আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শ্রীপুরে সহিংসতা : ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক

গাজীপুরের শ্রীপুরে উপজেলা নির্বাচনকে ঘিরে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচনের দিন ভোটাররা ভোটকেন্দ্রে যাবেন কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছে। এদিকে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শনিবার আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ও গুলিবর্ষণের ঘটনায় অস্ত্র ব্যবহারকারী দুই জনকে শর্টগানসহ ১৪ জনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। এদের মধ্যে ২ জনকে গাজীপুর শহর ও ১২ জনকে শ্রীপুর থেকে আটক করা হয়। গাজীপুরে আটককৃতরা হলেন- জেলা শহরের ভুরুলিয়া এলাকার ইব্রাহিম খানের ছেলে মো. মাসুদ খান (৪৩) ও কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া থানার আঙ্গিয়াদি গ্রামের মৃত ফয়জুদ্দিনের ছেলে শাহজাহান খান ওরফে কামরুল (৪০)।

মাসুদ খানকে গতকাল বেলা সাড়ে ১২ টায় গাজীপুরের উত্তর ছায়াবিথী এবং কামরুলকে বিকাল চারটায় রাজেন্দ্রপুর থেকে গ্রেফতার করা হয়। এদিকে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শ্রীপুরে ২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।

গতকাল সন্ধ্যায় গাজীপুর পুলিশ সুপার মো. আব্দুল বাতেন তার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান। পুলিশ সুপার জানান, গ্রেফতারকৃতরা অস্ত্রধারী। এদের রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচ্য নয়।

বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত ছবি ও ভিডিও ফুটেজ দেখে এবং গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে। সংঘর্ষে জড়িত অন্যদের আটকে অভিযান চলছে। জেলা প্রশাসক মো. নুরুল ইসলাম জানান, নির্বাচনী পরিবেশ ঠিক আছে কিনা তা পর্যালোচনার জন্য শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে এক পর্যালোচনা সভা হয়েছে। তিনি বলেন, শনিবারের ঘটনায় যারা প্রকৃত দোষী তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে শনিবার সন্ধ্যা থেকে ২ প্লাটুন বিজিবি শ্রীপুর উপজেলার সড়কগুলোতে টহল দিচ্ছে।

এছাড়া অতিরিক্ত পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে। শ্রীপুর থানার ওসি মো. আমীর হোসেন জানান, শনিবারের ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি, তবে প্রস্তুতি চলছে। ওই ঘটনায় গতকাল সকালে শ্রীপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃতরা হলেন- যুবলীগের কেন্দ্রীয় সদস্য কফিল উদ্দীন মণ্ডল, যুবলীগ নেতা হাবিবুর রহমান জুয়েল, যুবলীগ নেতা হুমায়ুন মোল্লা, শ্রমিক লীগ নেতা ইউসুফ কাজী, ছাত্রলীগ নেতা শেখ সেলিম, নাজমুল, লিটন, কৃষ্ণ, শিপু, ইমরান, সোহেল ও সাগর। উল্লেখ্য, আসন্ন উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে দ্বদ্ধের জের ধরে আওয়ামী লীগ নেতা ইকবাল হোসেন সবুজ ও আব্দুল জলিলের সমর্থকদের মধ্যে শনিবার সকালে শ্রীপুর শহরে দফায় দফায় সংঘর্ষে উভয় গ্রুপের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী আহত হন।

এসময় ছাত্রলীগ নেতা আল আমিনসহ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হন। এ ঘটনায় কয়েকটি মোটর সাইকেল ভাঙচুর ও ৭টি মোটর সাইকেল এবং একটি মাইক্রোবাসে অগি্নসংযোগ করা হয়। পরে পুলিশ টিয়ারসেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

ভোটারদের মধ্যে শঙ্কা: শ্রীপুর বাজারের রম্নমা ডেকোরেটরের মালিক মনির হোসেন বলেন, শনিবার শ্রীপুর বাজারে অস্ত্রের যে ঝন্ঝনানি হয়েছে এর আগে কখনো ঘটেনি। মুহুর্তের মধ্যে অস্ত্রের ঝন্ঝনানি আর মুহুর্মুহু গুলির শব্দে আমরা আতঙ্কিত ছিলাম।

ভোটের দিন ভোট কেন্দে যাব কিনা তা নিয়ে শঙ্কায় আছি। বাজারের রড সিমেন্ট ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, শনিবার বেলা ১১টার দিকে দুই পৰের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, মানুষের দৌড়াদৌড়ি, মুহুর্তের মধ্যে চারদিকে গুলি আর গুলির শব্দ। আমি দোকানটিও বন্ধ করে যেতে পারিনি। পেছনের দরজা খোলে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছি। তিনি বলেন, শ্রীপুরে দলীয় কোন্দল, দুই দলের সংঘর্ষ দেখেছি।

কিন্তু কখনো অস্ত্রের ব্যবহার হতে দেখিনি। শ্রীপুরের রাজনীতিতে এবার অস্ত্রের অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিবেশকে দুষিত করা হয়েছে। ডিম ব্যবসায়ী ভাংনাহাটী গ্রামের আলী হোসেন (৫০) বলেন, আমি শ্রীপুর পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের ভোটার। আমার বাড়িতে ৯ জন ভোটার রয়েছে। খোলা ময়দানে যেভাবে অস্ত্র নিয়ে ধাওয়া করতে দেখেছি ভোটের দিন আমার বাড়ির কেউ এ পরিস্থিতিতে ভোট কেন্দে যাবে না।

ভোটের দিন আইনশৃঙ্খলা ভাল না থাকেেল আমার মতো অনেকেই জীবন দেওয়ার জন্য ভোট কেন্দে যাবে না। শ্রীপুর পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের ভোটার ভ্যানগাড়ী চালক বিলস্নাল হোসেন বলেন, ভোটের দিন নির্বাচনী পরিবেশ ভাল না থাকলে বড়ির মা বোনেরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ভোটকেন্দে যাবে না। ৩ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম লোহাগাছ গ্রামের রিঙ্াচালক ইসমাইল হোসেন (৪৬) বলেন, শনিবারের মতো পরিবেশ হলে আমি ভোটকেন্দে যাব না।

সিলেটে শমসেরের প্রার্থীর বিরুদ্ধে জোটের অবস্থান : নিজস্ব প্রতিবেদক সিলেট জানান, সিলেট সদর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য ও শমসের মবিন চৌধুরীর আস্থাভাজন হিসেবে পরিচিত আবুল কাহের শামীমের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছেন জামায়াত ছাড়া ১৯ দলীয় জোটের শরিকরা। জোটের স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা না করে শামীমের পক্ষ নেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন শরিক দলগুলোর নেতারা।

এর জের হিসেবে শনিবার রাতে ১৯ দলীয় জোটের সভা ডেকে তারা বিএনপির অপর প্রার্থী সদর বিএনপির সাবেক সভাপতি শাহজামাল নূরুল হুদাকে আনুষ্ঠানিকভাবে সমর্থন দিয়েছেন। তবে জামায়াত তাদের দলীয় প্রার্থী দেওয়ায় ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিল না। জোটের ১৮ দলের নেতারা নূরুল হুদাকে সমর্থন দেওয়ায় ভোটের মাঠে একা হয়ে পড়েছেন আবুল কাহের শামীম।

 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.