পাবনার পাকশীতে রেলওয়ে এলাকায় ৩৩ বিঘা জমির ওপর নির্মিত ‘পাকশী রিসোর্ট’ উচ্ছেদ অভিযান আজ মঙ্গলবার সকালে শুরু হলেও এক ঘণ্টার মধ্যে রেলসচিবের নির্দেশে তা স্থগিত হয়ে গেছে।
১ সেপ্টেম্বর ঈশ্বরদীতে গিয়ে যোগাযোগ ও রেলমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ ও রেলওয়ের জায়গা দখলমুক্ত করার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
আজ অভিযানের প্রথম দিনে রিসোর্টের মূল ফটক, প্রধান ভবনের পশ্চিম অংশ এবং আরেকটি ভবনের পূর্ব অংশ ভাঙা হয়। পশ্চিম দিকের সীমানাপ্রাচীরও ভাঙা হয়।
রেলওয়ে ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এই জমি নিয়ে অনেক দিন ধরে পাকশীর ব্যবসায়ী আকরাম আলী খানের সঙ্গে রেলওয়ের টানাপোড়েন চলছে।
বিষয়টি নিয়ে আদালতে মামলা হয়। ২০০৮ সালে উচ্চ আদালত এই জমি রেলওয়ের বলে রায় দেন।
স্থানীয় লোকজন জানান, এর আগে দুই দফা এই জমি থেকে রিসোর্ট উচ্ছেদের উদ্যোগ নেওয়া হলেও রেলওয়ের একশ্রেণীর কর্মকর্তার গাফিলতির কারণে তা সফল হয়নি।
রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, পাকশী বিভাগীয় রেল কর্তৃপক্ষ আকরাম আলী খানকে মালামাল ও স্থাপনা সরিয়ে নিতে ৫ সেপ্টেম্বর নোটিশ দেয়। এ আগে ১ সেপ্টেম্বর রেলমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ঈশ্বরদীতে গিয়ে পাকশী রিসোর্ট পরিদর্শন করেন।
মন্ত্রী এ সময় নির্ধারিত তারিখে উচ্ছেদ অভিযান চালাতে রেলওয়ের পশ্চিম জোন ও পাকশী বিভাগীয় রেল কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন।
মন্ত্রীর নির্দেশ অনুযায়ী আজ বেলা ১১টায় শুরু হয় উচ্ছেদ অভিযান। এক ঘণ্টা পর পশ্চিমাঞ্চলের প্রধান রেলওয়ে ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন অভিযান স্থগিত করার নির্দেশ দেন।
এ সময় পাকশী বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা কিরণ চন্দ্র রায় সাংবাদিকদের জানান, রেলসচিবের নির্দেশে আপাতত উচ্ছেদ অভিযান স্থগিত করা হয়েছে।
এ বিষয়ে কামাল উদ্দিনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘রেলসচিব তাঁকে রেলওয়ের মহাপরিচালক, পশ্চিম জোনের মহাব্যবস্থাপক এবং পাবনা জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলাপ করে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে বলেছেন।
’
এই ব্যাপারে উচ্চ আদালতের কোনো নিষেধাজ্ঞা আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘উচ্চ আদালতের কোনো কাগজ আমরা পাইনি। ’
রিসোর্টের মালিক আকরাম আলী খান এই সম্পত্তি তাঁর নিজের দাবি করে বলেন, আবদুল মান্নান নামের এক ব্যক্তির কাছ থেকে তিনি ও তাঁর পরিবার এই জমি ক্রয় করেছেন। তিনি আরও জানান, গত সোমবার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বেঞ্চ ছয় মাসের মধ্যে উচ্ছেদ না করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
পাকশী বিভাগীয় রেলওয়ে ভূ-সম্পত্তি অফিস সূত্রে জানা যায়, এই স্থানটি আগে রেলওয়ের ফুটবল মাঠ হিসেবে ব্যবহূত হতো এবং এখানে হিন্দুসম্প্রদায়ের প্রাচীন মন্দির ছিল। ১৯৯২ সালে বিএনপি সরকারের আমলে আকরাম আলী খান রেলওয়ের মাঠ দখল ও মন্দির উচ্ছেদ করে জমির একাংশে ‘খান মঞ্জিল’ নাম দিয়ে একটি বিলাসবহুল ভবন নির্মাণ করেন।
পরে এই খান মঞ্জিলকে ‘অতিথিশালা’য় রূপান্তর এবং আরেক অংশে বিনোদন পার্ক তৈরি করে ‘পাকশী রিসোর্ট’ নামকরণ করেন। জানা যায়, সুইমিং পুল, মিনি চিড়িয়াখানা, রেস্তোরাঁ ও ইকোপার্কের মতো নানা সুযোগ-সুবিধাসহ পর্যায়ক্রমে রিসোর্টটি আকর্ষণীয় করে গড়ে তোলা হয়।
সূত্র-http://www.prothom-alo.com/detail/date/2012-09-11/news/288437 ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।