আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শহুরে নীলদর্পণ

সেই কবে কোন এক মনিষী বলেছেন প্রেমের স্বাদ নাকি মরনে। তাই বুঝি প্রেমিকাকে পাওয়ার নেশায় ভোগের নেশায় উত্তাল প্রেমিক। কেউ স্বেচ্ছায় মূল্যবান নারীত্ব বিসর্জন দিচ্ছে আধুনিকতার ছোঁয়ায় । কেউ বা আবার উচ্চবিত্তকে মনে প্রাণে ধারণ করতে গিয়ে ডিস্কো ক্লাবে রাতভর মদের নেশায় আধুনিক হওয়ার সকল ধাপ পাড়ি দিচ্ছে। ধনী বাবা মায়ের সময় কোথায় সন্তানের খোঁজ খবর নেয়ার।

বাবা ব্যস্ত ক্লাইন্টকে সময় দিতে গিয়ে আর মা সেতো সোসাইটি ম্যান্টেইন করতেই প্রতিদিন রাত করে বাসায় ফিরেন। বাবা মায়ের এমন অনুপস্থিতিতে ছেলে মেয়েরা বেপরোয়া হয়ে উঠছে। যদি কোন মেয়ে তার মাকে দেখেন বাবার ব্যবসায়িক পার্টনারের সাথে মা সিঙ্গাপুরে ট্যুরে যাচ্ছেন কিন্বা বাবা তার সুন্দরি পিএস’র সাথে অন্তরঙ্গ মুহূর্ত কাটাতে রাত পর্যন্ত অফিস করেন। হয়তো অনেক দিন বাহির থেকেই রাতের খাবারটা সেরে আসেন। অথচ বাবার সাথে রাতে খাবে বলেই ছেলে বা মেয়েটি রাতে না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়ে।

তখন ঐ মেয়েটি বা ছেলেটির মনের যে অবস্থা হয় তা কি বাবা মা’র মনে একবারও আসে। এমনটি এখন আমাদের সোসাইটিতে প্রতিনিয়িত মেলে যে ছেলে বা মেয়ের সাথে বাবা মায়ের দেখা হয়না সপ্তাহ পর সপ্তাহ। ভাগ্যিস ফোনের যুগ ছিল তাই বাবা মায়ের সাথে কথা বলা যায় এমন আপসোস করতেও দেখেছি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছেলে মেয়েদের। অনেকের মনে বাবা মা’ নিয়ে অনেক নেতিবাচক ধারণাও জন্মেছে। বাবা ঘুষখোর বলে মেয়ের মনে যে ঘৃণা স্পষ্ট হচ্ছে তা থেকে উত্তোরণের বুঝি আর কোন উপায় থাকলোনা।

বাবার প্রাসাদসম বাড়ি, দামি গাড়ি কোন মোহই মেয়েকে ধরে রাখতে পারেনি বিধায় ড্রাইভারের সাথে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছে। বংশে চুনকালি মেখেছে বলে মেয়েকে পরিত্যাগও করেছে পরিবার। মেয়েটির সাথে পরিবারের কোন যোগাযোগ নেই। বড়লোকের মেয়েকে পেলে শশুরের সম্পত্তিতে বাকি সময়টা আরাম আয়শে কাটিয়ে দেয়ার যে ভ্রম চতুর ড্রাইভারের ছিল বাস্তবে তাও ভেস্তে গেল বলেই আজ আর তার মনে প্রেম বলে কিছু নেই। নিজের বউয়ের প্রতিও মেলেনা একটু আদর সোহাগ, একটু দরদও উতলে উঠেনা মনের কোণে।

জীবনের সিদ্ধান্তে যে ভুল ছিল তা বুঝলেও মেয়েটির করার কিছু থাকেনা। অভাব অনটনের মধ্যে নতুন অতিথি তার পেটে পৃথিবীর আলোয় আসবে বলে অপেক্ষারত। কিন্তু অনাগত এ শিশুর ভবিষ্যত নিয়ে উৎকণ্ঠিত মা। বাবার এ ব্যাপারে কোন বিকার নেই। এমন সব ঘটনা আমাদের চারপাশে।

সমাজ ব্যবস্থায় আধুনিকতা আজ মোহ, নেশা হয়ে দাড়িয়েছে। কী দিচ্ছে এ আধুনিকতা? কতোটা আধুনিক আমরা হতে পেরেছি? আধুনিকতার সাথে যৌনতার যে সখ্যতা আমরা নিয়ে আসছি, তাতে আধুনিকতা ক্রমেই বেপোরোয়া হয়ে যাচ্ছে। সত্যিই কি আধুনিকতার সাথে বেপরোয়ার কোন যোগসূত্র আছে? নাকি অতি বাস্তবতায় নিজস্ব কৃষ্টি কালচারে অনভ্যস্ত জাতি স্বকীয়তার চাইতে মর্ডানিজমকে বেছে নিচ্ছে! এমন প্রশ্নও নিছক নয়। শহর থেকে শুরু করে গ্রামে গঞ্জে ইভ টিজিংয়ের দৌরাত্ব যে পাগলা ঘোড়ার মতো ছুটে চলছে, কিছুতেই থামানো যাচ্ছেনা। অশ্লীল শব্দ চয়নে আমরা বড়ো বেশি অভ্যস্ত হয়ে পড়ছি।

আজ উঠতি বয়সি মেয়েরা রাস্তায় বের হয়ে যে তীক্ততার মুখোমুখি হচ্ছে, তাতে সভ্যতা বলেতো আর কিছু থাকলোনা। কেন আমাদের এই অধঃপতন? এর গোড়ায় কি আছে, কোথায় যাচ্ছি আমরা? ধর্ষণ-গণধর্ষনের রগরগা সব কাহিনি পত্রিকার শিরোনাম হয়, যা সবার আগে পড়ে নেয়ার পৌরোষিক চেতনা বিভিন্ন রসদ যোগায়। খুন খারাপি নিত্যদিনের চিত্র। সম্পদের লোভে ভাই ভাইকে, ছেলে বাবাকে, মাকে খুন করার যে হিড়িক শুরু হয়েছে তারই বা শেষ কোথায়? স্বামী বদল করা এখন ঘরের আসবাব পত্র বদল করার মতোই হয়ে গেছে। স্বামীর অনুপস্থিতিতে পর পুরুষের সঙ্গে যৌনাচারে লিপ্ত হওয়া এখন মামুলি ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে।

