিকে তাকিয়েই বলল
-হুম ।
মিলির আরো কিছু বলতে ইচ্ছা করল ।
কিন্তু বলতে পারল না । আবীর বলল
-যাবে ওখানে ?
মিলির প্রথমে মনে হল হয়তো ও ভুল শুনলো । আবীর কি সত্যিই ওকে কথাটা বলল ? আবীর আবার বলল
-চল ওখান থেকে হেটে আসি ।
-চলুন ।
মিলির হার্টবীট আবার বেড়ে গেছে ।
আজ কি হচ্ছে ওর সাথে ? কেবলই অপ্রত্যাসিত আনন্দ ওকে বারবার ছুয়ে যাচ্ছে ! আবীর বলল
-বাইরে একটু ঠান্ডা আছে । চাদর জড়িয়ে এসো ।
চারিপাশে শুনশান নিরবতা । কেবল কি একটা পোকার ডাকার শব্দ আসছে । ডাক টা ঠিক ঝিঝি পোকার না ।
অন্য কোন পোকা হবে । দুধারে গাছগাছালীতে ভর্তি, মাঝখান দিয়ে রাস্তা । মিলির প্রথম মনে হল ও মনে হয় স্বপ্ন দেখছে ! এমন একটা স্বপ্ন মিলি প্রতিদিন দেখে এসেছে । আজ যেন তা সত্যি হতে চলল ।
আবীর চুপ করেই হাটছে ।
মিলির মনে হল ওর কিছু বলা উচিত্ । মিলি বলল
-আপনার ঠান্ডা লাগছে না ?
-একটু লাগছে ।
মিলি নিজের গায়ের চাদর খুলতে গেল তখন আবীর বলল
-আরে চাদর খুলতে হবে না !
-আপনার ঠান্ডা ..
-কোন ব্যাপার না ।
দুজন আরো কিছুক্ষন চুপচাপ হাটতে থাকে । আবীর হঠাত্ বলল
-মিলি ! জি ! তুমি আমাকে ভালবাসো ?
মিলি দাড়িয়ে পড়ল ।
কেবল অবাক বিশ্ময়ে আবীরের দিকে তাকিয়ে আছে । আবীর যে এমন একটা প্রশ্ন করবে এটা ও ভাবতেই পারে নি । আবীর থামে নি । হাটতে হাটতে সামনে একটা বড় গাছেয় নিচে গিয়ে দাড়ায় । গাছের নীচটা পাকা করে বাধানো ।
আবীর ঐ গাছের নিচটাতে গিয়ে বসল ।
মিলি তখনও দাড়িয়ে এক জায়গায় । আস্তে আস্তে আবীরের কাছে এগিয়ে যায় । আবীরের পাশে বসতে বসতে মিলি লক্ষ্য করে ওর হাত কেমন যেন একটু কাঁপছে ।
উত্তেজনায় কাঁপছে !!
আবীর আজ এ কি প্রশ্ন করল ওকে !
ও কি জবাব দেবে ?
আবীরকে কি ও ভালবাসে ?
বাসেই তো !
আবীর আবার বলল
-কই বলল না তো ?
মিলি কোন কথা বলতে পারে না ।
কেবল চুপ করেই থাকলো । কিছুক্ষন
চুপ থাকার পর আবীর বলল
-আমি জানি তুমি বাসো । তোমার মনে আছে একবার আমার হাত কেটে গিয়েছিল বলে ঠিক মত ভাত খেতে পারছিলাম না ?
মিলির খুব ভাল করেই মনে আছে । বেশ খানিকটাই কেটে গিয়েছিল । আবীর কিছুক্ষন চামচ দিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করে তারপর ছেড়ে দিল ।
চামচ দিয়ে খাওয়ার ঠিক অভ্যাস নাই আবীরের !
মিলির খুব ইচ্ছা করছিল ওকে মুখে তুলে খাইয়ে দিতে কিন্তু বলতে পারে নি । আধ পেট খেয়েই আবীর উঠে পড়ে ।
আবীর মিলির দিকে তাকিয়ে বলল
ঐ দিন তুমি নিজেও ভাত খাও নি তাই না ? সারা রাত না খেয়ে ছিল । কি অদ্ভুদ মানুষের মন তাই না ? এই এখন আমার ঠান্ডা লাগছে দেখে তোমার শান্তি লাগছে না । গায়ের চাদরটা আমাকে দেওয়ার কথা ভাবছো ।
মিলি আবারও অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে । আবীর আজকে ওর মনে কথা গুলো কেমন করে বুঝে ফেলছে । এতো দিন কেন বুঝে নি ?
আবীর বলল
-আচ্ছা একটু কাছে এসে বস । তোমার চাদরটা যথেষ্ঠ বড় । দুজন একসাথে গায়ে দেওয়া যাবে ।
মিলি আবীরের আরো একটু কাছে এসে বসল । আবীর নিজেই চাদর জড়িয়ে নিল । মিলির হঠাত্ করেই একরাশ ভাললাগা ঘিরে ধরে । চাদর দিয়ে জড়িয়ে ধরাতে মিলি আবীরের খুব কাছে চলে এসেছে । এতো কাছে আর কখনও আসে নি ।
বুকের ভেতরে কেমন একটা আনন্দ কাজ করছে । আবীর আবার বলল
-জানো মিলি আমি কোন দিন এতো ভালবাসা পায় নি । কারো কাছ থেকে না । আমার বয়স যখন দুই বছর তখন আমার মা আমার বাবাকে ছেড়ে চলে যায় । তার কিছুদিন পরে বাবাও ।
আমি এতিম খানায় বড় হয়েছি । প্রথম প্রথম খুব অভিমান হত মা বাবার উপর । তারপর সয়ে গেছে । তারপর যখন কলেজে উঠি একটা মেয়েকে আমার খুব মনে ধরে । কিন্তু পরে সেও আমাকে রেখে চলে যায় ।
আমি ...
