আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শুধুই মালালা নয় শুধুই মালালা নয়!

নিজের বিষয়ে কিছুই বলিবার নাই আসসালামু আলাইকুম, এক নিরীহ পাকিস্তানী বালিকা মালালা ইউসুফজাইয়ের প্রতি গত কয়েকদিন ধরিয়া পশ্চিমা গণ-মাধ্যমের দরদ উত্থিত হইয়া সারা দুনিয়া কা্ঁপাইয়া তুলিতেছে। তহার সহিত পশ্চিমা দুনিয়ার রাজনীতিবিদগণও যুক্ত হইয়াছেন। এখন দেখিতে পাইতেছি আমাদের দেশের গণ-মাধ্যমও পিছাইয়া নাই। পিছাইয়া থাকিবার কোনো কারণও নাই। পাকিস্তানী তালেবানদিগকে এইবার এক হাত দেখিয়া লইবার সুযোগ পাওয়া গিয়াছে।

এই সুযোগ কেহই হাতছাড়া করিতে চাহিতেছে না। প্রগতিশীলতার নকমা গজাইতেছে হাটে-মাঠে-ঘাটে। ঘটনা নিন্দার। সন্দেহ নাই। ঘটনা আতঙ্কের।

অস্বীকার করিতেছি না। কিন্তু প্রশ্ন হইতেছে এই ঘটনা কি শুধু তালেবানরাই ঘটাইতেছে? ২০০১ সাল হইতে আফগানিস্তানের উপর পশ্চিমা ন্যাটো জোটের স্থল ও বিমান হামলায় আফগান শিশু-বালক-বালিকা, যাহাদের বয়স ১৫-এর নিচে, প্রাণ হারাইয়াছে এমন সংখ্যা হইতেছে ১৩,২০০-এর অধিক। সংখ্যাটি ১ নহে, ১০০ নহে ১০০০ নহে। সংখ্যাটি তেরো হাজার। সাদ্দামকে হটাইয়া ইরাকে গণতন্ত্রের পতাকা উড়ানো হইয়াছে।

দুনিয়াবাসী ইরাকের ''গণ-বিধ্বংসী'' রাসায়নিক অস্ত্রের হাত হইতে রেহাই পাইয়াছে। ইরাকে এখন গণতন্ত্রের নহর কুলুকুলু ধ্বনিতে লোহিত সাগরের দিকে বহিয়া যাইতেছে। প্রশ্ন করি : এই গণতন্ত্রের জন্যে কতোজন ইরাকি শিশুকে প্রাণ দিতে হইয়াছে? উত্তর হইতেছে ১লক্ষেরও অধিক। কতোজন মাসুম বালক-বালিকা পিতামাতা হারাইয়া অন্ধকারে অনাহারে দিনগুজরান করিতেছে সেই হিসাব আপাতত চাহিতেছি না। একজন নহে।

একশত জন নহে। এক হাজার জন নহে। দশ হাজার জন নহে। এক লক্ষ শিশু শুধু ন্যাটো-নেতৃত্বাধীন বাহিনীর হামলায় নিহত হইয়াছে। দুনিয়ার বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ ভারত।

মহাত্মা গান্ধীর অহিংস ভারত। সেই অহিংস ভারতের হিংস্র সৈন্যদের হাতে গত চল্লিশ বৎসরে সাত হাজারের অধিক কাশ্মীরি শিশু জীবন দিয়াছে। উহারা কেহই সন্ত্রাসবাদী নহে। তাহাদের অস্ত্রের প্রশিক্ষণ ছিলো না। তাহারা ভারতীয় সৈন্যগণের প্রতি একটি গুলিও বর্ষণ করে নাই।

উহাদের জন্যে কাহারো কোনো ক্রন্দন নাই। উহাদের একজনাকেও বাঁচাইবার জন্য ইংল্যান্ডের হাসপাতাল তো অনেক পরের কথা স্থানীয় হাসপাতালের সামান্যতম সুযোগও পাইয়াছে বলিয়া মানবাধিকার সংস্থাগুলি দাবী করে নাই। মালামা ইউসুফ জাইয়ের কপাল ভালো। সে ভাগ্যবতী। সৌভাগ্যবতী।

তাহার চিকিত্সা হইতেছে এই দুনিয়ার অন্যতম একটি উন্নত দেশে। যাহারা সারা দুনিয়ার মানুষের রক্ত চুষিয়া সম্পদ শোষণ করিয়া এখন নিজেদিগকে সভ্য বলিয়া গর্ব করিয়া থাকে। কিন্তু ফিলিস্তিনি শিশুদের দিকে তাকাইবার কেহ নাই। উহাদের নিজের কোনো দেশ নাই। উহারা মুসলমান।

এই অপরাধে আফগানিস্তান হইতে ইরাক ফিলিস্তিন হইতে কাশ্মীর---সকল দেশের শিশুরা অবহেলিত। উহারা পশ্চিমা দেশের সৈনিকদের আধুনিক সমরাস্ত্রের শিকার। উহাদের জন্য কাঁদিবার কেহ নাই। মালালা ইউসুফজাই বাঁচিয়া উঠুক। কিন্তু সেই সাথে এই দোওয়া করি আফগানিস্তানের শিশুরা যেন বাচিতে পারে।

ইরাকের শিশুরা যেন খাবার পায়। ফিলিস্তিনি শিশুরা যেন পূর্ব পুরুষের ভিটামাটিতে একিদন ফিরিয়া যাইতে পারে। উহাদের জীবন যেন উদ্বাস্তু শিবারে অবহেলা আর অনাদরের ভিতর দিয়া সমাপ্ত না হয়। কাশ্মীরের শিশুরা যেন হাসিতে পারে। পরম করুণাময় আমাদিগকে পশ্চিমা-সভ্যতা নামক শয়তানের হাত হইতে রেহাই দিন।

সকলে ছহি-ছালামতে থাকিবেন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।