আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

র‌্যাব এর নিরপেক্ষতা এবার ধংশের পথে!র‌্যাব থেকে সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা কমানো হচ্ছে

(প্রথম আলো থেকে কপি পেস্ট) র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নে (র‌্যাব) সশস্ত্র বাহিনী থেকে আসা পদস্থ কর্মকর্তাদের সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এসব পদে এখন পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে। পুলিশ সদর দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এ প্রক্রিয়ায় ১৮ নভেম্বর চার পুলিশ কর্মকর্তাকে র‌্যাবের পরিচালক পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। পুলিশ সদরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, র‌্যাব গঠনের সময় নানা কারণে সেখানে পুলিশ কর্মকর্তারা যেতে আগ্রহী ছিলেন না। এ কারণে পুলিশের নির্ধারিত পদগুলো সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা দিয়ে পূরণ করা হয়েছে।

এখন এসব পদে সশস্ত্র বাহিনীর বদলে পুলিশ নিয়োগ করা হবে। তবে র‌্যাবের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা বলেন, গঠনের পর প্রায় নয় বছর র‌্যাব যে প্রক্রিয়ায় চলছিল, তা ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তাদের সরিয়ে পুলিশ নিয়োগ দিয়ে সশস্ত্র বাহিনী বিভাগকে উপেক্ষা করা হচ্ছে। এর ফলে সশস্ত্র বাহিনী থেকে আসা কর্মকর্তাদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হতে পারে। জানতে চাইলে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) হাসান মাহমুদ খন্দকার বলেন, র‌্যাবের কোন বাহিনীর সদস্যসংখ্যা কত থাকবে, তা নির্ধারিত আছে।

সেটা অবশ্যই মেনে চলা উচিত। এখন সেটাই করা হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সূত্র জানায়, ২০০৪ সালে র‌্যাব গঠনের সময় এর জনবলের কাঠামো কেমন হবে, সে ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। এতে বলা হয়, মোট জনবলের ৪৪ শতাংশ পুলিশ বাহিনী, ৪৪ শতাংশ সশস্ত্র বাহিনী (সেনা-নৌ-বিমান), ৬ শতাংশ বিজিবি (অধুনা বিডিআর), ৪ শতাংশ আনসার ও ভিডিপি, ১ শতাংশ কোস্টগার্ড এবং ১ শতাংশ সিভিল প্রশাসন থেকে নিয়োগ দেওয়া হবে। তবে কোনো বাহিনীর কোটায় ঘাটতি দেখা দিলে অন্য বাহিনীর লোক দিয়ে তা পূরণ করা যাবে।

র‌্যাবের কর্মকর্তারা জানান, বাহিনীতে মোট জনবলের মধ্যে ৪২ দশমিক ১৯ শতাংশ পুলিশ এবং ৪০ দশমিক ৪৭ শতাংশ সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য রয়েছেন। র‌্যাব জানায়, র‌্যাবের ১২টি ব্যাটালিয়ন ও সদর দপ্তর মিলে অনুমোদিত পদ আছে নয় হাজার ৭২৭টি। ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত এ বাহিনীতে নিয়োগ পেয়েছেন আট হাজার ৫৩৫ জন। জনবলের কোটা অনুসারে র‌্যাবের মহাপরিচালক ও একটি অতিরিক্ত মহাপরিচালকের পদে পুলিশ কর্মকর্তা আছেন। তবে সমস্যা দেখা দিয়েছে পরিচালক বা অধিনায়কের পদ নিয়ে।

র‌্যাবের অতিরিক্ত পরিচালক কর্নেল মজিবর রহমান ৬ নভেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে লেখা এক চিঠিতে বলেন, র‌্যাবে ২১টি পরিচালকের মধ্যে পুলিশের জন্য সংরক্ষিত কোটা আছে নয়টি। কিন্তু বর্তমানে সেখানে পাঁচজন পুলিশ কর্মকর্তা আছেন। বাকি ১৬টি পদে সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তারা আছেন। তিনি বলেন, এত দিন এসব পদে সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে। এখন সেখানে পুলিশ কর্মকর্তা নিয়োগ করতে হলে সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করেই করতে হবে।

