আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কবিতার ভূত

দুই পায়ে হাঁটি আর চার চোখে স্বপ্ন দেখি। মানুষের জন্য ভালবাসা, মানুষের জন্য! (১০। ১১। ১২ তারিখে লিখেছিলাম। আজ এখানে দিয়ে দিলাম) এই অসাধারন কবিতাটি (এই লেখার শেষের দিকে কবিতাটি দিয়ে দিলাম) আমাকে, শিশু কালেই-আমার ইন্দ্রিয়গুলি নাড়িয়ে দিয়েছিল-বুক হুহু করা শূন্যতার সৃষ্টি করেছিল-আমি নিজেই যেনো এক "কি যেন" হয়ে গিয়েছিলাম।

আমাদের পাঠ্যবই গুলিতে কিভাবে কবিতা-পদ্য-ছড়া নির্বাচন করা হয় আমি জানিনা। এই কবিতাটা আমি কোন ক্লাশে পড়েছিলাম আমার মনে পড়ছেনা। তবে এটুকু মনে আছে তখন অনেক ছোট্ট ছিলাম। আমার ভাঙ্গা স্কুলের ভাঙ্গা বেঞ্চে অথবা চটের ওপর বসে কবিতাটি পড়েছিলাম,শুনেছিলাম। প্রথমে কিছুই বুঝিনি।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সবাইকে কবিতা মুখস্ত করতে হতো। একটা পুরো ক্লাশ কেটে গিয়েছিল এই কবিতাটা শুনতে শুনতে। পরে আমাদের ম্যাডাম বলেন যে, কবিতার কাজলা দিদি মরে গেছে। আমি অনেক অবাক হই কষ্ট পাই। এর পর থেকে বাঁশ ঝাড়ের মাথায় চাঁদ দেখলেই আমার কাজলা দিদির কথা মনে পড়ে যায় এবং বুকটা কেমন যেনো করে।

আমার শিশু মনে তখনো মৃত্যু বা এই ধরনের কিছু ঢুকতে পারেনি। আমি শৈশবে মৃত্যুকে অন্যরকম ভাবে ভয় পেতাম। একটা মানুষ মরে গেলে কিভাবে কি হয়, আমি জানতে ভয় পেতাম। বাড়ির আসেপাশে কেউ মারা গেলে বা আমার স্কুলে যাবার পথের পাশের কোন বাড়ির কেউ মরলে আমি কষ্ট পেতাম আর ভয় পেতাম। একটা নতুন কবর দেখলে আমার বুকটা চমকে ওঠতো, রাতে ভয়টা আরো বেড়ে যেতো আর অন্ধকার থাকতেই যদি ঘুম ভাংতো তাহলে আমি ভয়ে ভয়ে অপেক্ষা করতাম কখন আলো আসবে, সকাল হবে।

সেই থেকে বুঝলাম যে আমি আলো ভালোবাসি। আলোটা বড্ড কিপটে, শুধু দিনের বেলাতেই থাকে! আমাদের অনেক অনেক আলো থাকলে অনেক অন্যায় কমে যেতো। এখন আমি আর ভয় পাইনা। আমি এখন শুধু কষ্ট পাই। মানুষের ভৌতিক আচরন আমাকে কষ্ট দেয়।

আমার কবিতা শোনা হয়েছে আম্মুর কাছ থেকেই। অবশ্য আম্মু আমাকে ছড়াই শুনিয়েছে বেশি। আমার নানু (আম্মুর বাবা) আমাকে,আমাদেরকে অনেক কবিতা শুনাতেন। যখন আমরা পড়তেই পারিনা তখন থেকেই কবিতা শুনে আসছি নানুর গলায়। নানুর ভারী মোটা গলায় কবিতা শোনার সময় আমাদের মনে হতো যেনো খাটটা কাঁপছে! আমরা নানুর বুকের উপর মাথা রেখে কবিতা শুনতাম, গায়ের উপর পা তুলে দিয়ে কবিতা শুনতাম, টাক মাথার আশেপাশের অল্প কয়েকটা চুল টেনে দিতে দিতে কবিতা শুনতাম, হাত-পায়ের আঙ্গুল টেনে দিতে দিতে কবিতা শুনতাম, নানু কবিতাতে সুর লাগিয়ে দিতেন কখনো কখনো।

