আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সোনালি নয়না-৩

এটা আমার রাজত্ব অভ্যাস টা খারাপ হয়ে যাচ্ছে রাসিদের। প্রতিদিন সকালে উঠছে ও। এমনকি কোন কাজ না থাকলেও। প্রতিদিন সকালে সেই সোনালি নয়না যে পথ ধরে আসে সেই পথে গিয়ে উকি ঝুকি মারা এখন ওর অভ্যাস। রুমমেট রাও বিরক্ত ওকে নিয়ে।

কারন বেশিরভাগ সময় রুমমেট দের নিয়ে গিয়েই দারিয়ে থাকে সে রাস্তায়। সেদিন এক রুমমেট কে ঘুম থেকে তুলেই রওনা দিয়েছিল সে। সকালের প্রাকৃতিক কার্যকলাপ টাও সারতে দেয়নি তাকে। পরে বাধ্য হয়েই রাস্তার পাশে দাড়িয়ে কর্মসম্পাদন করতে হয়েছিল তার। আজ ক্লাস আছে।

ইস্ত্রি করা শার্ট টা গায়ে চড়াল রাসিদ। রুমমেট এরও ঘুম ভাংল এসময়। শরিফুল (রাসিদের রুমমেট) জিজ্ঞাসা করল, ‘কি ব্রাদারু, মেয়ে কি পটে গেল নাকি? ডেটিঙে যাচ্ছেন মনে হয়?’ ‘আরে না না, এমনি একটু শার্ট ইদানিং ইস্ত্রি করছি। কেন খারাপ লাগছী নাকি?’ অপ্রস্তুত হাসি হেসে জবাব দিল রাসিদ। ‘নারে ভাই, এমনি মনে হইল তাই বললাম।

তবে আজ মাইয়ায় নির্ঘাত আপনার প্রেমে পরে যাবে’। টিপ্পনী কাটল শরিফুল। রাসিদ ওই কথায় মনে মনে খুশি হল বটে, তবে কিছু না বলেই বেরিয়ে এল। বাসা থেকে বাস স্ট্যান্ড কাছে। ৩ মিনিটের পথ।

রাসিদ প্রতিদিন আগে আগে বের হয়। সোনালি নয়নার হাটার ধরন টা খুব ভাল লাগে তার। কথায় আছে, পিরিতের কাউয়া দেখতে সুন্দর। এই প্রবাদ টা রাসিদের ব্যাপারে খুব খাটে। স্ট্যান্ডে পৌঁছে রাসিদ দেখল আজ আগে আগেই এসেছে সোনালি নয়না।

সাজগোঁজ করেছে হালকা। তাতেই রাসিদের মাথা আর ১৮০ ডিগ্রী ঘুরে গেল। সত্যই তাকে স্বর্গের অপ্সরীর মত লাগছিল। কপালে টিপ, ঠোঁটে হালকা লিপস্টিক... এককথায় চরম একটা অনুভুতি খেলে যাচ্ছিল রাসিদের মনে। কাছে গেল রাসিদ।

‘কেমন আছ?’ জিজ্ঞাসা করল রাসিদ। মেয়েটি তার ট্রেডমার্ক হাসি দিয়ে বলল ‘ভাল আছি। আপনি কেমন আছেন?’ রাসিদ উত্তর দিল, ‘ভাল’। রাসিদ অনুভব করল তার পা কাপছে। আবার গলা দিয়েও কন স্বর বের হচ্ছেনা।

মন থেকেও কন কথা আসছেনা। জিবন্ত একটা মূর্তির মত হয়ে গেল সে। ‘নার্ভাস হয়ে গেলাম নাকি?’ মনে মনে ভাবতে লাগল সে। ‘বাস কখন আসবে বলতে পারেন?’ মেয়েটির কথায় সম্বিত ফিরল তার। ‘এইত্ত আর ৪-৫ মিনিটের মধ্যেই আসবে।

কেন, অপেক্ষা করতে কি খারাপ লাগছে?’ রাসিদ বলেই মনে মনে হতচকিত হয়ে গেল। ‘আরিব্বাস দারুন ডায়ালগ হল তো, খিলাড়ির খেল তাহলে শুরু হচ্ছে’। মনে মনে ভাবল রাসিদ। সোনালি নয়না বল্ল,’না না খারাপ লাগবে কেন, সকাল টা খুব সুন্দর তাইনা?’। রাসিদ বলল, ‘হ্যা’।

আর মনে মনে বলল ‘তুমি পাশে আছ বলেই সকালটা এত সুন্দর!’ বাস চলে এল এরই মধ্যে। বাসে উঠে নিজের নির্ধারিত কমিতির সিটে বসল রাসিদ। মেয়েটা কাছাকাছিই বসল। বাইরের দিকে তাকিয়ে রইল মেয়েটা মুগ্ধ চোখে। যেন প্রকৃতি আজ সেজেছে অপরূপ সাজে।

রাসিদ তাকিয়ে রইল সোনালি নয়নার দিকে। যেন প্রকৃতি তাকে সাজিয়েছে নিজের হাতে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।