আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

স্কুল শিক্ষিকার বিয়ে বাণিজ্য

বিয়ে বাণিজ্যে নেমেছেন নাজমা নামে এক শিক্ষিকা। তার পুরো নাম আমেনা খাতুন নাজমা। লাখ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে তিন স্বামীকে বিদায় দিয়ে তিনি এখন চতুর্থ স্বামীর ঘরে। বরগুনার তালতলী উপজেলার ঝাড়াখালী গ্রামে ১৯৮৩ সালের ৪ঠা জুলাই তার জন্ম। সুন্দরী হওয়ার কারণেই তিনি নিজের সৌন্দর্যকে বাণিজ্যের প্রধান হাতিয়ার করেছেন বলে তার সাবেক স্বামীরা অভিযোগ করেছেন।

পূর্বের ৩ স্বামী জানান, অল্প বয়সে তার প্রথম বিয়ে হয়েছিল একই ইউনিয়নের সালেক হাওলাদারের সঙ্গে। সেখান থেকে তিনি অনেক অর্থ হাতিয়ে নিয়েছেন। তারপরও নাজমা তার সংসার করতে রাজি হননি। প্রথম স্বামীকে বিদায় দিয়ে তিনি দ্বিতীয় স্বামী হিসেবে গ্রহণ করেন বরগুনা সদর উপজেলার মনির হোসেনকে। দ্বিতীয় স্বামী প্রথমে জানতো না তার স্ত্রীর আগে আরও এক স্বামী ছিল।

প্রথম বিয়ের কথা জেনে মনির হোসেন তারা স্ত্রীকে বরগুনায় নিয়ে এসে লেখাপড়া করান। গত বিএনপি সরকারের সময়ে ৩ লাখ টাকা খরচ করে নাজমাকে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে চাকরি নিয়ে দেন। চাকরির পরেই নাজমা তার দ্বিতীয় স্বামীকে এড়িয়ে চলতে শুরু করেন। এক সময় স্বামীকে তালাকনামা পাঠিয়ে ৮ বছরের সংসার জীবনের ইতি টানেন। দ্বিতীয় স্বামী লোকলজ্জায় এ নিয়ে আর বাড়াবাড়ি করেননি।

তার কাছ থেকে হাতিয়ে নেয়া লাখ লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার উদ্ধারেরও কোন চেষ্টা করেননি। দ্বিতীয় স্বামীকে তালাক দিয়ে মালয়েশিয়া প্রবাসী এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে বিয়ে খেলা খেলে অনেক টাকা হাতিয়ে নেন। পরে ২০০৯ সালে আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের সৌদি প্রবাসী সফিকুল ইসলামের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। সফিক ১৬ বছর ধরে সৌদি আরবে থাকছেন। ছুটিতে বাড়ি এসে বিয়ে করে আবার সৌদি আরব চলে যান।

সব ভাইয়ের পরিবার আলাদা থাকায় সফিক সৌদি আরব গিয়ে তার স্ত্রী নাজমার নামে টাকা পাঠাতে থাকেন। এ পর্যন্ত সাড়ে ৮ লাখ টাকার বেশি স্ত্রীকে দেয়া হয়েছে। স্বর্ণালঙ্কার পাঠিয়েছেন ২৫ ভরির ওপরে। সফিক সৌদি আরব থাকলেও নাজমা ছাতনপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা হিসেবে চাকরি করছেন। স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে পরিচয় হয় তালতলীর ব্যবসায়ী শাহজাহান ব্যাপারীর ছেলে ছাত্রলীগের ক্যাডার নয়নের সঙ্গে।

জড়িয়ে পরে পরকীয়ায়। একপর্যায়ে সফিকের পাঠানো টাকায় নয়নকে মোটরসাইকেল কিনে দেন। ২০১১ সালের শেষের দিকে নয়নকে চতুর্থ স্বামী হিসেবে গ্রহণ করেন। তবে নয়ককে স্বামী হিসেবে গ্রহণ করলেও সফিকের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়া বন্ধ করেনি। গত বছর ২০শে নভেম্বর তার কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা নেয়া হয়েছে।

তবে দাবি করেছিল ২ লাখ টাকা। দেশে ফিরে সফিক চতুর্থ বিয়ের কথা জানতে পেরে নাজমার বাড়ি চলে যান। সেখানে নাজমার বড় বোন কানিজ ফাতিমা লাইলী জানায়, তার বোন তাকে তালাক দিয়েছে। লাইলী তাদের কাছে থাকা স্বর্ণালঙ্কারের তালিকা নিজের হাতে লিখে সফিকের হাতে দিয়ে জানায়, তার কাছ থেকে নেয়া টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার ফেরত দেয়া হবে। টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার ফেরত না দিলে সফিক বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করেন।

গত ২৭শে আগস্ট বরগুনার সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) এইচ এম আজিমুল হক নাজমাকে তার দপ্তরে ডেকে আনলে এক অন্যরকম পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এ সময় তার ৪ স্বামী সেখানে উপস্থিত হন। তালাকপ্রাপ্ত ৩ স্বামী নাজমার অপকর্মের কথা তুলে ধরেন। নাজমাসহ পরিবারের সদস্যরা তাদের অপরাধ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন। এইচ এম আজিমুল হক জানান, তিনি সফিকের পাঠানো ৪ লাখ ৪৫ হাজার ৩৩৭ টাকার প্রমাণ পেয়েছেন।

সফিক আরও বেশি টাকা দেয়ার কথা বললেও প্রমাণ দিতে পারেননি। সহকারী পুলিশ সুপার আরও জানান, নাজমার বড় বোনের হাতে লেখা তালিকানুযায়ী তাদের কাছে ৬ জোড়া কানের দুল, ২টি নেকলেস, একটি চিক, ২ ছড়া চেইন, ১ জোড়া চুড়ি, একটি ব্রেসলেট, একটি আংটি ও একটি নাকের নথ রয়েছে। এ বৈঠকে বরগুনা জেলা পরিষদের প্রশাসক আলহাজ মো. জাহাঙ্গীর কবীর, কড়ইবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মাস্টারসহ গণমাধ্যম কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে নাজমা ও তার পরিবারের সদস্যরা ৩রা সেপ্টেম্বর সাড়ে ৪ লাখ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার ফেরত দেয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন। তবে ওইদিন তারা সহকারী পুলিশ সুপারেরকাছে আসেননি এবং টাকা ও স্বর্ণালঙ্কার ফেরত দেয়নি।

নাজমার তালাকপ্রাপ্ত ৩ স্বামীই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে নাজমার এহেন অপকর্মের বিচার দাবি করেছেন। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.