বিড়াল ওড়ায় ঘুড়িরে ভাই বিড়াল ওড়ায় ঘুড়ি... নীল আকাশে রঙ্গীন ঘুড়ি চলছে ওড়ি ওড়ি..., তারপর " রিক্সা চড়ে বাঘ বাবাজি চলছে শহর পানে, রিক্সা চলে ঠনঠনিয়ে বানর সেটা টানে... " । তারপর শুরু হতো নানুর গল্প বলা। আমার নানু কি অসাধারন ভাবে গল্প বলেন তা লিখে বোঝানো যাবে না। টলস্টয়ের গল্প গুলি নানু এমনভাবে আমাদের অনুবাদকরে শোনাতেন যেনো প্রতিটি চরিত্র একেবারে বাস্তব হয়ে উঠতো (এছাড়াও শেক্সপীয়ার, রবীন্দ্রনাথ, দস্তয়ভস্কি, ডিকেন্স ইত্যাদি নানু এমন সহজ ভাবে, শিশুদের মতো করে অনুবাদ করে শোনাতেন, অসাধারন!!)। তার অসাধারন অনুবাদে গল্পগুলি হয়ে উঠতো জীবন্ত।

নানু জসীমউদ্দিনের কবর কবিতাটির আবৃত্তি এমন ভাবে করতেন যে আমরা সব চোখের সামনে দেখতে পেতাম। নানু অনেক গল্প শুনিয়েছেন, আমার প্রায় সবগুলিই মনে আছে কারন প্রতিটি গল্প কবিতা আমরা অনেকবার করে শুনেছি। "কবর" আবৃত্তি করার সময় নানুর গলার স্বরের পরিবর্তন, আবেগ,অভিনয়,ফিসফিস,আকুতি,স্বরভংগ ইত্যাদি একটা লোকত্তর পরিবেশ সৃষ্টি করতো। আমরা (আমি,ভাই বোন, মামু,আন্টি) মগ্ন হয়ে শুনতাম। শুনতে শুনতে কবর কবিতাটি আমার মুখস্ত হয়ে যায়।

আমরা নানুকে ঘিরে আনন্দের আসর বসাতাম। তখন সবাইকে কিছু না কিছু করতে হতো বলতে হতো। আমরা ছড়া বলতাম গান গাইতাম, নানুর কাছেই শুনতাম বেশী। নানুকে মাঝে মাঝে তার কাছে শোনা গল্পই শোনাতাম, তখন নানু চোখ বন্ধ করে শুনতেন এবং আমরা ভাবতাম তিনি ঘুমিয়ে পড়েছেন হয়তো, তখন হুট করে তিনি গল্পের পরের লাইনটা বলা শুরু করতেন এবং আমরা তাকে আবার গল্পটি বলতে বলতাম। আমার শৈশবে নানু ছিল আমার নায়ক।

আমার নানুর নাম আব্দুল হাই। আমার চাচাতো ভাই-বোনেরা আমার নানুকে নিয়ে ছড়া কাটতো!! আমি মজা পেতাম। আমাদের নানুকে ঘিরে আসর শেষ হলে আমি যখন নানু বাড়ির সামনে নানুর বাবার কবরের পাশে গিয়ে দাঁড়াতাম তখন আমার মনে হতো কবর কবিতাটির কথা। আমি বিড়বিড় করে কবিতা বলতাম। আমার চারপাশের সবকিছুই তখন কবিতার মতোই সুন্দর।

আমি আমার ভাঙ্গা স্কুলের প্রতিটি ঘরে বসে কবিতা পড়েছি( ওগুলি যদিও ছড়া ছিল), কবিতা বলেছি। ঐ বয়সে অনেকেই জিজ্ঞেস করতো "কোন ক্লাসে পড়? কবিতা বলতো একটা" আমি লজ্জা পেতাম, কবিতা বলার সময় আমার গলা দিয়ে কোন স্বর বের হতে চাইতোনা। ঐ বয়সে ভাবতাম যে যত বেশি কবিতা বলতে পারবে সে ততো বেশি ভাল ছাত্র। ভালো ছাত্র হওয়াটা তখন খুব আনন্দের ছিল। তবুও আমি কবিতা মুখস্ত করতে পারতাম না।

