আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্ল্যান

(১) তোমাকে ওয়ান্স আপন অ্যা টাইম প্রপোজ করেছিলাম, মনে আছে? সে তো ছোট বেলায়। ‘ছোট বেলা’ ওয়ার্ড টা হার্স হয়ে যায়, তুমি তখন অনার্সে পড়। ওকে। বাট স্টিল ইট ওয়াজ সেভেন ইয়ার্স ব্যাক। মনে আছে তাহলে।

আই হাভ টু কিডস নাও। প্রমির সঙ্গে এখন আমি একটা ফাস্ট ফুডের দোকানে। কিছুক্ষণ আগেই এসেছি। ওর বাসায় যেতে পারতাম। প্রমিও তাই চেয়েছিল।

আমিই ইনসিস্ট করেছিলাম এখানে আসবার জন্য। কথাটা আসলে বাড়ির ড্রইং রুমে বসে বলবার মত কথা না। পরিবেশটা ও জরুরী। ব্যাপারটা প্রমি এখনও সিরিয়াসলি নেয় নি। ইজ দ্যাট অ্যা প্রবলেম? তুমি বা কেন একজন উইডো কে বিয়ে করতে চাইছো।

আমি আমার প্রেম কে বিয়ে করতে চাইছি। লিসেন... নো, ইউ লিসেন। প্রথমতঃ মাথা থেকে তাড়াও, আমি দয়া করে তোমাকে বিয়ে করতে চাইছি। পরিবেশ এখন অনেকটা সিরিয়াস করে ফেলেছি। প্রমির মতামত বোধহয় ‘হ্যাঁ’ সুচক হবে।

এখনও ইমশানাল কিছু ফ্যাচফ্যাচ ফেস করতে হবে। সেটা সমস্যা হবে না আই থিঙ্ক। পুরো প্রিপারেশান নিয়েই এসেছি। দেখা যাক আজকেই পুরোটা সারতে পারি কি না। শোন।

আমি যখন তোমাকে প্রপোজ করি তখন আমি জানতাম না যে তুমি আবির ভাইকে পছন্দ কর। জানলে অবশ্যই করতাম না। জানবার পরে আমি চুপচাপ সরে গেছি। একবারের জন্যও তোমাকে কোন ভাবে ডিস্টার্ব করিনি। প্রমি বেশ করুণ চোখে তাকাল।

ভাল লক্ষণ। কাজ অনেকটাই গুটিয়ে এনেছি। এবার আমার কাজ দারুণ একটা গল্প শোনানো। এতদিন কেন বিয়ে করিনি, আর প্রমিকেই কেন বেছে নিচ্ছি। প্রত্যেকটা শব্দই বেছে বেছে ব্যবহার করতে হবে।

দয়া, করুণা এমন কোন আবহ তৈরি হলেই সব শেষ। তোমার রিফিউজালে কষ্ট পাইনি এমন বলব না। কিন্তু সেটা মেনে নিয়েছিলাম কারণ তুমি সুখী হচ্ছ, দ্যাট ওয়াজ ইম্পরট্যান্ট ফর মি। আর আমার কষ্ট, সেটা সময়ের সাথে সাথে কমে যাবে জানতাম। কিন্তু এখন যদি রিফিউজ কর, আমাকে ডেফিনিট কারণ দেখাতে হবে।

প্রমি এখন বেশ দ্বিধায় পড়েছে। আমি যে ওর ব্যাপারে ইন্টারেস্টেড ছিলাম, ব্যাপারটা ওর জানা। কিন্তু এতদিন পরেও আছি, বিশেষ করে ওর বিয়ের পরেও ব্যাপারটা কমে নি, এ তথ্য এখনও বিশ্বাস করে উঠতে পারছে না। সেটা বিশ্বাস করানো সমস্যা হবে না। আমার মনে হয় তুমি বেশী ইমোশানাল হচ্ছ।

ইমোশানাল আমি সবসময়েই ছিলাম। আমার ফাস্ট প্রায়োরিটি ছিল তোমার হ্যাপিনেস। যার জন্য সেদিন সরে গিয়েছিলাম। আর আজ পাশে আসতে চাই। আর তোমার নিজের জীবন? তুমি কি ওয়াইফ হিসেবে খুবই ডিজাসটারাস হবে? আমি তা বলিনি।