পরকীয়া বহুল প্রচলিত শব্দ, পরকীয়ায় প্রতিক্রিয়া নেই এমন আপ্তবাক্যে তৃপ্ত যুব সমাজের একটি অংশ। নিজ সন্তানের সামনে মা পর পুরুষের সাথে বিছানায় যাচ্ছে, এমন ঘটনা আজ অহরহ। সন্তান দেখে ফেলায় মা গলা টিপে নিজ সন্তান হত্যার ঘটনাও কম নয়। মাদকে আসক্তি হয়ে পড়ছে যুব সমাজ, মাদকাসক্ত হওয়ার কারণে যুবকরা আজ বিপদগ্রস্ত। চুরি ডাকাতি ছিনতাইয়ের সাথে উচ্চ বিত্ত পরিবারের ছেলে মেয়েরা জড়িয়ে পড়ছে।

বিশেষ করে, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া ছেলে মেয়েরা এ ধরনের কর্মে বেশি আসক্ত বলে গোয়েন্দা রিপোর্টে প্রকাশিত। ফেনসিডিলের পর ইয়াবার মরণ কামড়ে আসক্ত বিশাল অংশ। ইয়াবা সিন্ডিকেট ঘিরে কোটি কোটি টাকার গেম হচ্ছে প্রতি রাতে। এ ব্যবসায় জড়িতরা রাতারাতি ধনী বনে গেছেন অনেকে। ইয়াবার জাল ছড়িয়ে পড়ছে শহরের স্কুল কলেজে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে।

ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলগুলোতে টিন এজাররা বেশি ঝুকছে এ নেশায়। কিন্তু পরিবার থেকে শুরু করে রাষ্ট্র পর্যন্ত দৃশ্যত নীরব ভূমিকা পালন করছে, যুব সমাজকে অন্ধকার জগত থেকে বের করার আনার কার্যকরী উদ্যোগ নেই বললে অতুক্তি হবেনা। চিরায়ত প্রথা ভেঙ্গে মটর সাইকেলে ছেলেদের স্টাইলে মেয়েরা বসছে, যা দেখে উৎসুক পথচারীর কাম চোখ লোলুপ দৃষ্টি মেলছে। এমনও দেখা যায় মটর সাইকেলের মাঝখানে মেয়ে বসিয়ে পিছনে ও সামনে পুরুষ বসে হাওয়ায় গা ভাসাচ্ছে। সিগারেটের দোকানগুলোতে নারী ক্রেতা চোখে পড়ার মতো, দুই বা তিনজন বান্ধবী মিলে সিগারেট ধরিয়ে রিক্সা কিংবা প্রাইভেট যানে দিব্যি যাচ্ছে, পারিপার্শ্বিক আবহ তাদেরকে স্পর্শ করেনা, অন্যকে আমলে নেয়ার সময় কোথায় তাদের।

নির্বিচারে যৌন সুড়সুড়িও রাস্তা ঘাটে কম দেখা যায়না। বিবেক কোথায় এমন প্রশ্ন অবান্তর এ শহরে। যাতায়াত করতে গিয়ে চোখ ডান বাম করলে অহরহ মিলছে নানান আপত্তিকর সব ঘটনা। বাসের ভিতরও চলে জুটিদের বেহায়াপনা । প্রেম এক গভীর শব্দ, গভীর এক অনুভূতির জায়গা।

অথচ সেই প্রেমকে উপস্থাপন করা হচ্ছে যৌনতায়। যৌনতা নির্ভর প্রেম আজ ভোগ বিলাসে পরিণত হয়েছে। শিক্ষিত সমাজের ছেলে মেয়েরাই আজ বেশি বেপরোয়া, প্রেমের নামে যথেচ্ছা আজ তাদের ফ্যাশণে রূপ নিয়েছে। প্রেমিক বদলকরাও একধরণের স্মার্টনেস, অনেককে বলতে শুনি ”এক জিনিস আর কতোদিন” কেউ কেউ আবার বলেন ” এক জামা কতোদিন গায়ে দিবো”। সেক্স ভায়োলেশনও আজ অনেকের নিকট শখের বিষয়, কেউ কেউ গ্রুপ সেক্স এ অভ্যস্ত হয়ে পড়েছে।

আগের প্রেমিকের সাথে ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে তাতে কি? এখনো তারা একে অন্যের সাহচার্যে আসে, একান্ত সময় কাটায়। তারপর নতুন প্রেমিকের কাছে যায় আবার তার সঙ্গ নেয়। এভাবে পালাক্রমে দুই পুরুষের মন রক্ষা করতে হচ্ছে অনেককে। এমন ও ঘটছে সেমিস্টারের একটা এসাইনম্যান্ট করার জন্য বন্ধুর সাথে রাত কাটাতে হয়েছে। বন্ধু ভাল ছাত্র তাই ওর মন রক্ষা করেছি বলে প্রেমিককে সাফ জবাব দিল জনৈক একজন সুদর্শনা।

নেশাগ্রস্ত অবস্থায় শহরের রাস্তা থেকে গভীর রাতে একজন বিখ্যাত গায়ককেও উদ্ধার করেছে পুলিশ যা পরদিন পত্র পত্রিকায় সংবাদ শিরোনাম হয়েছিল। মদ্যপ অবস্থায় ধনাঢ্য শিল্পপতির নাইট ক্লাবে মাতলামিতো নিত্যদিনের চিত্র। চলচ্চিত্রের নবাগত নায়িকারা ভাড়ায় শিল্প -পতিদের মনোরঞ্জনে ব্যস্ত নিজেদের ক্যারিয়ারের কথা ভেবে, মিডিয়া পাড়ায় এমন ঘটনাকে কেউ পাত্তা দেয়না। অনেককে বলতে শুনেছি শোবিজে টিকে থাকতে হলে এসব কোন ব্যাপার না। কেউ আবার বেশি রোজগারের আশায় নিয়মিত যাতায়াত করে নিষিদ্ধ পল্লীতে, আবাসিক হোটেলে বহু সুন্দরীদের সংযোজন ঘটছে প্রতিনিয়ত।