লাইন উলটে পালটে যেতো। স্কুলের রেজাল্ট দেবার সময় আমরা কবিতা টবিতা বলতাম, একটু দেশের গান গাইতাম। যেবার পরীক্ষার ফিসের টাকা বেশি উঠতো সেবার রেজাল্টের সময় মাইক ভাড়া করে আনা হতো। আমার ভাংগা প্রাইমারী স্কুলে যখন পড়তাম তখন আমরা একটা নাটক করার নির্দেশ পেলাম (ডায়রিয়া,কুসংস্কার ইত্যাদি নিয়ে)। নাটকের জন্যে রঙ্গিন বই এলো।

আমি তখন হয়তো ক্লাশ ফোরে পড়ি। নাটকের অনেক অংশজুড়ে ছিল ছড়া। আমাদের ছন্দে ছন্দে ছড়া কাটতে হয়েছিল। তখন দেখলাম যে কবিতা মুখস্ত করা কোন ব্যাপারই না। আসলে ঐ কবিতাগুলি পাঠ্যক্রমে ছিলনা তাই দ্রুত শিখতে পেরেছিলাম।

আমরা শিশুকাল থেকেই জেনে আসছি কবিরা খুব নামী দামী লোক। সত্যি বলতে কি, আমদের শিশু কালের গন্ডির বাইরে আমরা নতুন যে সব মানুষ চিনেছি তাদের মধ্যে প্রথমেই চিনেছি কবিদের। আমাদের বই এর প্রথমেই ছিল জাতীয় সংগীত, তারপর রণ সংগীত। আমি,আমরা রবীন্দ্রনাথ এবং নজরুলকে চিনলাম। বন্দে আলী মিয়া নামের কবির নাম দেখে আমাদের অনেক হাসি পেয়েছিল।

আমরা যতই উপরের ক্লাশে ওঠতে থাকি ততোই নতুন নতুন কবির সাথে পরিচিত হই। সুকুমার রায়কে চেনার পর আমার মনে সুকুমার রায়ের সহজ একটা ছবি আঁকা হয়ে যায়। আমি পড়তে শেখার পর থেকেই গল্পের বই পড়ি। আমাদের আশেপাশে গল্প-বই খুব একটা ছিল না। পরবর্তীতে বই পড়ার জন্য আমাকে অনেক কষ্ট করতে হয়েছে।

ক্লাস সিক্সে পড়ার সময় আমি প্রথম একটি লাইব্রেরীর সন্ধান পাই এবং আমার আব্বু সেই লাইব্রেরীর আজীবন সদস্য! আমি আব্বুকে বলে তার নামে বই ইস্যু করতে থাকলাম। বই বই আর বই। তখন আমার একটু সময়ও বৃথা যায়নি। হয় গল্পের বই না হয় খেলা অথবা বেড়ানো। ঐ লাইব্রেরীর সব বই (শিশু-কিশোরদের) পড়া শেষ হয়ে গেলে আমি আবিষ্কার করি যে আমার নাগালের মধ্যে আর কোন লাইব্রেরী নেই! কি আর করা... বইতো পড়তেই হবে, আমি যখন যেখানে বই পেতাম পড়তাম বা পড়ার জন্য বাড়িতে নিয়ে যেতাম।

ঐ বয়সে বই আমাকে হাজারটা পৃথিবীর সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়। আমি একসাথে অনেক পৃথিবীতে বাস করতে থাকি। আমি যা পড়ি তা চোখের সামনে দেখতে পাই। আমার নানুবাড়িতে অনেক বই ছিল, নানু, মামু,আন্টি এরা পড়তো। আমিও নানু বাড়ি গেলে বই নিয়ে পড়ে থাকতাম।

