আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আব্বু আম্মুর সহায়তায় রিফাতের সাথে আরেকটি রোমান্টিক দিন কাটালাম। অন্নেকগুলা থ্যাংকস আব্বু আম্মু তোমাদেরকে।

আমি অপরিচিত মানুষর সাথে বিতর্কে জড়াইনা। গালিগালাজ একদম পছন্দ করিনা। আমার ফেবু লিঙ্ক: fb.com/rolly12345

আজ কুমিল্লা ইউনিভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষা গেলো। আমি পরীক্ষা দেইনি কিন্তু আজ সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে হয়েছে। রিফাত গতকালি বলে রেখেছিলো আজ সকালে ওকে নিয়ে আমকেই যেতে হবে।

আর সকালে ঘুম থেকে উঠার ব্যাপারে আমার উদাসিনতা যথেষ্ট লক্ষনিয়। সকালে ঘুম থেকে যে উঠতে পরবোনা সে ব্যপারে যথেষ্ট সিওর ছলাম। তাই মোবাইলে অ্যালার্ম
দিয়ে রেখেছিলাম। তারপরো শঙ্কায় ছিলাম যদি উঠতে না পারি ? তাই পায়ে গামচা বেঁধে ঘুমাইছি। ইচ্ছা মত পানিও খাইছি।

যাই হৌক সকালে আমি আর উঠতে পারলামনা। হুম সত্যিই উঠতে পারিনি। সকালে আব্বু আম্মু ঘুম থেকে উঠে আমাকে নামাজ পড়তে ডাকতে শুরু করলেন এর আগে কখনো এরকম বৃথা চেষ্টা করতে দিখিনি । যাক আব্বু আম্মুর প্যনপ্যনানিতে ঘুম থেকে উঠে দেখি রিফাতের চারটা কল। তাড়াতাড়ি ব্রাশ হাতে নিয়ে বের হলাম।

মুখে ব্রাশ নিয়ে রিফাতকে ফোনদিলাম। রিফাত খুব মেজাজ খারাপ করেই ফোন ধরলো,
-এই আমি তোমারে এতগুলা ফোন দিলাম ধরলানা কেন?
= সরি বাবু। তুমি রেডি?
-হুম আমি চলে আসছি।
=সত্যি?
-মনে হয় যেন খুশি হইছ?
=নাহ কি বল এসব?
- তাড়াতাড়ি আস আমি বের হচ্ছি।
=বাবু শোন।


-বল।
=আমি না রাতে যে ড্রেস পরে ঘুমাইছি তাই পরে আছি। এগুলা চেঞ্জ করতে গেলে আর বেরুতে পারবোনা। আর এই ড্রেস পড়ে কুমিল্লা যাওয়া পসিবল না।
- শালা কুত্তা তুই তাড়াতাড়ি আয় নাইলে খবর আছে।

আমি বের হচ্ছি। আর শোন তোর কি আইজকা অন্য মাইয়ার লগে টাঙ্কি মারার নিয়ত আছে?
= ছিঃ বাবু আজ তোমার পরীক্ষা এসব বলতে নাই।
- শোন যা পরে আছত তাই পরে আয় চেঞ্জ করবি খবর আছে।
=আচ্ছা।


২০ মিনিট পর।



-এই কোন রিকশা পাচ্ছিনা কি করবো?
=আপনি হাটতে থাকেন আমি রিকশা নিয়া আসতেসি।
-ওকে।


একটু পর রিফাতের ভাড়া করা রিকশা আমার সামনে এসে দাড়ালো। এই ওঠ। আমি রিকশায় উঠে ওকে বললাম তোমার ব্যগটা দাও।

ওর ব্যাগে ব্রাশটা রেখে দুজনে চুপ করে বসে আছি। আমি আড়চোখে ওকে দেখছিলাম। ওর মাল্টিকালার বোরখা আর হাতের মেহেদী ভালোই মানিয়েছে ওকে। আমি বেশিক্ষন তাকিয়ে থাকতে পারলামনা। গন্তব্য চলে আসায় রিকশা থেকে নামলাম।

নেমেই আরেক বিপত্তি বাধলো। রিকশা ওয়ালার কাছে ১০০ টাকার ভাংতি নাই। তাই বাধ্য হয়ে চারটা পরটা কিনে হোটেল থেকে ভাঙ্গিয়ে নিলাম। যাক রিকশা ভাড়া দিয়ে সামনে এগুবো এমন সময় আমার এলাকার এক রিকশা ড্রাইভার। আমি তাড়াতাড়ি করে সিএনজিতে উঠে পড়লাম।

সেখানেই ঘটলো বিপত্তি প্ল্যান ছিলো খিলা থেকে উপকুলে উঠবো কিন্তু তা আর হলোনা। ধুর শালা সিএনজি চলতেসে আস্তে আস্তে ইতি মধ্যেই দুইটা উপকুল আমাদেরকে ক্রস করে গেছে। তাই রিফাতের মুখের দিকে তাকানো যাচ্ছেনা। আমি ব্যপারটা স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলাম। কিন্তু কিভাবে? ওর মেজাজ বেসম্ভব খারাপ
হয়ে আছে তাই আমি বিশেষ কোন কথা বললামনা।