স্ট্যাটাস বজায় রাখতে গিয়ে মাস শেষে মাইনায় পোষায়না বলে বাড়তি রোজগারের ধান্দায় অনেকেই নীল কারবারিতে ঝুকছে স্তস্ফূর্তভাবে। পরিবারের চাহিদা মেটাতে গিয়েও অনেকে নিরূপায় হয়ে সমাজবর্হিভূত এসব কাজে যোগ দিচ্ছে। আমাদের পরিবারগুলোও জানেনা বা জানতে চায়না তার মেয়ের এমন কি ইনকাম যে এতো কাড়িকাড়ি টাকা পাঠাচ্ছে প্রতিমাসে। সেসব পরিবারের বাবা মাকে গর্বের সাথে বলতে শুনি ” আমার মেয়ে এতো মেধাবি যে পড়ালেখা শেষ না করার আগেই বড়ো চাকরি পেয়ে গেছে”। আমার পরিচিত এক বন্ধু তার তিক্ত অভিজ্ঞতা বর্ণনা করতে গিয়ে বলেছে” জনৈক এক কলেজ পুড়ুয়া মেয়ের সাথে ভাড়ায় হোটেলে রাত কাটিয়েছে।

মেয়েটি সুন্দরি এবং ড্যাম স্মার্ট। তার অফিসের বসের পরিচিত, বছরান্তে তার কর্মদক্ষতার পারফমেন্সে বস খুশি হয়ে অভিজাত হোটেলে এক রাত থাকা এবং সেই সাথে অল্প বয়স্ক ঐ মেয়েটাকে বস জোগাড় করে দিয়েছিল। মেয়েটিকে প্রথম দেখায় তার পরিচিত মনে হয়েছে কিন্তু মেয়েটির চাল চলন ও কথা বার্তার ধরণ দেখে তার মনে হলো মেয়েটি উচ্চ বিত্ত পরিবারের বা হাই সোসাইটি গার্ল। তাই শত ইচ্ছে সত্ত্বেও মেয়েটির আদি পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। যথারীতি রাত কাটানোর পর খুব ভোরে একটি দামি পাজারো গাড়ি হোটেলের সামনে হাজির হয়।

মেয়েটিও কোনপ্রকার প্রতিক্রিয়া না দেখায়ে খুব সাবলীলভাবেই হোটেল ত্যাগ করলো। এমনকি তার সেল ফোন নাম্বারটি সে চেয়েও নিতে পারেনি, খুব অল্প কথায় বলে গেলো তার বসের নাম। উনি ডাকলেই কেবল দ্বিতীয়বারের মতো ওদের দেখা হতে পারে। ঘটনা ঐখানেই শেষ না। ঐ রাতের পরও মেয়েটিকে বিভিন্ন সময়ে তার অফিসে বিভিন্নজনের সাথে বসের রুমে দেখা গেছে।

কিন্তু তার সাথে চোখাচোখি হয়েছে কেবল, কথা বলা সম্ভব হয়নি। এমনও হতে পারে মেয়েটি তাকে পাত্তা দেয়নি বা দিতে চায়নি। বেশ কিছুদিন পর গ্রামের বাড়িতে গেলে তার জন্য পাশের গ্রামের একটি মেয়ের সাথে বিয়ের প্রস্তাব আছে, মেয়েটির ছবি দেখে তার খটকা লাগে কোথাও দেখেছে বলে মনে হয়। যাই হোক ঘটা করে পাত্রী দেখার সিদ্ধান্ত নেয় বাসা থেকে, মেয়ে ঢাকায় পড়া লেখা করে, অনার্সে পড়ছে বংশ পরিচয় ভালো ইত্যাদি নানান দিক বিবেচনায় নিয়ে তারও ব্যক্তিগত সায় ছিল ঐ বিয়েতে। দিনক্ষণ ঠিক হলো, মুরুব্বিরা আগে ছেলেকে ও তার বন্ধু বান্ধবকে পাঠালো মেয়ে দেখার জন্য।

মেয়ের বাড়িতে বিশাল আয়োজন, মোটামুটি আত্মীয়স্বজন সবাই এসেছে মেয়ের বাড়িতে। শাড়ি পড়া অবস্থায় মেয়েটিকে তার ভাবি নিয়ে আসলো। খাতির যত্ন দেখে মনে হলো ঐদিনই বিয়ে পাকাপাকি হয়ে যাবে। বিপত্তি ঘটলো অন্য জায়গায়, যখন মেয়েটির শাড়ি উঠিয়ে মুখ বের করলো সাথে সাথে বন্ধুটির সারা শরীর থেকে ঘাম ঝরা শুরু হলো। ঘটনার আকস্মিকতায় সবাই অবাক।

ভিতর থেকে কানাঘুষার শব্দও শোনা গেলো। কিন্তু বন্ধুর হতবাকে বিব্রত হওয়া ছাড়া উপায় থাকলোনা। খুব দ্রুত মেয়ের বাড়ি থেকে বের হয়ে আসার পর জানতে পারলাম ঘটনার আসল রহস্য। এ মেয়েটিকেই ও বসের উপহার হিসেবে পেয়েছিল সে রাতে। কিন্তু মেয়েটির কোন বোধদয় ছিলনা, খুব সাবলীল গ্রাম্য মেয়ের মতোই ঘোমটা টেনে বসেছিল।

খুব কষ্টে যেন তার মাথা থেকে শাড়িটা টেনে মুখটা দেখতে পাওয়া গেলো। আর এ মেয়ে নাকি শহুরে কল গার্ল। তার পরের কাহিনী আরও মারাত্মক। মেয়েটি নাকি ঢাকায় ফিরে তার বসের কাছে নালিশ করেছে, মেয়েটির আসল চরিত্র ফাঁস হয়ে যেতে পারে এ চিন্তা থেকে মেয়েটি উদ্বিগ্ন ছিল। পুরো ঘটনা বসের কর্ণগোচর হতে সময় লাগলোনা।

বিধ্বস্ত মন নিয়ে ঢাকায় ফিরে বসের মুখোমুখি হতে হয়েছিল । প্রথমে মেয়েটিকে বিয়ে করার পজেটিভ দিকগুলো বিস্তারিত বর্ণিত হলো, ওকে বিয়ে করলে ভাগ্যের চাকা ঘুরে যাবে। ঢাকায় বাড়ি গাড়ি প্রতিপত্তি সব হবে, রাজনৈতিক নেতাদের সহচার্যে পলিটিক্যাল পাওয়ার পাওয়া যাবে ইত্যাদি নানান দিক। তারপর বিয়ে না করলে তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে, কোটি টাকা মেরে দেয়ার অভিযোগে কোম্পানি তার বিরুদ্ধে মামলা করবে ইত্যাদি নানান ভয় ভীতি। শেষাবধি ও কাউকে না বলে চাকরি ছেড়ে দেশের বাইরে চলে যায়।