দেখ, বিয়ের বাজারে যদি আমি এখন নামি, খুব খারাপ পাত্রী পাব না। গ্রিন কার্ড আছে, নাসাতে ভালো একটা চাকরি করি, আমেরিকায় নিজের বাড়ী আছে, পাত্র হিসেবে বলতে পার এ প্লাস। এবার আসো আমার কি চাওয়া। এক কোথায় বললে, এমন একজন মানুষ যাকে আমি ভালবাসি বা বাসতে পারব। এদেশে বিয়ের যা সিস্টেম, সে অনুযায়ী ধরে নেয়া হয় অপূর্ব রুপবতী হলে ঘটনাটা স্পন্টেনিয়াসলি ঘটবে।

আমাকে তো তুমি চেন, আমার ক্ষেত্রে কি ব্যাপারটা সেরকম হবে? কি মনে হয় তোমার? বড় করে একটা নিঃশ্বাস টেনে নিল। পরাজয় মেনে নিতে শুরু করেছে প্রমি। প্রতিরোধের দেয়াল প্রায় সবগুলোই ভেঙ্গে ফেলেছি। দু একটা আছে, তবে খুবই নড়বড়ে। সমস্যা হবে না আশা করি।

আমার ছেলেরা? ফ্যান্টাসটিক। আই অ্যাম ডান। আর কোন ঝামেলা মনে হয় হবে না। এখন শুধু দার্শনিক কথাবার্তা। এটা আমি খারাপ পারি না।

দেখ, আমি যা আয় করি, দুইজনের টেক কেয়ার করার জন্য দ্যাটস এনাফ। দ্যা কোয়েসচেন অ্যাবাউট ইমোশানাল আসপেক্ট, সেটা ওদের বাবার সমান হয়তো হবে না। বাট ইনহিউমেন কিছু করব না। আর যদি করি, দেন ইউ আর ফ্রি টু টেক ইয়োর ডিসিশান। যদি মনে কর, আর কোন কিড নিতে চাও না, আমি কিছু বলব না।

আমার একটাই চাওয়া, বাকী জীবন তোমার সঙ্গে থাকা। প্লিজ? (২) আজকে বস যে কেন এতো রাত করালো? কে একজন ভি আই পি আসবে বলে এতক্ষণ বসিয়ে রেখে এখন জানালো আজকে আসবে না। শুধু শুধু তিনটা ঘন্টা বসে থাকা। এখন আবার ট্যাক্সি ক্যাবের ঝামেলা। রাত হলেই তো আবার মলম পার্টির খপ্পর।

বুঝে শুনে নিতে হবে। ইয়োলো গুলো একটু সেফ। ব্ল্যাকে ঝামেলা বেশী হয়। রাত দশটা যদিও ঢাকা শহরে বেশী না, তারপরও আজ বৃষ্টি হওয়ায় একটু ফাঁকা হয়ে এসেছে। রিক্সা নেব? এখন তো যাবে রিক্সা।

নাহ দেরী হয়ে যাবে। আর ভালো লাগে না, দেখি সামনে মাসে, লোন নিয়ে হলেও একটা গাড়ী নিয়ে ফেলব। অন্ততঃ অফিস যাওয়া আসা টায় আরাম পেলে আর কিছু চাই না। ইয়োলো একটা দাঁড়িয়ে আছে। লোকটা বয়স্ক।

দাড়ি আছে। মনে হয় না মলম পার্টির পার্টনার। উঠে পড়ব? দেখি জিজ্ঞেস করে, যায় কি না? চাচা যাবেন? না বাবা। খুবই ভালো লক্ষণ। মলম পার্টির পার্টনার গুলো সাধারণতঃ রাজী হয়ে যায়।

আর কম ভাড়া চায়। অন্য আঙ্গেলে একটা চেষ্টা নিই। গ্যারেজ কোনদিকে চাচা? গ্যারেজ বাড্ডা। আজকের মত শেষ। জমা দিয়া জামু গা।

আমি তো গুলশান জামু। একটু আগায়া দেন। খুব উপকার হয়। বৃষ্টি বাদলার দিন বোঝেন ই তো। ইচ্ছা করেই ‘জামু’ বললাম।