-আবির থাক না পুরোনো কথা । আপনার কষ্ট হচ্ছে । আমি এসব শুনতে চাই না ।
-না তুমি শোন প্লিজ । একটু মন খারাপ হোক ! তবুও আমি তোমাকে বলতে চাই ।
মিলির মন খারাপ হয় । আবীরের পুরানো কথা গুলো ওর শুনতে ইচ্ছা করে না । মানুষটার বুকের ভিতর এতো গুলো কষ্ট লেগে আছে । পুরানো কথা মনে করলেই কষ্টা পাবে মানুষটা ।
কি দরকার !
সামনের দিন গুলোর কথা বলুক ।
সামনের আনন্দের কথা গুলো । আবীর বলল
-জানো আমি ধরেই নিয়ে ছিলাম আমার জীবনটা হয়তো ভালবাসা শূন্যই কাটবে । কিন্তু তোমাকে দেখার পর ...
আবীর চুপ করে গেল ।
মিলি কিছুক্ষন তাকিয়ে থাকে আবীরের দিকে ! তারপর বলল
-আমাকে দেখার পর ?
-আসলে তুমিও খানিকটা আমার মতই ! আদর আর ভালবাসা ছাড়া বেঁচে ছিলে ! আমাকে পেয়ে যেন জীবনের সব টুকু ভালবাসা আমার জন্য ঢেলে দিলে । কিন্তু সেখানেও যেন কিছু হচ্ছিল না ।
যাকে ভালবাসছ সে তোমাকে ভালবাসছে না ! তাই না ?
-আমি কি তাই বলেছি ? আপনি ....
আবীর একটু চুপ করে থেকে বলল
-আমাকে একটু সময় দাও ! আসলে এরকম ভাবে কারো কাছে কোনদিন আসি নাই তো তাই একটু অস্বস্থি লাগছে ! আস্তে আস্তে ঠি হয়ে যাবে ! আর একটা কথা বলবো ?
-বলেন !
-আমি কোন অফিসের কাজে এখানে আসি নি ! কেবল তোমার সাথে কিছুটা সময় কাটানোর জন্যই এখানে এসেছি ! অনেক দিন ধরে চেষ্টা করছিলাম কথা গুলো বলার জন্য কিন্তু অস্বস্থির কারনে ঠিক মত বলতে পারছিলাম না !
আবীর চুপ করেই রইলো !
মিলি কিছুক্ষন কিছু বলতে পারলো না ! কেবল তাকিয়ে রইলো । মিলি ভাবতেই পারছে না আবীর কেবল ওর সাথে সময় কাটানোর জন্যই এখানে এসেছে !!
আচ্ছা আবীর কে যদি এখন জড়িয়ে ধরি ! মিলি ভাবে ! আবীর কি তাহলে খুব রাগ করবে ?
করুক ! এই সময়ে যদি ওকে জড়িয়ে না ধরতে না পরে আর হয়তো পারবে না কোনদিন !
মিলি আবীরকে জড়িয়ে ধরার কথা ভাবছেই এমন সময় আবীর বলল
-তোমার গায়ে তো চাদরই নাই ! শীত লাগছে তো ! আচ্ছা চল এখানে আর বসে থেকতে হবে না ! বাংলোতে চল ।
-না ! যাবো না !
-কেন ?
-এখানে থাকতে ভাল লাগছে ! এই যে আপনার এতো কাছাকাছি বসে আছি ফিরে গেলে বসতে পারবো না !
আবীর একটু হাসলো যেন ! বলল
-চাইলে আর একটু কাছে এসে বসতে পারো !
-আমি কেন চাইবো ? আপনি চান না ?
আবীর চট করেই কোন জবাব দিল না !
একটু সময় নিয়ে বলল
-আমি বললাম না আমাকে একটু সময় দাও ! আস্তে আস্তে ঠিক হয়ে যাবে !
মিলির কি হল মিলি নিজেই বলতে পারবে না । বলল
-না আস্তে আস্তে হলে হবে না ! আমি একটা বছর ধরে অপেক্ষা করে আছি ! আর না !! আমি আর অপেক্ষা করতে পারবো না ! আমি কত আগ্রহ নিয়ে অপেক্ষা করেআছি !!!! কত কিছু বলার আছে !! কত কল্প কথা সাজানো আছে মনের ভিতরে । কত কিছু শোনার আছে ! নআর তুমি বলছো আস্তে আস্তে !!
মিলি একবারে এতো গুলো কথা বলে যেন হাপিয়ে উঠল ! চুপ করে তাকিয়ে রইলো আবীরের দিকে !!
আবীর অবাক হয়ে দেখল মিলি কাঁদছে ! চাদের আলোয় সেই চোখের জল কেবল একটু চিকমিক করছে !! আবীর মিলির দিকে আর একটু এগিয়ে বসলো ! মিলির হাত টা নিজের হাতের ভিতর নিয়ে বসে রইলো !!
আগের পর্বটা লিখে মনে হয়েছিল যেন আর লেখার দরকার নেই ! কিন্তু বেশ কয়েকজন পরের পার্ট টা লিখতে বলে ।
তাই আবার লিখতে হল !
সবাই ভাল থাকবেন !!
সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা !!
সবাই ভাল থাকবেন
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।