এমন ঘটনার তিক্ততা বিস্তৃত অফিস পাড়ায়। আবার এমনও দেখা যায় বস অফিসে ঢুকে তার রুমের দরজা বন্ধ করে দেয়। কেউ ভয়ে বসকে ডিস্টার্ব করেনা, জরুরি কাজ থাকলেও না। কেননা বস বিগড়ে গেলে চাকরি হারানোর সমুহ সম্ভাবনা রয়েছে। বস অফিস থেকে বের হওয়ার সময় পিয়ন কম্পিউটার বন্ধ করতে গিয়ে পড়ে বিপাকে, কম্পিউটারে পর্ণগ্রাফি সাইটে বসের অবাধ যাতায়ত দেখে পিয়ন থমকে দাঁড়ায়, লোকটা পীরের মুরিদ, পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে তার এই কাজ।

বসের প্যান্টের লিঙ্গ বরাবর প্রায়ই ভিজা দেখা যায়,এ নিয়ে অফিসেও তো কম কানাঘুষা, হাসাহাসি হয়না। বসের এহেন কীর্তি এক সময় অফিসে জানাজানি হয়ে যায়, তাই সকলের দৃষ্টি থাকে বস কখন অফিসের যায়, কখন দরজা বন্ধ করে বা বের হওয়ার সময় তার প্যান্টের সামনের অংশে ভিজা কোন জায়গা দেখা যায় কিনা। কখনো কখনো অফিস ফাঁকা থাকলে মহিলা কলিগকে ডেকে বসের মাথা মেসেজের কথাও দু’চারবার শুনা গেছে। অফিসের মেয়েদেরকে মা বলে সম্বোধন করা বসের রীতি। একবার এক মহিলা কলিগ বসের রুমে গেলে দেখতে পায় বস পর্ণ সাইট খুলে তার লিঙ্গ মৈথুনে ব্যস্ত, মেয়েটি কিছু না বলে বাইরে চলে আসে।

কাউকে কিছু বলেনি, মনে মনে অনেক কষ্ট পেয়েছে। বসকে নিজের বাপের মতোই জানতো কিন্তু ওনার এই কাজ। মেলাতে থাকে অনেক ঘটনা। বস কেনো তাদের সাথে কথা বলার ফাঁকে মাথায় শরীরে হাত বুলায়। তাই মেয়ে কলিগরা এক জোট বাঁধে যে করেই হোক বসের কাছ থেকে দুরত্ব বজায় রাখতে হবে।

কেউ কেউ বসের এমন ঘটনা শুনে সুপুরুষ বলে অভিহিত করেছে। কেউ কেউ বসের ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টাও করেছে। কিন্তু বস যাকে ভালো লাগে তার দিকেই টান দেখায়, অন্যজনের দিকে নয়। কেউ কেউ বলে বস তোকে অনেক পছন্দ করে, তুই যদি একটু সিস্টেম করে চলতে পারিস তবে তোর প্রমোশন ঠেকায় কে। আমরা এতো চেষ্টা করছি তবুও বসের কাছে যেতে পারছিনা ইত্যাদি উপহাসমুলক অনেক কথা।

ইদানিংতো বাসে উঠা নিয়ে যুদ্ধ করতে হয়, বিশেষ করে রাস্তার মাঝখানের কাউন্টার থেকে টিকেট কেটে উঠতে গেলে যে পরিমাণে এনার্জি লস হয় তার কথা বাদই দিলাম। বাসের পিছন দিকটায় দাঁড়ানোর জায়গা থাকলেও লোকজন কেন জানি জটলা বেঁধে থাকে সামনের দিকটায় অর্থাৎ মহিলা সিটের আশেপাশে, কেউ কেউ পিছন থেকে হাস্যরস্য করে বলে সামনে মধুতো তাই ওনারা পিছনে আসতে চায়না। অনেকে আবার যেসব মহিলারা দাঁড়িয়ে যায় তাদের গা ঘেষে দাঁড়িয়ে থাকা সুখকর মনে করে। অনেক মহিলা অনেক সময় বাসের ভিতর চিল্লা চিল্লি শুরু করে দেয়,একবারতো এক মহিলা মাঝ বয়সি এক পুরুষের জামার কলার চেপে ধরলো, ঘটনা কি, কেউ কিছু বলছেনা, খালি মহিলা বলছে বদমায়েশ ব্যাটা বদমায়েশির মজা বের করে ছাড়মু আজ তোর। লোকটার আত্মপক্ষ সমর্থনের কোন সুযোগ থাকলোনা।

আশে পাশের লোকগুলোর উত্তম-মধ্যমে লোকটাকে অবশেষে রাস্তার মাঝখানে নামিয়ে দেয়া হলো, বাসের ভিতরে সবায় পকেটমার পকেটমার বলে তিরস্কার করতে থাকলো। এমন অনেক ঘটনা প্রতিদিনকার। মেয়েদের রাস্তাঘাটে এমন বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হয়, অনেকে চুপচাপ থাকলেও আজকাল অনেক মেয়ে প্রতিবাদী হয়ে উঠছে যা নিতান্তই ভালো ছাড়া মন্দ নয়। পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীরা প্রতিবাদী না হলে, একটু কড়া মেজাজী না হলে রাস্তা ঘাটে স্বাভাবিক জীবন যাপনে তারা অথৈব হয়ে পড়ে রইবে। ছোট্র একটি ঘটনা মনে পড়ছে, একদিন বাসে খুব সুন্দরি একটা মেয়ের পাশে স্যুট কোর্ট পড়া এক ভদ্রলোক বসলেন, হয়তো ভদ্রলোকের আলুর দোষ ছিল, ঝিমানোর ভাব করে বার বার মেয়েটির গায়ে হেলে পড়ছে।

