আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চাই আইনের প্রয়োগ

সুশাসনের অভাবে মানুষ বিশুদ্ধ খাদ্য খাওয়ার অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) প্রকাশিত 'নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণ : সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়' শীর্ষক প্রতিবেদনেও এ বিষয়টির প্রতিই ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন মতে, ঘুষ-দুর্নীতি আর আইনি ফাঁকফোকরের কারণে খাদ্যে ভেজাল বন্ধ কিংবা নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। শাকসবজি, মাছ-মাংস, ফলমূলসহ খাদ্যসামগ্রীতে ভেজাল ও ক্ষতিকারক রাসায়নিকের প্রয়োগ অব্যাহত রয়েছে। দেশের প্রায় সব খাদ্যপণ্য প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান মানবহিভর্ূত নিম্নমানের পণ্য তৈরি করলেও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। টিআইবির প্রতিবেদনে খাদ্যে ভেজাল সমস্যা সমাধানের কিছু প্রতিবন্ধকতাও তুলে ধরা হয়েছে। এর মধ্যে আছে নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ বলবৎ না করা, ভোক্তার সরাসরি মামলা করার বিধান না থাকা ও ভোক্তার অভিযোগ নিরসনে প্রক্রিয়াগত জটিলতা এবং ভোক্তা বা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তির ওপরই নমুনা পরীক্ষার ব্যয়ভার বহনের বাধ্যবাধকতা। দেশের প্রতিটি জেলা ও মহানগরে বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত গঠনে ২০০৯ সালে হাইকোর্টের দেওয়া রায় এখনো বাস্তবায়ন করা হয়নি। ঢাকা মহানগর এলাকা ছাড়া অন্য কোনো এলাকায় বিশুদ্ধ খাদ্য আদালত গঠন না করায় খাদ্যে ভেজালের মাত্রা বেড়েই চলছে বলে টিআইবির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। খাদ্য তদারকি ও পরিবীক্ষণের ক্ষেত্রে জনবলের স্বল্পতাকে অন্যতম সীমাবদ্ধতা হিসেবে তুলে ধরে প্রতিবেদনে বলা হয়, বর্তমানে দেশের ৩১৯টি পৌরসভা ও ১১টি সিটি করপোরেশনের অর্গানোগ্রামে ৩৭০টি স্যানিটারি ইন্সপেক্টরের পদ থাকলেও কর্মরত আছেন মাত্র ৭৮ জন। স্মর্তব্য, খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কঠোর আইন থাকলেও বাংলাদেশে এ ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা রয়েছে। খাদ্যে ভেজাল রোধে ভারতে যাবজ্জীবন, পাকিস্তানে ২৫ বছরের কারাদণ্ড ও যুক্তরাষ্ট্রে সশ্রম কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশে নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩-তে জরিমানা ও শাস্তির পরিমাণ বৃদ্ধি করা হলেও সশ্রম কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়নি। এ ছাড়া মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘসূত্রতার কারণে অনেক ভোক্তা মামলা করতে চান না। খাদ্যে ভেজাল রোধে দেশে যে আইন আছে তারও প্রয়োগ হয় না ঘুষ-দুর্নীতির কারণে। এক্ষেত্রে ইতিবাচক ফলাফল চাইলে সর্বাগ্রে সুশাসন নিশ্চিত করার পদক্ষেপ নিতে হবে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.