কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থায় গতকাল (৬ ফেব্রুয়ারী) সাভার সামরিক খামারের গজারি বনে বনভোজনে অংশ নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বনভোজনে গণভবন, বঙ্গভবন, সংস্থাপন মন্ত্রণালয় ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন। প্রায় ৫ হাজার অতিথির অংশগ্রহণে এ বনভোজনে রান্নার জন্য চট্টগ্রাম থেকে আনা হয় ৩০ বাবুর্চি। অতিথিদের ৭টি বৃহত্ আকৃতির গরু, ৫০টি খাসি, সাড়ে ৩ হাজার দেশি মুরগি দিয়ে আপ্যায়ন করা হয়। প্রায় অর্ধকোটি টাকা ব্যয়ে অনুষ্ঠিত এ বনভোজনে স্পিকার অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ, সংসদ উপনেতা ও আওয়ামী লীগ সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীসহ মন্ত্রিসভার সদস্য, বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য অংশ নেন।
তবে সাভার এলাকার সংসদ সদস্য তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদ ব্যতীত স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের কেউ এ বনভোজন অনুষ্ঠানে প্রবেশে অনুমতি পাননি। এ রাজকীয় বনভোজন অনুষ্ঠানকে ঘিরে সাভার ছিল নিরাপত্তার চাদরে ঢাকা। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে ৩ দিন আগ থেকে সাভার সামরিক খামারের গজারি বনে এ বনভোজনের খামারের পুকুরে নৌবাহিনীর বিশেষ ডুবুরি দল ও সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ারিং কোরের সদস্যরা তল্লাশি চালিয়েছেন। এছাড়া আরভিএফসি ও র্যাব ডগ স্কোয়াড সদস্যরা প্রশিক্ষিত কুকুর দিয়ে সামরিক খামার এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। শুক্রবার রাত থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ড ও ব্রিজ-কালভার্টে পুলিশ মোতায়েন ছিল।
মহাসড়ক সংলগ্ন ফুটপাত থেকে ৩ দিন আগেই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এ বনভোজন অনুষ্ঠান তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে ছিলেন সাভার সেনানিবাসের জিওসি মেজর জেনারেল ইকবাল করিম ভুঁইয়া
বনভোজনে সকাল ৯টা থেকে বিভিন্ন যানবাহনযোগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী সাভার মিলিটারি ফার্মের অরণ্যালয় পিকনিক স্পটে আসতে শুরু করেন। এর পরপরই আসতে থাকেন বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী, এমপিসহ আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা। অতিথিরা ২৫টি দোতলা বাস, মাইক্রোবাস ও প্রাইভেট কারযোগে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার গাড়িবহর নিয়ে দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে অরণ্যালয়ের পিকনিক স্পটে এসে উপস্থিত হন।
সেখানে তিনি অনেকের সঙ্গেই কুশল বিনিময় করেন। পরে প্রধানমন্ত্রী সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর সঙ্গে আনন্দ-উল্লাসে মেতে ওঠেন। তিনি বনভোজনে আসা অতিথিদের দড়ি দানাটানি, চেয়ার সিটিং, বালিশ নিক্ষেপ, চোখ বাঁধা খেলাসহ বিভিন্ন খেলাধুলা উপভোগ করেন। খেলাধুলায় বিজয়ীদের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী পুরস্কার বিতরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী সবার সঙ্গে দুপুরের খাওয়া খান।
দুপুর ১টা থেকে বিকাল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী বনভোজনস্থলে সবার সঙ্গে আনন্দ-উল্লাসের সঙ্গে কাটিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করেন। পরে একে একে অন্য মন্ত্রীরাও ঢাকার উদ্দেশে সাভার ত্যাগ করেন। সমাপনী অনুষ্ঠানে শিল্পী মমতাজ বেগম এমপিসহ নামি শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করে অতিথিদের মাতোয়ারা করে তোলেন।
অংশগ্রহণকারীদের নাস্তায় পাউরুটি, ডিম ও কলা দেয়া হয়। দুপুরের খাবার মেন্যু হিসেবে ভাত, পোলাও, মুরগির রোস্ট, গরু ও খাসির কলিজা ভুনা, সবজি ও দৈ-মিষ্টি এবং বিকালে নাস্তা পরিবেশন করা হয়।
১৮টি জেলা থেকে সহস্রাধিক পুলিশ সদস্য বনভোজন উপলক্ষে দায়িত্ব পালন করেন। বনভোজন অনুষ্ঠান কাভার করার জন্য বিভিন্ন মিডিয়ার সাংবাদিক ভিড় করলেও তাদের ভেতরে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।