মেয়েটি বেশ মজা নিচ্ছে, কন্ট্রাক্টর ভাড়া চাইতে এলে মেয়েটি লোকটিকে ডেকে বলতে থাকে, তুমি কি ঘুমাচ্ছ, ভাড়া দাও। ভদ্রলোকও সাত পাঁচ চিন্তা না করে মানি ব্যাগ থেকে দু’জনের ভাড়া দিয়ে দিলেন। কিছুক্ষণ পর মেয়েটি লোকটার কাঁধে মাথা রেখে তার কোর্টে লিপিস্টিক মুছে দিল। বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করার প্রেমিক প্রেমিকা অপহরণ করে গণধর্ষণে হত্যা করেছে, এমন সংবাদে বোধ হয় আমরা দিন দিন অভ্যস্ত হয়ে পড়ছি। ঢাকার অলিগলিতে অসংখ্য সাইবার ক্যাফে চোখে পড়ে।

কতোটা সাইবার ক্যাফেতে ইন্টারনেট সংযোগ আছে তা বোধ হয় আমাদের কল্পনাশক্তির বাইরে। মহল্লার চিপা চাপায় সাইবার ক্যাফে নামে চলে যৌনাচার, ড্যাটিং স্পট হিসেবে তরুণ তরুণীরা বেছে নিচ্ছে এইসব সাইবার ক্যাফে। আড্ডা নামের একটি সাইবার ক্যাফে নিয়ে রয়েছে এই লেখকের দারুণ অভিজ্ঞতা। শুক্র, শনিবার অফিস না থাকায় এবং নিজের কোন কম্পিউটার না থাকায় একদিন মহল্লার এই সাইবার ক্যাফেতে প্রবেশ করি মেইল চেক করার জন্য । খাতায় রেজিষ্ট্রি করতে গেলে মাঝবয়সী একজন লোক প্রশ্ন করলো, ভাই কি একা, হু বলাতে সরি বলে বললো আসলে আপনাকে তো এখানে কোনও কম্পিউটার দেয়া যাবেনা, কেন জিজ্ঞাসিলে, লোকটি সহজ সরল উত্তর ” আসলে আমাদের এখানে কেবল জুটিরাই বসে’ ক্ষেপে গেলাম এইটা আবার কেমন ধরনের কথা।

এমন সময় ভিতর থেকে চিল্লাচিল্লি আওয়াজ পেলাম, ঘটনা কি? জানতে চাওয়ার আগেই ১৪-১৫ বছরের একজুটিকে ধরে নিয়ে আসলো সাইবার ক্যাফের একজন। তাদের অপরাধ, মেয়েটি নাকি বমি করে দিয়েছে। একথা শুনার পর সাইবার ক্যাফের মালিক পরিস্কার করা বাবদ তাদেরকে ৫০০টাকা জরিমানা করলো। একেবারেই অল্প বয়স্কের জুটি হয়তো বয়োসন্ধিকাল কেবল শুরু হয়েছে, দু’জনই ক্লাশ নাইনে পড়ে। লজ্জায় বেচারাদের মরার অবস্থা।

পড়ে মহল্লার ছেলে পুলের কাছে শুনতে পেলাম, এই সাইবার ক্যাফেতে কম্পিউটার আছে কিন্তু কোন ইন্টারনেট লাইন নেই। সাইবার ক্যাফে থেকে ওরা নীল ছবির ডিস্ক সাপ্লাই দেয়, বিনিময়ে প্রতি ঘন্টা ১০০-২০০টাকা পর্যন্ত নেয়। একান্ত ঘরোয়া পরিবেশে হয় বাড়ির নীচ তলা বা পাঁচ তলার ছাদে এ ধরনের ব্যবসা খুলে বসেছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। একবার একজন সুন্দরী মেয়ে তার বয় ফ্রেন্ডকে নিয়ে এ ধরনের একটি সাইবার ক্যাফে গিয়েছিল, কিছু একান্ত সময় কাটানোর জন্য, ওরা রীতিমতো একটা খুপরির ভিতর প্রবেশ করে, ছেলেটি রিফ্রেশ রুমে ঢুকে পাঁচ মিনিট পর এসে দেখে তার বান্ধবি নেই, অনেক ক্ষণ খুজাখুজির পরও কোন হুদিস পেলনা, মোবাইল ফোনও বন্ধ, সাইবার ক্যাফের কেউ কিছু বলতে পারছেনা। হতাশ হয়ে বসে পড়লো কি হলো কিছুই টের পেলনা।

প্রায় ঘন্টাখানেক পর মেয়েটি উস্কুখস্কু অবস্থায় বের হয়ে আসে, ঘটনা কি বন্ধুটি জিজ্ঞেস করলে মেয়েটি উত্তর না দিয়ে দ্রুত তার পার্টস নিয়ে চলে যায়। এমন সময় সাইবার ক্যাফের নাতোশ নুতুশ একজন ছেলেটিকে বলে ”হাদারাম কি কিছুই বুঝলোনা” ডেকে নিয়ে ছেলেটার গালে কসাইয়া দুই চড় দিয়ে বললো ”শালা তোর মালটাকে মহল্লার দুই ভাই একটু নেড়ে চেড়ে দেখেছে, জানে বাঁচতে চাইলে ভালোয় ভালোয় কেটে পর, নইলে জানটাকে রেখে যেতে হতে পারে। ছেলেটির আর বুঝতে বাকি থাকেনা, কি হয়েছে? এমন অনেককে বলতে শুনেছি সাইবার ক্যাফেতে ছিনতাইয়ের লোমহর্ষক ঘটনা। প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেমেয়েরা যখন নিজেদের নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ে তখন সাইবার ক্যাফের কিছু লোক মানিব্যাগ পার্টস থেকে টাকা সরিয়ে ফেলে, কিংবা কঠিন মুহূর্তে ৫০০-১০০০টাকা দাবী করে, না দিলে পাশের মেয়েটার গায়ে হাত দেয়। বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখায়।