বই আমাকে অনেক স্বপ্ন দেয়। চোখ আর বুক ভরা স্বপ্ন নিয়ে আমি বারবার এই পৃথিবীকে দেখতে থাকি। আমি মানুষের সাথে চলি,প্রকৃতির সাথে ঘুরি। আমার কবিতা করতে ইচ্ছা হয়। আমার আশেপাশের পৃথিবী হয়ে যায় কবিতার ধানক্ষেত নদী ও ঘর।

সপ্তম শ্রেণীতে পড়ার সময় আমি একটি রুগ্ন পত্রিকা প্রকাশ করি 'আনন্দ' নামে । তখন কম্পিউটার কম্পোজের দোকান ছিল একটা কি দুটো তাও আবার প্রতি পৃষ্ঠা বিশ টাকা! আমরা বাধ্য হয়েই হাতে লিখে, সরকারী অফিসের টাইপিস্ট আংকেলদের কাছে ঘ্যান ঘ্যান করে কবিতা টাইপ করিয়ে বই আকৃতির একতা খাতার পাতায় আঠা দিয়ে লাগালাম এবং সেটা ফটোকপি করে কম খরচে একটা সাহিত্য পত্রিকা প্রকাশ করলাম। আমি তখন যে আনন্দ পেয়েছিলাম তা কোনদিন ভাষায় প্রকাশ করতে পারবনা। এখন আমাকে হাজারটা নোবেল প্রাইজ দিলেও ঐ আনন্দের হাজার ভাগের একভাগ আনন্দ পাবোনা। আমার আব্বুর কাছে যখন আমাদের প্রকাশিত পত্রিকাটি বিক্রি করলাম, আব্বু অনেক খুশি হায়ে আমাকে ১০০ টাকা দিলেন।

(পরবর্তীতে-যখন আমায় পড়াশুনায় অবহেলা পরিলক্ষিত হল-তখন আব্বু আমাকে একাধিক বার বকা ঝকা করেছেন। তার গাইল্যা গাইলির বিষয় বস্তুই ছিল আমার কবিতা-কবিত্ব,গীটার আর আড্ডা। এখন ঐ সব বকাঝকা খুব মিস করি-বড় হয়ে গেছিনা!! )। একটা সময় দেখি আমি পৃথিবীর অনেক কবি সাহিত্যিকদের চিনি! আমার অনেক ভালোলাগে যে আমি তাদের ভাবনা জানার সুযোগ পেয়েছি। জীবনানন্দ আমার কছে ভাল লাগতে থাকে, বিনয় মজুমদার ভালোলাগতে থাকে, ফ্রস্ট, বোদলেয়ার, রুমি, রুদ্র।

। । এর পর আরো কতো কতো কতো... "কবিতা পরলে কি হয়? কি হব কবিতা লেহি? কবিতা ধুয়ে কি পানি খামু? কাকের চাইয়ে কবির সংখ্যা বেশি? কবিতায় ভাত দিব নাকি? ভং ধরছো না? আজাইর‌্যা কাম। এই সব না কইরি পড়ালেহা কর। কবিতা... ব্যাকডেটেড! খায়ে দায়ে আর কাম নাই কবিতা মারাও!" তারপরেও কবিতা ভালবাসি।

কবিতা পড়তে ভালবাসি। কবিতা লেখা হয়না খুব একটা। যদি লিখি, কমই লিখি। হাজার হাজার হাজার কবিতা পড়া বাকি! তবুও যদি লিখতে যাই, মনে হয় কি লিখব দূর ছাই! তারপরেও ইচ্ছে জেগে থাকে। মানুষদের ভালো থাকতে দেখলে একটি বিশুদ্ধ সুন্দর কবিতা লেখার আনন্দ পাই, মানুষের কষ্টে মনে হয় সব কবিতা নিরর্থক।

আবার শত স্বপ্ন জাগে মনে, তীব্র ভাবে বাঁচার ইচ্ছা জাগে, মনে হয় অনন্তকাল বেঁচে থাকি ভালবাসায়। প্রেম হয়ে মানুষ হয়ে ভালবাসা হয়ে ভালবাসার সাথে মানুষের সাথে। কবিতারা আমার বোধকে নিয়ে খেলা করে। আমি যেমন আমার ভালবাসার, কবিতাও তেমনি আমাদের। কবিত্ব কি? কিছুই না।