কাজে দেয় কি না দেখা যাক। একটু ধন্ধে পড়েছে মন হচ্ছে। চাচা আয়েস করে একটা সিগারেট ধরিয়েছিল। শেষ করে যাত্রীবিহীন যাওয়ার প্ল্যান ই ছিল হয়তো। প্ল্যান চেঞ্জ করতে পারে।

একটু বাড়ায়া দেওয়ার প্রপোজালটা প্রয়োজনে শেষে দিব। একটু বাড়ায়া দিয়েন। ওহ। রিলিফ। আজকের মত সমস্যা মিটলো মনে হচ্ছে।

এরপরও সাবধানে থাকতে হবে। উঠেই লক টিপে দিলাম। চলতে শুরু করল। রাস্তাঘাট আজকে একটু বেশীই ফাঁকা মনে হচ্ছে। বৃষ্টিটাই সব এলোমেলো করে দিয়েছে।

যে যেভাবে পেরেছে আজকে আগেই বাড়ী পালিয়েছে। তেজগাঁর রাস্তাটা খুবই নির্জন হয়ে গেছে। বৃষ্টি আবার শুরু হল মনে হচ্ছে। হঠাৎ ব্রেক হল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই, সামনের সিটের দুটো দরজা খুলে দুজন ঢুকল।

ড্রাইভার চাচাকে একটানে বাইরে ফেলে দিল। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমার পাশের সিটেও লোক উঠে গেল। সামনের সিটের লোক আগেই লক খুলে দিয়েছে। এতো সাবধান হয়েও লাভ হল না। কি আর করা।

পকেটে যা আছে যাবে। মোবাইল টা একটু দামী, কিছুদিন আগে কিনেছি। একটু রিকোয়েস্ট করতে হবে মলমটা যেন না দেয়। বেজায় জ্বলে। এর আগেরবার পুরো দুই ঘণ্টা কষ্ট পেয়েছি।

কিন্তু ড্রাইভার চাচাকে ফেলে দিল কেন? নতুন স্টাইল মনে হচ্ছে। ছিনতাই এর সঙ্গে ট্যাক্সি ক্যাব লুট। গাড়ী চলছে। আমার পাশের জন যথারীতি মানিব্যাগ বের করে নিয়েছে। ব্রিফকেসটা খুলতে বলল।

মিন্ মিন করে বললাম, অফিসের কাগজপত্র আছে। একটা ঘুসি খেলাম। কথা বাড়িয়ে লাভ নেই। খুলে দিলাম। এদিক ওদিক টাকা খুঁজল।

না পেয়ে বন্ধ করল। বুকের পকেটে হাত দিল। বাইর কর। সুরসুর করে মোবাইল ফোনটা বের করে দিলাম। আর কিছু নেই দেয়ার মত।

ও ঘড়ি আছে। বলার আগেই খুলে দিলাম। মলমের রিকোয়েস্ট টা কি এখন করব? আমার বাম পাশের জন পকেটে হাত দিচ্ছে। মলম বের করছে মনে হচ্ছে। আমি কাউকে কিছু বলব না ভাই, মলম দিয়েন না।

খুব জ্বলে। এমন সময় পেটের ভেতর চাকুটা ঢুকিয়ে দিল। গলগল করে রক্ত বের হতে লাগল। কিন্তু কেন? আমি তো সব কিছু দিয়েই দিলাম। মলম না লাগাতে বলা তো খুব অন্যায় না।

এইটা কি করলেন ভাই? চুপ শালা। আবারো চাকু ঢুকল। উপর্যুপরি আরও কয়েকবার। এখন আর কথা বলার অবস্থায় নেই। আর কিছুক্ষণের ভেতরই বোধহয় মারা যাচ্ছি।

গাড়ীটা বাড়ীর কাছাকাছি চলে এসেছে। এমন সময় চাকু ওয়ালার মোবাইল ফোন বাজল। জ্বি বস। কাম প্রায় কমপ্লিট। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই মরব।

কনফার্ম হইয়া ছাড়ুম। কোন টেনশান কইরেন না বস। একদম ছিনতাই এর মত সাজাইসি। কেউ কিছু সন্দেহ করব না। আর বস, আমেরিকার পার্টিরে একটু ধইরা দিতে কইয়েন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।