এমনও হয়, অনেক সাইবার ক্যাফে মেয়ে ভাড়া পাওয়া যায়, বান্ধবী ছাড়া গেলে মেয়ের অফার দেয়, ১৬-৪০ বছরের নারীদের দাম বিভিন্ন রকমের, ঘন্টাভিত্তিক চুক্তিতে এরা ভাড়া খাটে। প্রয়োজনে বেডের ব্যবস্থাও থাকে ঐসব সাইবার ক্যাফেতে। শহরের বিখ্যাত এক মহিলা কলেজের অনার্স পড়ুয়া এক মেয়ে নীলক্ষেতে বই কেনার জন্য এক দোকানে দাঁড়িয়ে আছে,এই বই ঐ বই নাড়া চাড়া করছে আর বার বার ঘড়ির দিকে তাকাচ্ছে। দোকানদার খুব খাতির করে কখনো কোল্ড ড্রিকিংস কখনো চা দিয়ে আপ্যায়নে ব্যস্ত, আর মেয়েটি দোকানীকে বলছে "এতো লেট” আর দোকানদার বলছে "আপা এক্ষুনি চলে আসবে” প্রায় আধা ঘন্টা পর একটি গাড়ি থেকে ৬০-৭০ বছরের একজন বৃদ্ধ লোক দোকানের সামনে উপস্থিত। দোকানী উচ্ছ্বাসিত ”এইতো আপা চলে এসেছে” মেয়েটি লোকটার দিকে তাকিয়ে বললো ”ওহ আপনি”।

মেয়েটি লোকটাকে দেখে খুব একটা খুশি হতে পারেনি কিন্তু দোকানী বার বার বলতে থাকলো আপা কোন অসুবিধা নেই, ভদ্র লোক, কোন কিছু নিয়ে সমস্যা হবেনা, সমস্যা হলেতো আমিতো আছি ইত্যাদি নানান সদালাপের পর মেয়েটি রাজি হলো, যাওয়ার আগে শুধু দুই আঙুল উঁচিয়ে কি জানি ইঙ্গিত করলো। দোকানী হেসে গদ গদ। মেয়েটি তার সঙ্গে আনা বই পত্র, কাপড়ের ব্যাগ দোকানে জমা রেখে গেলো। শুধু পার্টসটা নিয়ে গেলো। এ রকম ব্যবসায় নীলক্ষেতের অনেক ব্যবসায়ীই জড়িত।

একজন রাজনৈতিক নেতা যিনি নানান আশার বাণী শুনান সাধারণ জনগণকে, তার এলাকার মানুষজন জননেতাকে দেবতাতুল্যই জানেন। তিনি ঢাকায় থাকেন জীবনে দু’বার এমপিও হয়েছেন। কোন এক নির্বাচনে মনোয়ন লাভের আশায় সব লবিং যখন ফেল করলো তখন তিনি বেছে নিলেন অভিনব কৌশল, তার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া মেয়েকে পাঠালেন বাবার হয়ে লবিং করতে। বাবা এমপি হবে, আর বাবার হয়ে লবিং করতে অসুবিধে কোথায়, এটা যে কেউ করবে,এইটাইতো স্বাভাবিক। দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী এক নেতা নাকি ওনাকে বলেছিলেন’ তোমার মেয়েটা কতো বড়ো হয়েছে, স্যার ইউনিভার্সিটি পড়ে, ফাস্ট ইয়ার।

ভালো বলে নেতা নাকি মনোয়ন প্রত্যাশী নেতার পিঠ চাপড়িয়ে দিয়েছিল। ঐ রাতে ঐ নেতা ফোন করে ওনার মেয়ের সাথে কথা বলেছিলেন এবং বলেছেন শোন তোমার মনোয়নের জন্য তোমার মেয়েই তো যথেষ্ট, যা ভারী মিষ্টি মেয়ে, কণ্ঠটাও তো দারুন মিষ্টি, ওকে কাজে লাগাও মনোয়ন তোমার হয়ে যাবে। ঐ রাতে মনোয়ন প্রত্যাশী নেতার আনন্দের আর সীমা ছিলনা। তার মেয়েকে ডেকে পরদিনের অ্যাসাইনম্যান্ট ঠিক করলেন। মেয়েও বাবার প্রস্তাবে রাজি হলো।

পরদিন মেয়ে খুব সাজুগুজো করে বাবার লবিংয়ের জন্য বের হয়। ঐ নেতার চেম্বারে গেলো, অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর তার ডাক পড়লো ততক্ষণে চেম্বার পুরো ফাঁকা। নেতা ডেকে খুব কাছে নিয়ে মেয়েটার গায়ে হাত দেয়, মেয়েটার শত আপত্তি সত্ত্বেও নেতার ভোগ বিলাসের হাত থেকে তার রক্ষা হলোনা, যা সর্বনাশ হওয়ার তার তাই হলো। চাচার এই কাম, টিভিতে, পত্রিকায় তার নীতি বাক্য আর ভিতরের মানুষটার এতো পার্থক্য। নানান কিছু ভাবতে ভাবতে মেয়েটা বাড়ি পৌঁছার আগেই নাকি মনোয়নের গ্রীন সিগন্যাল তার বাবার কাছে পৌছে যায়।

বাড়ি ফিরে ওর বাবাকে সবকিছু বললে বাবা মেয়েকে শান্তনা দিয়েছিল ”এই সব উপরের সোসাইটিতে কোন ব্যাপার না। যা হইছে সব মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলে দাও, পড়া লেখায় মন দাও। তার বাবা ঐ নির্বাচনে মনোয়ন পেলেও জিততে পারেননি। ক্লাশ নাইনে পড়ুয়া এক মেয়ে তার আপুকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে গেছে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে, ডাক্তার চিকিৎসার নাম করে মেয়েটির ব্রেষ্ট এ হাত দেয়, অল্প বয়স্কা মেয়ে ডাক্তারের আচরণ স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেনি বিধায় বাইরে অপেক্ষমান বড়ো আপুকে বিষয়টি বললে তার আপু ডাক্তারকে জিজ্ঞাস করলে ডাক্তার ক্ষেপে বলতে থাকে ”হ্যা দিয়েছি তাতে কি হয়েছে পারলে কিছু করেন” এমন সোজা সাফটা জবাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া তার আপু হাসপাতালের নির্বাহী পরিচালককে মৌখিকভাবে বিষয়টি জানায়। সেখানেও সে অপমানের শিকার হলে তার বন্ধু টিভি সাংবাদিককে ডেকে ঐ পরিচালকের রুমে নিয়ে যায়।

