লেখতে পারি না ভাল কিন্তু পড়তে ভালবাসি
ঐশ্বরিয়া নামে আমাদের একটা হিন্দু বান্ধবী ছিল। সে দেখতে ছিল সুন্দরী। আমরা তার সঙ্গে প্রেম করতে চাইলে সে পাত্তা দিতো না। তার মত এত পরিপাটি মেয়ে আমি কোন দিন দেখি নাই। হাতে চুড়ি পড়তো।
চুল গুলো লম্বা আর কালো ছিল। কিন্তু মেয়েটা ছিল খুব মেজাজী। পছন্দ হলেও সামনা সামনি তাকে লাভ ইউ বলার মত সাহস কারো ছিল না।
ঐশ্বরিয়াকে আমি ভালবাসতাম। আমি একলা না।
বন্ধুদের অনেকেই বলতো ঐশ্বরিয়াকে না পেলে বাঁচবে না। আমরা যখন গলির মোড়ে আড্ডা দিতাম চেয়ে চেয়ে দেখলাম, বুকে আন্দোলন দিয়ে মেয়েটা চলে যাচ্ছে। তার জুতা ছিল হিল। পায়ে লাল নেইল পালিশ। ওকে দেখতে নাকি প্রীতি জিনতার মত লাগতো।
তার বাবা ছিল উকিল। উকিলের অনেক দাপট। ইস্কুলে যাবার পথে আমরা দাঁড়ায়ে বিড়ি টানতাম। তখন পাড়ায় ওরা ছাড়া আরো কিছু হিন্দু মেয়ে ছিল। আমরা হিন্দু মুসলমান মিলে মিশে থাকতাম।
কিন্তু হিন্দুদের প্রতি একটা দূর্বলতা ছিল আমার। একদিন বৃষ্টি হয়েছিল। আমি বাসায় আসার পথে দৌড়ায়ে আসার সময় ঐশ্বরিয়ার বাসার সামনে দাঁড়ায়ে ছিলাম। লজ্জা কাজ করতো বলেই তার বাড়ির ভিতরে ঢুকি নাই। এমন ঝড় বৃষ্টি যে আমি গেট খুলে ভিতরে ঢুকে গিয়েছিলাম।
মেয়েটার মা সিঁদুর দিয়ে থাকতো। সে আমাকে ডেকে বলেছিলো, খোকা তুমি একটু ভিতরে আসো। বাইরে তো অনেক ঠান্ডা। আমি তখন ভিতরে ঢুকলাম। বুকের ভিতর ঢিপ ঢিপ করতে লাগলো।
আমাকে তখন তার মা জিজ্ঞেস করলো তুমি এখন কি করো। বললাম ইন্টারমিডিয়েট পাশ করেছি।
ঐশ্বরিয়ার একটা ছোট বোন ছিল ক্লাস এইটে তার জন্য টিচার খুঁজছিল । আমার সঙ্গে কথা বলে ওর মা বলেছিল যে আমি কি ঐশ্বরিয়ার ছোট বোনটাকে পড়াতে পারবো। আমি এত ভাল সুযোগ পাবো ভাবতেই পারি নাই।
রাজি হলাম। এর পর সপ্তাহে পাঁচ দিন ওদের বাসায় পড়াতে পারি। ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে আমার দেখা হয়। দেখি চোখগুলো আঁকা, গোলাপী রঙের জামা পরে ঘুরছে। বাসায় সে ওড়না পরতো না।
আমার চোখে তার দিকে তাকিয়ে লজ্জা লাগতো।
ঐশ্বরিয়ার ছোট বোনের নাম ছিল ঐশ্বর্য। সে দেখতে ছিল তার মায়ের মত কালো। দেখতে ভাল না। খুব চঞ্চল কিন্তু তাকে দেখে আমার ভাল লাগতো না।
ঐশ্বর্য একদিন পড়ানোর সময় আমাকে বলেছিল সে আমাকে ভালবাসে। একটা কাগজে সে আই লাভ ইউ বলেছিল কিন্তু আমি ঐশ্বরিয়া ছাড়া কাউকে ভালবাসতে পারবো না।
আমি ঐশ্বর্যকে গম্ভীর ভাবে বলেছিলাম যে এসব আমার পছন্দ না। ক্লাস এইটে পড়া মেয়ে ভালবাসার কি বোঝে? একদিন ঐশ্বর্য আমাকে একটা চিঠি দিয়েছিল। চিঠিতে ঠোটের কিস করার ছবি ছিল।
আমি টিউশনীটা ছেড়ে দিতে চাই। কেননা ঐশ্বরিয়ার সঙ্গে আমার তেমন দেখা হতো না। উপরন্তু তার বোন আমার দিকে যাচ্ছে।
ঐশ্বর্য আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল আপনি কি কাউকে লাভ করবেন না? আমি বলেছিলাম তোমার বাড়ির একজন কে আমি পছন্দ করি।
কি নাম? ঐশ্বরিয়া।
মানে বড়দি? শুনে মূহুর্তে ঐশ্বর্যের মাথা খারাপ হলো। দিদিকে কেন ভাল লাগে ফর্সা বলে? সুন্দর বলে। ওর তো অনেক জনের সাথে সম্পর্ক। ছেলেদের কে সে ঘুরায়। তবুও তাকে ভালবাসবেন? গত মাসে মিলু ভাইয়া কত কেঁদেছে তাও।
তারপর সে বলেছিল যে আসলে ঐশ্বরিয়া দত্তক মেয়ে। আসল বাবা রেখে গেছে। অনেক বদনাম করেছিল ঐশ্বরিয়াকে নিয়ে.।
ঐশ্বর্য এক সময় আরো বড় হয়েছিল। কলেজে গিয়েছে।
ভার্সিটিও। সে খুব রাগ হয়েছিল ওকে পাত্তা না দেবার জন্য। আমাকে সে বলতো সুন্দর বড়ো না ভালবাসা। আমি মনে মনে ভাবতাম সুন্দরের জন্য ভালবাসা থাকা অসুন্দরের ভালবাসার কোন দাম নাই। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।