কবি হতে কোন সনদ লাগেনা। প্রতিটি মানুষই কবি। কেউ কালি দিয়ে লিখে কেউ ঘাম দিয়ে কেউ রক্ত দিয়ে আবার কেউ স্বপ্ন দিয়ে। কবিতার উৎস হল মানুষের স্বপ্ন। প্রত্যেক স্বাপ্নিকই কবি।

কেউ লিখে কেউ লিখেনা আবার কেউ লিখতেই জানেনা। কবিত্ব হলোঃ- " এই যে এই পৃথিবীর ক্ষুদ্র একটা যায়গায় অবস্থান করছি, এখানে এই সময়ে বাকি পৃথিবীর বা মহাবিশ্বের বা মহাবিশ্বোত্তর জগতের কতটুকু এই জায়গায় আনতে পারছি" তা। আমাদের স্বপ্নের শেষ নেই, তাই শেষ নেই কবিতার। আমি বিশ্বাস করি "যে শুদ্ধভাবে কবিতা ভালবাসে সে কখনো কোন অন্যায় করতে পারে না"। কাজলা দিদি আমার শৈশবের সেরা কবিতা, একমাত্র কবিতা যা আমার হৃদয়কে ছুঁয়ে আরো গভীরে প্রবেশ করেছিল,এখনো আছে।

শুদ্ধ থাকা কঠিন, মানুষ হয়ে থাকাটাও হয়তো কঠিন, এই কঠিন পৃথিবীতে। কবিতাগুলি আমাকে ভালবাসতে শিখিয়েছে। আমি কবিতা ভালবাসি। কবিতার ভূত আমার ঘাড়ে চেপে থাকুক সিন্দাবাদের ভূতের মতো। কাজলা দিদি যতীন্দ্রমোহন বাগচী (কবিতাটির কবি প্রদত্ত নাম "দিদি হারা", ঢাকা বিশ্ববিদ্যালের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ডক্টর রফিক উল্লাহ খানের কাছে কবি প্রদত্ত নামটি জেনেছি) বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই, মাগো আমার শোলক-বলা কাজলা দিদি কই? পুকুর ধারে লেবুর তলে থোকায় থোকায় জোনাক জ্বলে ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না একলা জেগে রই- মাগো আমার কোলের কাছে কাজলা দিদি কই? সেদিন হতে কেন মা আর দিদিরে না ডাকো;- দিদির কথায় আঁচল দিয়ে মুখটি কেন ঢাকো? খাবার খেতে আসি যখন, দিদি বলে ডাকি তখন, ওঘর থেকে কেন মা আর দিদি আসে নাকো? আমি ডাকি তুমি কেন চুপটি করে থাকো? বল মা দিদি কোথায় গেছে, আসবে আবার কবে? কাল যে আমার নতুন ঘরে পুতুল-বিয়ে হবে! দিদির মত ফাঁকি দিয়ে, আমিও যদি লুকাই গিয়ে তুমি তখন একলা ঘরে কেমন করে রবে, আমিও নাই-দিদিও নাই- কেমন মজা হবে।

ভুঁই চাপাতে ভরে গেছে শিউলি গাছের তল, মাড়াস্ নে মা পুকুর থেকে আনবি যখন জল। ডালিম গাছের ফাঁকে ফাঁকে বুলবুলিটি লুকিয়ে থাকে, উড়িয়ে তুমি দিও না মা, ছিঁড়তে গিয়ে ফল,- দিদি এসে শুনবে যখন, বলবি কি মা বল! বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই- এমন সময় মাগো আমার কাজলা দিদি কই? লেবুর ধারে পুকুর পাড়ে ঝিঁঝিঁ ডাকে ঝোপে ঝাড়ে’ ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না, তাইতে জেগে রই রাত্রি হলো মাগো আমার কাজলা দিদি কই? ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।