আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাকরুদ্ধ আমি

ভাষা ধর্ম বর্ণ আর আভিজাত্যে বিশ্ব আজ বহুধা খণ্ডিত। কেউ প্রথম বিশ্বের, কেউ তৃতীয় বিশ্বের। কেউ হিন্দু কেউ মুসলমান কেউবা হিন্দু.....এত জটিলতায় কাজ নেই। আমি মানুষ এবং একজন বাঙালি এটাই হোক আমার পরিচয়। এতেই আমি গর্বিত।

দিনের হিসেবে আজ তৃতীয় দিন শুক্রবার- বুধবার সকাল থেকে বিপন্ন মানবতার যে বিভৎসরূপ টিভির পর্দায় প্রত্যক্ষ করছি তাতে আমি হতবাক এবং বাকরুদ্ধ হযে পড়েছি। আমার ধারণা বেশিরভাগ মানুষই এই লাশের মিছিল দেখে আমার মতো অবস্থার মধ্য দিয়েই যাচ্ছেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এত বড় মানবিক বিপর্যয় আর ঘটেনি। একসাথে এত মৃত্যুর ঘটনা আর ঘটেনি। মৃত্যুফাঁদে আটকে থাকা জীবিত মানুষগুলোর বাঁচার করুণ আকুতি এবং ধ্বংসাবশেষের বাইরে স্বজনের সন্ধান প্রত্যাশী মানুষের অসহায় বিনিদ্র প্রাতীক্ষা এবং আহাজারি দেশের প্রতিটি মানুষের চোখ ভিজিয়েছে এতে কোনো সন্দেহ নেই।

ভবনের ধ্বংসাবশেষে আটকে থাকা অনিশ্চিত জীবন জন্ম দিয়েছে দুটি নবজাতকের- নিয়তির কি নির্মম পরিহাস! মৃত্যুর প্রহর গণনার জন্যই কি তাদের জন্ম? না আমি তা বিশ্বাস করি না। ওরা উদ্ধার পাবে, বুকভরে গ্রহণ করবে দূষিত নগরীর বিষাক্ত বাতাস, চোখ মেলে অনিয়ম, অব্যবস্থা, দুর্নীতি, সংঘাত, সহিংসতাপূর্ণ এক জ্বলন্ত কড়াইয়ে নিজেকে আবিষ্কার করে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে- বেঁচে থাকাটা সত্যিই আনন্দের। কিন্তু এই আনন্দ কেবল তারাই পান যারা মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন। উদ্ধারকারীরা বিপন্ন মানুষগুলোর কৃতজ্ঞ চেহারা দেখে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে আবারও অবলীলায় ঢুকে পড়ে যমরাজের গুহায়। মূলত এই দুই ধরনের মানুষই জীবনের প্রকৃত আনন্দটুকু উপভোগ করেন।

আর আমরা যারা দূর থেকে হা-হুতাশ করি- তারা না বুঝি তাদের কষ্ট না বুঝি তাদের আনন্দ। খামোখাই নিজেদেরকে গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ করার প্রতিযোগিতায় মেতে উঠি। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।