নির্বাহী পরিচালক ক্যামরাম্যানসহ সাংবাদিককে আটকে রাখে এবং অপদস্ত করার প্রয়াসও নেয়। নিরূপায় মেয়েটি তার ইউনির্ভাসিটির বন্ধুদের ফোনে বিস্তারিত বললে সেখানে বেশ কয়েকজন ছাত্র এসে হাসপাতালে তোলপাড় সৃষ্টি করে, অবস্থা বেগতিক দেখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শেষাবধি অভিযুক্ত ডাক্তারকে সাময়িক বরখাস্ত করে এবং ঘটনা সত্যতা যাচাইয়ে তিন সদস্য কমিটি গঠন করে। ডাক্তারদের দ্বারা সহজ সরল নারীরা লালসার শিকার হচ্ছে প্রতিনিয়ত, কেউ সাহস করে প্রতিবাদ করে, অনেকে বিষয়টাকে এড়িয়ে যায়। গৃহকর্তী ভাইয়ের বিয়েতে গেছে বাসা পুরো ফাঁকা, ছেলে মেয়েরাও মামার বিয়ে উপলক্ষে আগ থেকেই মামার বাড়িতে আনন্দ ফূর্তির জন্য ছুটে গেছে, হাজারো অনুরোধে গৃহকর্তী তার কর্তা বাবুকে তার সাথে নিয়ে যেতে পারেনি। গৃহকর্তার একই জবাব সবাই চলে গেলে বাসা পাহারা দিবে কে? তুমি বরং যাও আমি কাল মূল অনুষ্ঠানে আসছি।

স্বামীর এমন কথায় স্ত্রী বেজায় খুশি। স্ত্রী তার ভাইয়ের বাসায় চলে যায়। একদিকে কর্তাবাবুর কুনজর পড়ে তার বাড়ির কাজের মেয়ের উপর, রাতে খাওয়া দাওয়া শেষে বাবুতো আর ঘুমায়না, খালি পায়চারি করছে একবার এ রুমে একবার ঐ রুমে যায়। কাজের মেয়ে কর্তাবাবুর এমন আচরনে জিজ্ঞাসা করে "খালু আপনার কি শরীর খারাপ, কোন কিছু লাগবে” কর্তাবাবু তাকে তার রুমে আসতে বলে, তার মাথা ব্যথা করছে তাই তার মাথাটা টিপে দিতে বলে। কাজের মেয়ে মালিকের কথা মতো কর্তাবাবুর রুমে যায়, কর্তাবাবুর মাথা ম্যাসেজ করে, বাবু আবার হাত ধরে দেখিয়ে দেয় এইখানে না ওখানে ম্যাসেজ করে।

এমন করতে করতে কাজের মেয়ে বলে ”খালু ঘুম পাচ্ছে, আমি এখন যাই”। কর্তাবাবুর জবাব ঘুম পাচ্ছে এখানে ঘুমা অসুবিধা কোথায়। শুনে মেয়েটি বলে ”খালুর যে কথা, খালাম্মা শুনলে খবর আছে” কর্তাবাবু ”আরে শুনবে কই থেকে, বাসায়তো তুই আর আমি ছাড়া আর কেউ নেই। মেয়েটাকে ফুসলায়ে ফাসলায়ে তার রুমে রাখে, ওয়ার ড্রোব থেকে তার স্ত্রীর শাড়ি , গহনা খুলে মেয়েটাকে পড়ায়। মেয়েটাতো কোনদিন এতো দামি কাপড় চোপড় পড়ে নাই, গহনাতো পড়বে দূরে থাক চোখেও দেখেনাই।

দামি কাপড় চোপড় গহনা পড়ে মেয়েটি যখন আয়নার সামনে দাড়ায়, কর্তাবাবু তখন বলে কিরে তোকে কেমন লাগছে, দেখতো ভালো করে তাকিয়ে। খালু আপনি বলেন, কর্তাবাবুর এক কথা তোকে তোর খালার চেয়েও সুন্দর লাগছে। ছি খালু যে কি কন, খালা কতো সুন্দরি তাতো এ বিল্ডিংয়ের সবায় কয়। আর খালা যদি শুনে তোয় আপনার আমার দু’জনেরই খবর আছে। কর্তাবাবু মেয়েটির সাথে অবৈধ যৌন সম্পর্ক গড়ে তোলে।

এভাবে অনেকদিন তাদের সম্পর্ক চলতে থাকে, মেয়েটা শারিরিক গঠন দিন দিন বদলে যাচ্ছে। একদিন ঐ বাড়ির বড়ো ছেলে ইন্টারমিডিয়েট ২য় বর্ষের ছাত্র, বাসায় কেউ নেই, সে তার রুমে কম্পিউটারের পর্ণছবি দেখছে, হয়তো মনের ভুলে দরজা লক করতে মনে নেই তার। কাজের মেয়েটি ভাইজানের জন্য চা নিয়ে যায়, ভাইজান নীল দৃশ্যে উন্মত্ত। মেয়েটি রুমে প্রবেশ করা মাত্র ছেলেটি জোর করে কাজের মেয়ের সাথে যৌনতায় মজে, মেয়েটি শত চেষ্টা করে তার হাত থেকে রেহাই পেলনা। এভাবে দিনের পর দিন পালাক্রমে বাপ ছেলের মনোরঞ্জনে কাজের মেয়ে ব্যস্ত।

বাপ ছেলে দু’জনেই নানান ছুতোয় বাসা ফাকা করার তালে থাকে, একদিন ছেলে তার বাপের সাথে মেয়েটির এমন কীর্তি-কলাপ দেখে ফেলে। ইতিমধ্যে মেয়েটি সন্তান সম্ভবা হয়ে পড়ে, দু’জনকেই বলে তার পেটে সন্তান আসছে। মেয়েটি নিশ্চিত না এ সন্তান কার,এমন অবস্থায় বাপ ছেলে দু’জনই কৌশলে মেয়েটিকে বেড়ানোর নাম করে ঢাকার বাইরে নিয়ে যায়, পথের মধ্যে মেয়েটিকে শ্বাস রুদ্ধ করে মেরে ফেলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়। তার পরের ঘটনা জানা যায়নি। মেয়েটি যদি বেঁচে থেকে থাকে তবে তার ঔরষজাত সন্তানের জন্ম পরিচয় কেউ জানবেনা।

