আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দখলের থাবা ফুটপাতেও

রাজধানীর প্রায় দেড় শ কিলোমিটারের বেশি পরিমাণ ফুটপাত দখল করেছেন ফুটপাত ব্যবসায়ীরা। কাঁচাবাজার থেকে শুরু করে নানারকম দ্রব্য ও চায়ের দোকান; খাবার হোটেল এমনকি বাসস্ট্যান্ডও গড়ে তোলা হয়েছে দখলকৃত জায়গায়। কিন্তু সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এগুলো নিয়ন্ত্রণ বা উচ্ছেদের জন্য লোক দেখানো অভিযান চাললেও আবারও ফুটপাত দখল হয়ে যায় আগের নিয়মে। হকারদের অভিযোগ, তারা নিয়মিত স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কাছের লোক এবং পুলিশ সদস্যদের চাঁদা দিয়েই বছরের পর বছর ফুটপাতে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। আর ফুটপাত দখল হয়ে যাওয়ায় বিড়ম্বনায় পড়ছেন পথিকরা।

এমনকি প্রধান সড়কগুলোয় তৈরি হচ্ছে দীর্ঘ যানজট। সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ভ্রাম্যমাণ হকারসহ স্থানীয় লোকজন ফুটপাতের জায়গা দখলে নিয়েছেন। রাজধানীর গুলিস্তান, সদরঘাট, জুরাইন রেলগেট, শাহবাগ, মৌচাক, মিরপুর ১০ নম্বর গোলচক্কর, মালিবাগ, রামপুরা, গুলশান, বাড্ডা, খিলগাঁও ও মুগদা ইত্যাদি এলাকার ফুটপাত দখল হয়ে গেছে। এ ছাড়া সরকারি জমি, রেললাইনের দুই পাশের জমিতে গড়ে উঠেছে অবৈধ দোকান। রামপুরা টিভি ভবনের পাশের রাস্তাটিতে প্রতিদিনই সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত কাঁচাবাজার বসতে দেখা যায়।

এ কারণে এ এলাকায় যানজট লেগেই থাকে। একই অবস্থা মিরপুর-সাড়ে ১১ বাসস্ট্যান্ডের। বারবার পুলিশি অভিযানে এখানকার হকারদের উচ্ছেদ করা হলেও আবারও তারা দোকান বসান।

সড়ক নাকি বাসস্ট্যান্ড : কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় রাজধানীর পল্লবীর বর্ধিত আবাসিক এলাকা ও দুয়ারীপাড়া বেসরকারি বাস মালিক কর্তৃপক্ষের দখলে চলে গেছে। সেফটি ও বিহঙ্গ বাস কোম্পানির বাসগুলো অনুমোদনহীনভাবে এলাকার রাস্তাঘাট দখল করে গড়ে তুলেছে বাসস্ট্যান্ড।

এতে এলাকায় প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা, সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র যানজট এবং এলাকাবাসীর চলাফেরায়ও যথেষ্ট সমস্যা হচ্ছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, পল্লবী বর্ধিত আবাসিক এলাকার ঢালু পথে বাসগুলো দীর্ঘ লাইন ধরে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বিহঙ্গ বাস কোম্পানির এক কর্মচারী শফিকুল ইসলাম জানান, একটি বাস কোম্পানির একাধিক মালিক থাকায় মালিকদের পক্ষে ব্যক্তিগত উদ্যোগে আলাদা করে গ্যারেজ বা বাসস্ট্যান্ড করা সম্ভব নয়। সেফটি এন্টারপ্রাইজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন জানান, পুরো মিরপুরে এখনো সরকারি উদ্যোগে কোনো বাসস্ট্যান্ড গড়ে ওঠেনি।

গাউছিয়ায় শতেক জঞ্জাল : গাউছিয়া মার্কেট থেকে এলিফ্যান্ট রোডের বাটা সিগন্যাল মোড় পর্যন্ত সড়কটি অনেক আগেই হাটবাজার ও শতেক জঞ্জালে পরিণত হয়ে আছে।

সেখানে ফুটপাত দখল করে দোকানপাট গড়ে তোলা হয়েছে, বাজার বসেছে রাস্তার অর্ধেকটা দখল করেই।

বাদ যায়নি ফুটওভার ব্রিজ : নগরীর পথচারীদের রাস্তা পারাপারে ফুটওভার ব্রিজ নির্মাণ করা হলেও সেগুলো এখন হকারদের দখলে। ডিসিসি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে রাজধানীতে ফুটওভার ব্রিজের সংখ্যা অর্ধশতাধিক। এর মধ্যে মিরপুর-১০ নম্বর, শাহবাগ ও নীলক্ষেতের ফুটওভার ব্রিজগুলো সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, হকারদের দৌরাত্দ্যে পথচারীরা এখন আর স্বাচ্ছন্দ্যে চলাচল করতে পারছেন না। বিভিন্ন পণ্যের পসরা বসিয়ে হকাররা দখল করে রেখেছেন নগরীর ফুটওভার ব্রিজ।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সিটি করপোরেশনের মালিক সমিতির সহযোগিতা নিয়েই হকাররা সঙ্ঘবদ্ধ হয়ে ফুটওভার ব্রিজের জায়গা দখল করছেন।

মগবাজার টু বাংলামোটর : মগবাজার থেকে বাংলামোটর পর্যন্ত সড়কটির দক্ষিণ পাশ দিয়ে ৪০ ফুটেরও বেশি জায়গা পরিত্যক্ত অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে বছরের পর বছর ধরে। এসব জায়গা ভবিষ্যতে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ব্যবহারের পরিকল্পনা রয়েছে ডিসিসির। কিন্তু এসব জায়গা জবরদখল করে কেউ কেউ বাণিজ্যিক কাজে ব্যবহার করে চলেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। আগে ফুটপাত হিসেবে দোকানপাট গজিয়ে তুললেও ইদানীং বহুতল ভবন গড়ে তোলার মাধ্যমে সে জায়গা জবরদখল করার পাঁয়তারা চলছে।

বেশ কয়েকটি ডেভেলপার কোম্পানি বহুমূল্যের সরকারি জায়গা দখল করলেও বাধা দেওয়ার যেন কেউ নেই।

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.