মানুষের জিন পেটেন্ট করা যাবে কিনা এ নিয়ে অনেকদিন ধরে আলোচনা হচ্ছিল। অবশেষে তার অবসান হল। ইউএসএ সুপ্রিম কোর্ট মানুষের জিন পেটেন্ট করার উপর নিষেদ্ধা জারি করেছে গতকাল ১৩ই জুন, ২০১৩। আদালতের ভাষ্যমতে প্রকৃতিতেই পাওয়া যায় এমন জিনিস পেটেন্ট করা যাবেনা! কোর্ট এর মতে, জিন হল DNA এর একটা ক্ষুদ্র অংশ যা প্রকৃতিই বিদ্যমান, আর প্রাকৃতিক কোন জিনিস পেটেন্টের যোগ্য নয়। তাই এই নিষেদ্ধজ্ঞার কারনে মোটামোটি ৫০০০ জিন পেটেন্ট এবং/পেন্ডিং থেকে সরে গেল।
জিন পেটেন্ট নিয়ে বেশ মাতামাতি হয়েছে মিরিয়াড নামে একটি কোম্পানিকে নিয়ে যারা মহিলাদের স্তন ক্যান্সার ও ওভারিয়ান ক্যান্সারের জন্য দ্বায়ী BRCA1, BRCA2 -- নামে দুটো জিন পেটেন্ট করেছিল। যার কারনে তারা এক চেটিয়া ভাবে ব্যবসা করে যাচ্ছিল এদুটি ক্যন্সারের ডায়াগনস্টিক টেস্ট এ। এদুটি জিন বিশেষভাবে আলোচনায় এসেছিল অ্যাঞ্জেলিনা জোলিকে কেন্দ্র করে, যার BRCA1 জিনে ত্রুটি (মিউটেশন) ছিল—এবং তার দুটি স্তন কেটে ফেলে দিতে হয়েছে। জেনেটিক টেস্টিং করেই তার ক্যান্সার এর রিস্ক ~৯০% ধরা হয়েছিল। সিম্পল একটা জেনেটিক টেস্ট করতেই তার খরচ হয়েছল ৩০০০ ডলার, কারন এই টেস্টটি পেটেন্ট করা ছিল মিরিয়াড কোম্পানির।
এভাবে যদি সবাই জিন পেটেন্ট করে রাখে তাহলে জেনেটিক টেস্টিং করে অগ্রীম স্বাস্থ্যসেবা নেয়া প্রচন্ড ব্যয়সাপেক্ষ হয়ে যাবে।
তবে আশার কথা হচ্ছে কৃত্রিমভাবে তৈরী DNA পেটেন্ট নিয়ে কোন নিষেদ্ধাজ্ঞা দেয়া হয়নি। আর মেডিসিন হিসেবে জিন থেরাপি ব্যাবহার হয়ে আসছে অনে আগে থেকেই খুব স্বল্প পরিসরে।
মিরিয়াড কোন জিন আবিষ্কার করেনি, এটা মানুষের জিনোমের ভিতরেই ছিল। এ নিষেদ্ধাজ্ঞার কারনে বিজ্ঞানীরা নির্ধিদ্বায় জেনেটিক টেস্ট করাতে পারবেন বা গবেষনা করাতে পারবেন, মামলা হবার কোন ভয় থাকলো না।
আর জীব বিজ্ঞান গবেষণা জনগনের ট্যাক্সের টাকায় হয়েই থাকে, আর পাবলিকের টাকা দিয়ে জিনিস আবিষ্কার করে পাবলিককে ব্যবহার করতে না দেয়া অন্যায়! সকল মনোপোলির বিনাশ হউক!
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।