আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"তবুও ভালোবাসি,"





-উফ! কি শীত পড়েছে!
-তাই? আমার তো শীত লাগছেনা!
-তিন চারটা জামা-কাপড় পরলে কি আর শীত লাগে?
-তুমিও তো সোয়েটার পরেছো?
-আমি তো তোমার মত তিন, চারটা পরিনি।
-আচ্ছা বাদ দাও, চলোনা একটু সামনে থেকে ঘুরে আসি।
-না, না সামনে যাবোনা। তুমি কি আবার পানিতে নামার পরিকল্পনা করছো নাতো?
-চলোনা খালি পায়ে একটু হাঁটি। সাগরের জ্বল পায়ে লাগিয়ে হাঁটার অনুভূতিই অন্যরকম!
-আকাশ, ছেলে মানুষী ছাড়ো।

এতো ভোরে আর এতো শীতে, ঠাণ্ডায় কি পাগলামি
শুরু করলে? এসব রোমান্স বিয়ের আগে মানাতো, এখন না।
-তিতলি, আমি তোমাকে এখনো তেমনটায় ভালোবাসি যেমনটা ঠিক বিয়ের আগে বাসতাম। আমি তোমার সাথে জীবনের শেষ মুহূর্তটা পর্যন্ত রোমান্স করে যেতে চায়।
তুমি যাবে কিনা সেটা বল?
-আচ্ছা চলো, তুমি যে নাছোড় বান্দা! না গেলে থামবেই না।

"সাগরের জ্বল এসে তিতলি আর আকাশের পায়ের উপর দিয়ে #বেয়ে বেয়ে চলে যাচ্ছে।


আকাশের ঠিক সেদিনটার মত লাগছে, যেদিন তিতলিকে নিয়ে আকাশ প্রথমবার এখানে এসেছিল।

-নাও হয়েছে, এখন চলো।
-এখনই?
-হ্যাঁ, এখনই। তোমার এই শরীরে এভাবে ঠাণ্ডা লাগানো ঠিক হচ্ছেনা। এমনিই তোমার হাপানি, অ্যালার্জির সমস্যা।

অল্প ঠাণ্ডা লাগ্লেই কাশি শুরু হয়ে যায়, আর এভাবে সমুদ্রের জ্বল! পায়ে লাগিয়ে ঘুরে বেড়ালে চলবে? হোটেলে চলো, গিয়ে নাস্তা করবে, ওষুধ খাবে।
-আরেকটু সময় থাকিনা তিতলি...
এই কোথায় চললে?
-তুমি থাকো। আমি যায়। আমার ভালো লাগছেনা।

সূর্য উদয় হচ্ছে, ঝিরি ঝিরি ঠাণ্ডা বাতাস বইছে।

সকালের সমুদ্র বীচের শীতল পরিবেশে দাড়িয়ে অতীতের কিছু সৃতি বারবার কড়া নেড়ে যাচ্ছে আকাশের মনের দরজায়।
এই তিতলির জন্য একদিন গৃহ ছেড়েছিলো আকাশ।
তিতলির ভালোবাসাই আকাশকে একেবারে "শূন্য" থেকে এতো উপরে উঠিয়েছে। কিছু না থেকেও শুধু তিতলির জন্য আকাশের
আজ টাকা কড়ির কোন অভাব নেই। ছোট্ট একটা ব্যাবসা থেকে আজ সে কোটিপতি।

দীর্ঘ ১৫ বছরের সংসার জীবনে আজও ভালোবাসার কোন কমতি হয়নি শুধু একটা জিনিস ছাড়া।
সেটা হলো ওদের সন্তান!
আকাশ-তিতলির কোন সন্তান নেই!
এ জন্য আকাশ কম চেষ্টা করেনি। অনেক বড় বড় ডাক্তার দেখিয়েছে। যতদূর চেষ্টা করার দরকার করেছে। সব রকমের চিকিৎসা নিয়েছে দুজনই।

কিন্ত কোন কাজ হয়নি। "বিধাতার" পরে ছেড়ে দিয়েছে সব কিছুই।
তবুও কোন কষ্ট নেই আকাশের। তারপরও তিতলিকে অন্ধের মত ভালোবাসে আকাশ।

-নাও ওষুধ খাও।

বললাম ঠাণ্ডায় পানিতে যেওনা, কে শোনে কার কথা!
-আরে তুমিতো আছো, আমার আর কিসের চিন্তা? তোমার ওই মুখের দিকে চেয়ে
মরতে পারলে আমার মরেও কোন কষ্ট লাগবেনা। হা হা। ।
-চুপ কর, একদম চুপ! ভুলেও আর কখনো মরার কথা মুখে আনবেনা।
-আচ্ছা বাবা, চুপ করলাম।

এখন হয়েছে?
-হ্যাঁ হয়েছে। ... আচ্ছা, আকাশ তুমি কেন আরেকটা বিয়ে করোনা?
-এই, আবার সেই কথা তুলেছো? দু' দিন পর পর এসব বলো কেন তুমি?
তোমাকে কত বার নিষেধ করবো?
-কি করবো বল? সমস্যা তো আমার। বাচ্চা-কাচ্চা না হওয়ার কষ্ট কি? সেটা আমি বুঝি। তোমারও তো স্বাদ, আল্লাদ আছে। তুমি কেন আমার জন্য তোমার লাইফ বরবাদ করবা?
-তিতলি, আমি আগেও বলেছি এখনো বলছি, এসব কথা আমি যেন আর না শুনি।


আমার কোন বাচ্চা-কাচ্চা লাগবেনা। "সৃষ্টি কর্তা" যদি দেই তাহলে হবে আর যদি না দেই তবে আমার দরকার নেই। আমি শুধু তোমাকেই ভালোবেসে যাবো। তুমি পাশে থাকলে আমার আর কিছুই লাগবেনা।

-আমার মাঝে মাঝে কেন জানি চিৎকার দিয়ে কাঁদতে ইচ্ছে করে, আকাশ!

-কেন? কাঁদতে ইচ্ছে হবে কেন?

-"সৃষ্টি কর্তা" আমাকে তোমার মত একটা স্বামী দিয়েছে তাই।

সত্যিই আমি অনেক বড় ভাগ্যবতী!!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।