লাকসাম এসে নামলাম ৭.৪৬ এ। উপকুলে অপেক্ষায় লাকসাম গরু বাজারের পাশে দাঁড়িয়ে আছি কারন এখানেই উপকুল থামে।
কিন্তু আমার খুব চিন্তা হচ্ছিলো কারন এখানে চার পাচটা সিট খালি হয় কিন্তু এখানে লোক ৫০ জনের মত দাঁড়িয়ে আছে সব পরীক্ষার্থী। তাই আমি রিফাতকে বললাম চলো সিএনজি দিয়ে যাই। কিন্তু সে আমার দিকে এমন ভাবে তাকালো আমি আর কিছু বললামনা।

উপকুলের জন্য অপেক্ষা করলাম উপকুল আসলোও আমি কোনমতে ওকে উঠানোর চেষ্টা করলাম কিন্তু ব্যর্থ হলাম।
তাই আমি উঠেও নেমে গেলাম। বাস চলে গেল। আমি ওর দিকে তাকালাম ও আরেকটা বাসের অপেক্ষায় দাড়িয়ে আছে। সময় তখন ৮টা ২০।

আমার আর ভালোলাগলোনা ওর হাতটা ধরে হাটা
শুরু করলাম সিএনজি স্টেশনের দিকে। আমি সিউর ছিলাম আমার হাত থেকে হাত ছাড়িয়ে নেওয়ার সাহস ওর নাই। আমি তাড়াতাড়ি করে সিএনজিতে উঠলাম। আরো কিছু পরীক্ষার্থী
আমার পথ অবলম্বন করেছিলো বলে সিএনজি ছাড়তে বেশি দেরি হলোনা। সিএনজিতে কোনরূপ কথা হলোনা।

কুমিল্লা বিশ্বরোড গিয়ে নামলাম নয়টায়। ওখানে গিয়ে আরেকটা সিএনজি পেলাম
ওরাও পরীক্ষার্থী তাড়াতাড়ি উঠে পড়লাম। মিনিট বিশেক লাগলো ল্যবরেটরি হাইস্কুলে পোউছাতে। পৌছানোর পর আমার মুখে বিজয়ীর ছাপ স্পষ্ট। ভাড়া মিটিয়ে গেলাম গেইটে ওর সিট পড়ছে
P2 বিল্ডিং এ।

ওকে স্কুলের ভিতরে ঢুকিয়ে দিয়ে আমি বার্ডের সামনে গেলাম নাস্তা করবো বলে। মাত্র হাত মুখ ধুলাম এমন সময় ওর ফোন। এই আমিত পি২ খুজে পাইনা ভিতরে আসো তুমি। নাস্তা না করে দিলাম দোড়। স্কুল গেটে গেলাম ভিতরে ঢুকতে চাইলাম কিন্তু বিএনসিসি ঢুকতে দিলোনা আমি ফোন দিয়ে জানালাম পূর্ব পাশের বিল্ডিংটা প্রাইমারি শাখা।

শেষ পর্যন্ত উনি ওনার আসন খুজে পেলেন। যাক আমি দশটা পর্যন্ত স্কুল গেটে থাকলাম যদি আবার আসতে হয় সে ভয়ে। যারা কুমিল্লার তারা বুঝবেন দূরত্বটা কিন্তু খুব কমোনা। যাই হোক পরীক্ষা শুরু হলে আমি গিয়ে নাস্তা করে রুপবান মুরায় বসে সময় কাটালাম ১০টা ৫০ এ আবার আসলাম স্কুল গেটে। ছাত্রলীগের মিছিলের কারনে ছাত্রছত্রিরা বের হতে সময় লাগছিলো।

আমি মিছিলের সাথে ভিতরে ঢুকে দেখি ও দাঁড়িয়ে আছে। আমি বললাম চলো।
সে আমার সাথে বেরিয়ে আসলো এসে হুট করে দাঁড়িয়ে গেল। এই হাটতে কষ্ট হচ্ছে একটু ধরনা। এরকম আগে কোনদিনি বলেনি সে।

আমি ওর হাত ধরে বার্ডের সামনে এসে সিএনজিতে উঠলাম। এই যে স্কুল গেট থেকে এখানে আসতে যে সময়টা লাগলো সেটা আমার লাইফের আমার অন্যতম মুহূর্ত। এই সময়টাতে আমি বুঝেছি একটা মেয়ে তার প্রিয় মানুষটার উপর কতটা নির্ভরতা নিয়ে তার হাত ধরে। অবশেষে সেখান থেকে বিশ্বরোড এসে উপকুলে উঠলাম। আসার সময় দেখি সব লঙ্কা কান্ড সে আমার জন্য বাড়িথেকে নারকেলের চিড়া, কমলা আঙ্গুর, কমলা, আপেল এগুলা নিয়া আসছে।

কিন্তু আমার মাথাটা ব্যাথা করছিলো বলে আমি কিছু খাইনি শুধু চিড়া ছাড়া কারন এটা আমার প্রিয় একটা খাবার। বন্ধুদের ওয়াইফ মহলে সে নিয়ে অখ্যাতি আছে আমার নামে। কারন আমি বন্ধুদের বাড়ি বা তাদের শ্বশুর বাড়ি গেলে এই জিনিসটা খেয়েও আসি পকেটে করে নিয়েও আসি। সে বিষয়ে অন্য একদিন বলবো। আমার মাথা ব্যথা করছিলো তাই আমি সিটে হেলান দিয়ে শুয়ে রইলাম আর সে আমার কাধে।

যাক সবশেষে খিলা এসে নামলাম আমি বাড়ি চলে আসলাম। এসে জুম্মার নামাজ পড়ে আব্বুর জন্য দোয়া করলাম। সে যদি আজ নামাজের জন্য ডাক না দিতো তাহলে তার হবু পুত্র বধুর হাতে আজ আমার ধোলাই খেতে হতো।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।