আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ফুলে ফুলে ঢাকা কবর

রাজধানীর বনানী সামরিক কবরস্থানে কালো সিরামিকের স্মৃতিস্তম্ভ। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় নিহত সেনা কর্মকর্তা ও সদস্যসহ অন্যদের নাম লেখা রয়েছে সেখানে। এ নামফলকের বেদিতেই গতকাল সকাল থেকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সবাই। ফুলে ফুলে ঢেকে যায় স্মৃতিস্তম্ভ। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের পাঁচ বছর পূর্তি ছিল মঙ্গলবার।

দিনটি উপলক্ষে সকাল থেকে সশস্ত্র বাহিনীর পদস্থ কর্মকর্তারা বনানীর সামরিক কবরস্থানে উপস্থিত ছিলেন। সামরিক ও বেসামরিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের উপস্থিতি নির্বিঘ্ন করতে গোটা এলাকায় নেওয়া হয় বিশেষ নিরাপত্তা। সকাল সোয়া ৯টার দিকে স্মৃতিস্তম্ভে নিহতদের স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল আবুল হোসেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন বীর বিক্রম ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, সাবেক রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ, সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূইয়া, নৌবাহিনী প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল এম ফরিদ হাবিব, বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার মার্শাল মোহাম্মদ ইনামুল বারী, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ, পুলিশের মহাপরিদর্শক হাসান মাহমুদ খন্দকার, র্যাবের মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমান এবং নিহত সেনা কর্মকর্তাদের স্বজনরা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

এ ছাড়াও আওয়ামী লীগের পক্ষে কর্নেল (অব.) ফারুক খান, ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলামসহ নেতারা শ্রদ্ধা জানান। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে সিনিয়র নেতারা চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া এবং দলের পক্ষ থেকে নিহতদের কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ করেন। ফুল দেওয়ার পর নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন উপস্থিত সবাই। তাদের স্মরণে দোয়া করা হয়। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির পক্ষে মহাসচিব রুহুল আমিন হাওলাদার শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন।

এ সময় কর্নেল মোয়াজ্জেম হোসেনের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে নীরবে চোখের জল ফেলতে দেখা যায় তার বৃদ্ধ মাকে। দাদির পাশে দাঁড়িয়ে থাকা মোয়াজ্জেমের দুই ছেলের চোখ ছলছল করছিল। তাদের মতো অনেকেই গতকাল যান বনানীর সামরিক কবরস্থানে। শোক, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করেন না-ফেরার দেশে চলে যাওয়া প্রিয়জনকে।

পরিবারের হাতে চেক হস্তান্তর : পিলখানায় বিডিআর জওয়ানদের বিদ্রোহে নিহত সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

গতকাল দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ৪ লাখ ৮০ হাজার টাকার আর্থিক সহায়তার চেক তুলে দেন তিনি। বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকের (বিএবি) পক্ষ থেকে ২০০৯ সাল থেকে প্রতি বছর নিহত প্রত্যেক কর্মকর্তার পরিবারকে এ পরিমাণ অর্থ দেওয়া হচ্ছে। মোট ১০ বছর তাদের এ আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। ২০০৯ সাল থেকে গত বছর পর্যন্ত নিহত সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারকে প্রায় ১৪ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। অনুষ্ঠানে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের স্ত্রী ও নিকটাত্দীয়রা প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে চেক গ্রহণ করেন।

এ সময় প্রধানমন্ত্রীর নিরাপত্তাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সেনাপ্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূইয়া, বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ, বিএবির সভাপতি নজরুল ইসলাম মজুমদারসহ ঊধর্্বতন সেনা কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই নিহত সেনা কর্মকর্তাদের বিদেহী আত্দার মাগফিরাত কামনা করে মুনাজাত করা হয়। পরে প্রধানমন্ত্রী নিহত সেনা কর্মকর্তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কুশল বিনিময় করেন।

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.