মানুষের অভাবে আমি অমানুষ... আগেই বলে নেই, পুরানো গল্পের বই কেনা আমার একটা অভ্যাস, হঠাৎ সেদিন একটা বই কিনলাম রাস্তার পাশ থেকে, সেখানে একটা চিঠির মত পেলাম, ডায়েরীর পাতায় লেখা।
চিঠিটা পড়ে আমি কিছুক্ষণ আনমনে বসে ছিলাম। একটা ছোট গল্প যেন।
প্রিয় কেউ (কাকে চিঠি লিখবো বুঝতেছিনা, তাই অসঙ্গায়িত),
আমি এখন ২১ বছরের পরিপূর্ণ এক যুবক ! ৫ বছর বয়সে আব্বু মারা গেলো, তাই ছোটবেলা থেকে জীবনযুদ্ধ আমাকে খুব অল্প বয়সেই বড় বানিয়ে দিলো। মনে হত জীবনের হিসেবটা খুব সহজ, হয় বাঁচো, নাহয় মরো।
শুরু হল যুদ্ধ, টিকে থাকার, মাথা তুলে দাঁড়াবার। ১৮ বছর বয়সে জীবনযুদ্ধটা মোটামুটি শেষ হল। মনে হল জীবনের সব উত্তর আমার জানা, সবকিছু জানা হয়ে গিয়েছে, কোনও কৌতূহল নেই।
তারপরই নিজের অজান্তে আরেক যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লাম। কেন এই যুদ্ধ ? কেন এই বেঁচে থাকা ? যতই দিন যেতে লাগলো, নিজের ভিতরের অস্থিরতা, হতাশা বাড়তে লাগলো।
কিসের মোহে আমরা এই গতানুগতিক জীবনধারায় আটকে গেলাম ? কেন এই হিংসা-বিদ্বেষ ?
প্রিয় কেউ, যতই দিন যেতে লাগলো আমার ভেতরের উত্তরগুলো মিলিয়ে যেন প্রশ্ন হয়ে ফিরে আসতে লাগলো।
এখন আমার কাছে উত্তরের থেকে প্রশ্ন বেশি।
একটা সময় নিজেকে খুব বেশি matured মনে হত, এখন আর তা মনে হয়না। নিজেকে এখন আমি একটা ছোট বাচ্চাই মনে করি যে বাচ্চাটা অধীর আগ্রহে, অসীম কৌতূহলে নিজের প্রশ্নের উত্তর জানার জন্য পিপাস্মার্ত চাতকের ন্যায় অপেক্ষমান...
আমাকে কি বলতে পারো যে আমার প্রশ্নের উত্তরগুলো আমি কোথায় পাবো ?
মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছে করে এই ধরাবাঁধা জীবনটা রেখে উদ্দেশ্যহীনভাবে চলা শুরু করি। এই জীবনের halfman's algorithm কিংবা differential equation আমার প্রশ্নের উত্তর দিতে ব্যর্থ।
কিন্তু প্রশ্নের উত্তর ও যে আমার জন্য অনেক দরকারি। মাঝে মাঝে আমি অনেক অস্থির হয়ে যাই; খোলা আকাশের নিচে বিস্তৃত প্রান্তরে অবিরাম ছুটে যেতে ইচ্ছে করে।
কিন্তু বারান্দায় গিয়ে অনুভব করি, এই জীবনে খোলা আকাশ নেই, উঁচু কিছু দালান সেই আকাশটা ঢেকে রেখেছে। নেই বিস্তৃত কোনও প্রান্তর, আছে সংকীর্ণ কিছু গলি...
আমি কি এভাবে অসম্পূর্ণভাবেই জীবন যাপন করে যাবো ? এটা কিভাবে মেনে নিতে পারি ? আমি যে কখনো পরাজয় বরণ করতে শিখিনি...
তুমি কেমন আছো? খবর দিও, ভালো থেকো।
লিখেও আমি কিছুটা আনমনা অনুভব করছি !! ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।