তা না করে নতুন করে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক পদের চারজন কর্মকর্তা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। বাহিনীতে এঁদের সংকুলান করা সম্ভব নয়। সূত্র জানায়, এর আগে পুলিশ বাহিনীর অতিরিক্ত ডিআইজি (চলতি দায়িত্ব) আওরঙ্গজেব মাহবুবকে র‌্যাবের পরিচালক পদে বদলি করা হলেও তিনি যোগ দিতে পারেননি। পরে তিনি খুলনা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার হিসেবে যোগ দেন। র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক কর্নেল মজিবর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, পরিচালক পদের জটিলতা নিয়ে র‌্যাবের মহাপরিচালক মোখলেছুর রহমান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীরের সঙ্গে কথা বলেছেন।

আলোচনার মাধ্যমে এ সমস্যা সমাধান করার চেষ্টা করা হচ্ছে। পুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তারা বলেন, র‌্যাবের ৮৮টি উপপরিচালকের মধ্যে ৩৯টিতে পুলিশ থাকার কথা। কিন্তু র‌্যাব গঠনের পর থেকে আজ পর্যন্ত ওই পদে কোনো পুলিশ কর্মকর্তা যোগদান করেননি। অন্য বাহিনী থেকে আসা লোকজন দিয়ে সব সময় এসব পদ পূরণ করা হয়েছে। একাধিক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, পুলিশ আইন অনুসারে পুলিশ সুপারের পদটি তত্ত্বাবধানকারীর (ইউনিট প্রধান)।

অথচ র‌্যাবের বিধিতে পদটি ইউনিট প্রধানের সহকারীর পদ। পুলিশ সুপাররা ইউনিট প্রধানের সহকারী হলে নিজেদের মর্যাদা ক্ষুণ্ন হবে, এমন মনে করে আজ পর্যন্ত কোনো পুলিশ সুপার এ পদে যোগদান করেননি। এর আগে কাউকে র‌্যাবে বদলি করা হলে তিনি কাঠখড় পুড়িয়ে সেই বদলি স্থগিত করেন, এমন উদাহরণও আছে। পুলিশ অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা জানান, র‌্যাব গঠনের সময় উপপরিচালক পদে পুলিশ সুপার ও সেনাবাহিনীর মেজরদের মর্যাদা একই করা হয়। এ কারণেও ওই সময় পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়।

চারদলীয় জোট সরকারের আমলে পুলিশ কর্মকর্তারা এর প্রতিবাদ জানাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে জমায়েতও হয়েছিলেন। পরে তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ওই পদে পুলিশ কর্মকর্তাদের নিয়োগের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন। এর পর থেকে এখন পর্যন্ত ওই পদে আর কোনো পুলিশ সদস্য যোগ দেননি। পুলিশের দাবি, একইভাবে ৪৬৩টি সহকারী পরিচালকের মধ্যে বর্তমানে ২০৪টিতে পুলিশ সদস্য আছেন। খালি আছে ছয়টি পদ।

উপসহকারী পরিচালক পদ আছে ৭৮০টি। কোটা অনুসারে পুলিশের জন্য সংরক্ষিত আছে ৩৪৩টি। কিন্তু এ পদে পুলিশ সদস্য আছেন মাত্র ১৭০ জন। এসআই ও সার্জেন্টদের পদ আছে এক হাজার ৮৫৫টি। কোটা অনুসারে খালি আছে ২২৯টি।

তবে নায়েক ও কনস্টেবলদের পদ খালির হার অনেক কম বলে জানা গেছে। একইভাবে পুলিশের এসআই পদটি সেনাবাহিনীর সুবেদার (ওয়ারেন্ট অফিসার) পদমর্যাদার হলেও র‌্যাবের ক্ষেত্রে ওয়ারেন্ট অফিসারদের পুলিশ পরিদর্শকের সমমর্যাদায় এনে উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) পদে পদায়ন করার বিধান রাখা হয়। আর উপপরিদর্শকদের (এসআই) সেনাবাহিনীর হাবিলদার/ সার্জেন্টদের সমমর্যাদায় রাখা হয়েছে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.