কার সন্তান গৃহ কর্তার না তার ছেলের এ প্রশ্নেরও সঠিক কোন উত্তর সন্তানের মায়ের কাছে নেই। এমন ঘটনা অনেকই ঘটছে ক’টারই খবর বের হয় কাগজে, এমন হতাশার কথাও শোনা গেছে গৃহপরিচারিকাদের কাছ থেকে। বাংলাদেশের এক নামকরা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরিক্ষা দিতে এসে এক বড় ভাইয়ের সাথে পরিচয় ঘটে মৌমিতার । পরীক্ষা দেয়া থেকে শুরু করে ভর্তি পরীক্ষার টুকিটাকি সবকিছু ভাইয়ার মাধ্যমে জানতে পেরে তার খুশির কোন অন্ত ছিলনা। বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির হওয়ার চান্স পেয়েছে এমন সুখকর খবরটিও একদিন ভাইয়ার মোবাইলের মাধ্যমে জানতে পেরে দারুন উল্লাসিত মৌমিতা।

ঢাকা আসতে হবে, ভর্তি হওয়ার মানসিক ও আর্থিক প্রস্তুতিও পুরোদমে নিতে শুরু করে, মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান হওয়ায় আগ থেকেই ও কি কি প্রস্তুতি নিতে হবে তা ঠিক করে রাখে। সুবর্ণদিনের অপেক্ষায় মৌমিতা, কবে ঢাকা যেতে হবে তা ভাইয়াই বলে দিবে । ইতিমধ্যে ভাইয়ার সাথে ফোনালাপ চলতে থাকে, ভাইয়ার মনমানসিকতা দেখে তার ভালো লাগে, মনে মনে ভাবে ভাইয়া বুঝি তাকে পছন্দ করে, নইলে ইউনির্ভাসিটিতে কি মেয়ের অভাব, কতো মেয়ে চাইলেই তো একটা জুটায়ে নিতে পারত। নানান চিন্তা আসে মাথায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ হবে তাও আবার পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাবতেই গা শিউরে উঠে। চারিদিক থেকে কতো লোক আসে, মেয়ের প্রশংসায় মৌমিতার বাবা পুলকিত।

গ্রামে তার যেন আলাদা কদর, বান্ধবীরা কলেজের শিক্ষকরা মৌমিতার ভুয়সী প্রশংসায় মত্ত। একদিন সন্ধ্যায় মৌমিতার ফোন আসে, কালই তাকে ঢাকা যেতে হবে ভর্তি হওয়ার জন্য, কখন গাড়িতে উঠবে কোন গাড়িতে আসবে তা যেন তার ভাইয়াকে জানায় তার অনুরোধও ছিল ফোনে। মেয়েটির ভর্তি হওয়া থেকে শুরু করে সব সহায়তাই বড়ো ভাই করে দিয়েছে। লবিং করে হলে সিটের ব্যবস্থার না হওয়ার কারণে ইউভার্সিটির স্টাফ কোয়ার্টারে সাবলেটের ব্যবস্থাও বড়ো ভাই করে দেয়। হরেক রকমে রান্না বান্না করে ভাইয়ার হলে পৌছে দেয়া ছিল তার নিত্যদিনের কর্ম, স্বপ্রণোদিত হয়েই মৌমিতা এসব করেছে কৃতজ্ঞতার বোধ থেকে।

ভালোই চলছিল, ইতিমধ্যে ভাইয়াকে নিয়ে মৌমিতা তার গ্রামের বাড়িতেও বেড়াতে গিয়েছে। বেড়াতে এসে গ্রামের বাড়িতে মৌমিতাকে প্রেমের অফার দেয়, গ্রাম সুন্দর, গ্রাম তার ভালো লাগে, জন্ম শহরে হওয়াতে খুব একটা গ্রামে যাওয়া হয়নি। তবে বাবার কাছে দাদীর বাড়ির অনেক গল্প শুনেছে। তাই তার ইচ্ছে গ্রামে বিয়ে করার ইচ্ছা, মৌমিতাকে তার অনেক ভালো লেগেছে প্রথম দিনই, তাই ও তার জন্য পাগল । মৌমিতা তুমি কি তা বুঝনা, আমাকে বিশ্বাস করো, ঠকবেনা, প্রয়োজনে আমি তোমার বাবা মাকে বলবো, তুমি একটা কিছু বলো, মৌমিতা চুপ থাকে শুধু এই টুকুই বললো, বাবা মাকে এখনই বলার প্রয়োজন নেই।

আমরা মিশতে থাকি, তারপর পড়ালেখা শেষে ফ্যামিলিকে জানানো যাবে। মৌমিতার কাছ থেকে গ্রিন সিগন্যাল পাওয়ার পর, তারা ক্যাম্পাসে ফেরে, সেদিন থেকেই শুরু হয়ে ডেটিং, বন্ধুত্বের সম্পর্ক শারিরীক সম্পর্কে টার্ন নেয়। এভাবে চলতে থাকে অনেকদিন। একদিন বেড়ানোর নাম করে মৌমিতাকে নিয়ে যায় ঢাকা থেকে অনেক দূর, সাথে তার বয়ফ্রেন্ডের দুই বন্ধু, চারজন মিলে বেড়াতে গেলো, যে গেস্ট হাউজে ওরা উঠছে, সেখানে মাত্র দুইটা রুম,একটা রুমে মৌমিতা, আর অন্যরুমে ওরা। প্রথম রাত ভালোই কাটলো, সারাদিন ঘুরাঘুরির পর দ্বিতীয় রাতে ঘটলো মৌমিতার জীবনের নিকৃষ্টতম ঘটনা, গেস্ট হাউজের পাহারাদার, বাবুর্চি কেউ নেই।

কেবল ওরা চারজন, বয়ফ্রেন্ডটি প্রথমে মৌমিতার রুমে প্রবেশ করে, তার সাথে জৈবিক ক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর মৌমিতাকে সেক্স উত্তেজক ট্যাবলেট খাওয়ায় তারপর পালাক্রমে বাকিরাও মৌমিতার সাথে যৌন মিলন করে এবং সেদৃশ্য মোবাইল ক্যামেরায় ধারণ করে। মৌমিতার যখন সেন্স ফিরে আসে তখন বুঝতে পারে তার জীবনের উপর দিয়ে কি ঝড় বয়ে গেছে। মৌমিতা এই নিয়ে উত্তেজিত হলে তার বয়ফ্রেন্ড ক্যামেরায় ধারণ করা ভ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।