আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আটকে আছে কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প

দীর্ঘদিন ধরে আটকে আছে কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প। কঙ্বাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে রূপান্তর করতে উদ্যোগ নেয় বিগত মহাজোট সরকার। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হলেও শেষ পর্যন্ত বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তপক্ষ ও চীনের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি হয়। কিন্তু চুক্তি পর্যন্ত আটকে আছে উন্নয়ন প্রকল্পটি। এখন এ প্রকল্পের কাজে চীনা প্রতিষ্ঠানটি এক পা আগায় তো, দুই পা পেছায়।

এ অবস্থায় বিমান মন্ত্রণালয় চলতি মাসের শুরুতে উন্নয়ন প্রকল্পটির দ্রুত অগ্রগতির জন্য চীনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তির শর্ত মূল্যায়ন এবং নেগোসিয়েশন কমিটি পুনর্গঠন করেছে। এরপরও প্রকল্পের ভবিষ্যৎ এখন পর্যন্ত অনিশ্চিত। বিমান মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। কঙ্বাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য বিগত মহাজোট সরকারের সময় উদ্যোগ নেওয়া হয়। মূলত, পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও দেশি-বিদেশি পর্যটকদের যাতায়াতের সুবিধার্থে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সঙ্গে সুপরিসর বিমান চলাচল সুবিধা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সরকারের এ উদ্যোগ।

পাশাপাশি উপকূলীয় এলাকায় প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপনের উদ্দেশে কঙ্বাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দরে উন্নীত করার পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এর অংশ হিসেবে সরকার কঙ্বাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন (প্রথম পর্যায়) প্রকল্প গ্রহণ করে। এ প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয় তিন হাজার ২৬৫ কোটি টাকা। ২০০৯ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদে প্রথম পর্যায়ের কাজ সমাপ্ত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু নানা জটিলতায় প্রকল্পের কাজ এখনো শুরুই করতে পারেনি বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ।

সূত্রমতে কক্সবাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় বিমানবন্দরের রানওয়ের দৈর্ঘ্য ৬ হাজার ৭৭৫ ফুট থেকে ৯ হাজার ফুটে উন্নীত করা, রানওয়ের চওড়া ১২০ ফুট থেকে ২০০ ফুটে উন্নীত করা হবে। এর বাইরে প্রকল্পের আওতায় রানওয়ের শক্তি বৃদ্ধিকরণ, এয়ারফিল্ড লাইটিং সিস্টেম স্থাপন, ফায়ার ফাইটিং ভেহিকল ক্রয়, আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপন করার কথা। সূত্র জানায়, এ প্রকল্পে ঠিকাদার নিয়োগ নিয়ে জটিলতা দেখা দিলে শেষ পর্যন্ত বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান দি কনসোর্টিয়াম অব এভিআইসি ইন্টারন্যাশনাল হোল্ডিং করপোরেশন অ্যান্ড চীনা এয়ারপোর্ট কনস্ট্রাকশন্স গ্রুপ করপোরেশন (সিএসিসি)-এর সঙ্গে বাণিজ্যিক চুক্তি করে। কিন্তু এক বছরের বেশি সময় ধরে প্রকল্পটি আটকে আছে চুক্তি পর্যন্ত। বিমান মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, প্রকল্পটি সামনের দিকে এগিয়ে নিতে চুক্তির শর্ত মূল্যায়ন এবং নেগোসিয়েশন কমিটি পুনর্গঠন করে ৩ ফেব্রুয়ারি একটি অফিস আদেশ জারি করা হয়।

এতে কিছু পরিবর্তন আনা হয় এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে যুক্ত করা হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে প্রতিনিধির নাম পাঠানো হয়নি কমিটিতে। সূত্র জানায়, অফিস আদেশে কমিটিকে মূলত চুক্তির আওতায় যেসব টার্মস অব রেফারেন্স রয়েছে সেগুলো নিয়ে দ্রুত চীনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা করে প্রকল্পটির কাজ শুরুর উদ্যোগ নিতে বলা হয়েছে। টার্মস অব রেফারেন্সের মধ্যে রয়েছে- চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে প্রাপ্ত প্রস্তাবের মূল্যায়ন সম্পন্ন করা, ঠিকাদারের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে দ্রুত এমপ্লয়িয়ার্স নিয়োগ চূড়ান্ত করা, প্রকল্পের প্রাক্কলন ব্যয় নির্ধারণ, প্রকল্পের আমদানিযোগ্য যন্ত্রপাতির সম্ভাব্য তালিকা প্রণয়ন করাসহ আরও কিছু বিষয়। কমিটিকে দ্রুত প্রয়োজনীয় মূল্যায়ন ও নেগোসিয়েশন কাজ সম্পন্ন করে প্রতিবেদন দাখিল করতেও বলা হয়েছে।

তবে এখন পর্যন্ত কমিটি কাজ শুরু করতে পারেনি বলে জানা গেছে। মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানায়, এ প্রকল্প নিয়ে চীনা প্রতিষ্ঠানটি একবার আগায় তো আরেকবার পিছিয়ে যায়। এ কারণেই মূলত প্রকল্পের অগ্রগতি হচ্ছে না। বেবিচক থেকে চীনা প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের বিভিন্ন সময়ে আমন্ত্রণ জানানো হলেও তাদের প্রতিনিধিরা নির্দিষ্ট সময়ে আসেন না। যার ফলে দুই পক্ষের মধ্যে ফলপ্রসূ আলোচনাও হচ্ছে না।

অন্যদিকে চীনা রাষ্ট্রদূত মন্ত্রণালয়কে জানিয়েছেন, যখন আমন্ত্রণ জানানো হয় তখন সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা ব্যস্ত থাকায় আসতে পারেন না। কঙ্বাজার বিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন সোমবার বলেন, মন্ত্রণালয় ও বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তপক্ষের সঙ্গে বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে তিনি শীঘ্রই আলোচনায় বসবেন। এর আগে নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারছেন না মন্ত্রী।

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।