আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

চট্টগ্রামে ওহাবী - সুন্নী - বেদ্আতী দ্বন্দ্ব ♠═ প্রথম পর্ব ═♠ প্রসঙ্গঃ ক্বওমী মাদ্রাসা, আলিয়া মাদ্রাসা।

আমাদের বাংলাদেশের বিশেষ করে চট্টগ্রাম জেলাতে দুই ধরণের মাদ্রাসার নাম শোনা যায়। সেখানকার মানুষ জনও প্রধানতঃ দুই ভাগে বিভক্ত। | ( ১ ) সরকারী আলিয়া মাদ্রাসা কে সুন্নী মাদ্রাসা বলা হয়। | যারা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে ডিগ্রী নেয় তারা নিজেদের কে সুন্নী হিসেবে পরিচয় দেয়। | (২ ) জনগণের অর্থায়নে পরিচালিত বেসরকারী ক্বওমী মাদ্রাসা।

যাকে স্থানীয় আলিয়া মাদ্রাসার শিক্ষিতরা বলে ওহাবী মাদ্রাসা। | ক্বওমী মাদ্রাসার ডিগ্রীধারীদের কে বলা হয় ওহাবী। কিন্তু ক্বওমী শিক্ষিতরা নিজেদের চালচলনে আমল আখলাকে দাবী করতে চায় খাঁটি সুন্নী। ক্বওমী শিক্ষিতদের কে যারা ওহাবী বলে তাদের কে বলা হয় বেদ'আতী। এই দুই শিক্ষিত দলের প্যাঁচালের মাঝে পড়ে সাধারণ পাবলিকের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা।

কোন দিকে যাবে পথ পায়না। অনেকে বলে আমি সব দলে আছি। অনেকে বলে আমি দুই দলের মাঝখানে আছি। আবার ক্বওমী শিক্ষিতরা সবাই মিলে এক প্লাটফর্মে থাকলেও আলিয়া শিক্ষিত সুন্নী দাবীকৃতরা প্রথমতঃ চার ভাগে বিভক্ত যথাঃ- ১| ভান্ডারীয়া, ২| কাগতিয়া, ৩| আলতাফিয়া, মাইক বিরোধী। ৪| তৈয়বিয়া ।

এগুলোর ভিতরে আরো ভাগ আছে যেমনঃ ক) কড়া সুন্নী। খ) মিঠা সুন্নী গ) মাইক পন্থী। ঘ) কিয়াম পন্থী। ঙ) ঢোল তবলা পন্থী। চ) সিজদা পন্থী।

তবে ভান্ডারিয়ারা হল বিভক্তির প্রথম দল। ভান্ডারীয়ারা একাধারে মাজার পন্থী, সিজদা পন্থী , ডোল তবলা পন্থী, মাইক পন্থী সব পন্থী। এরা সবাই আবার একদল অন্য দলের বিরুদ্ধে লেগে থাকে। একটা জেলায় যদি এতগুলো পরস্পরবিরোধী দল থাকে তাহলে কি অবস্থা হতে পারে, কয়েক দফার হাঙ্গামায় ভান্ডারীয়ারা ২০০৯-২০১০ সালের দিকে কাগতীয়ার একজনের কান কাটে এর জের ধরে কিছু দিনের মধ্যে কাগতীয়ারা ভান্ডারীয়ার এক বড় হুজুরের রগ কেটে বলে এটা আমাদের গাউসুল আজমের কারামত। পাল্টা প্রতিরোধে ভান্ডারীয়ার একজন মারাও যায়।

রাউজান বাসস্ট্যান্ডে প্রতি বছর তার মৃত্যু বার্ষিকী পালন করে। এধরণের ঘটনা সবাই জানলেও তা খবরের কাগজে খুব কম ওঠে কেন জানিনা। ঐদিকে কওমী ওলাদের সাথে এধরণের হানাহানী হয়না। অন্যভাবে হয় যেমন ক্বওমী আলেমরা যদি একটা ওয়াজ মাহফিল করে তাহলে ঐ এলাকায় অন্তত ৩-৪ টা অপর পক্ষ মাহফিল করবে যার আলোচনায় থাকবে ক্বওমী আলেমরা যা বলেছিল, তার বিরুদ্ধে রিএ্যাকশন। মনে হয় ক্বওমী ওয়ালারা চাচ্ছে শিক্ষার মাধ্যমে তাদের সাথে প্রতিবাদ করতে।

এরা সমভবত এসমস্ত ছোট কাজে নেই। তারা কয়েক দফা পুলিশের সাথে দাঙ্গায় জড়িয়েছে। রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, কক্সবাজার, ঢাকা, বান্দরবন রোড ব্লক করে কাদিয়ানী, সংবিধানের বিসমিল্লাহ উঠিয়ে দেয়া, অবৈধ নারী নীতিমালার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ মিছিল করেছে । এনিয়ে চট্টগ্রামে ২ জন , যশোর জেলায় একজন মারা যায়। সরকারী আলিয়া মাদ্রাসা ও বেসরকারী ক্বওমী মাদ্রাসা উভয় ধরণের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সারা বাংলাদেশেই আছে।

তবে এই বিভক্তি সব জেলাতে নেই। এই ওহাবী - সুন্নী - বেদ'আতী দ্বন্দ্ব শুধু চট্টগ্রামে। বাংলাদেশের প্রচলিত ধারার আলিয়া মাদ্রাসা সারা বিশ্বে নেই। তবে ক্বওমী ধারার বেসরকারী মাদ্রাসা প্রায় সারা বিশ্বেকম বেশি দেখা যায়। আমার পর্যবেক্ষণ, নিরিক্ষণ অনুসন্ধানে একটা তথ্য বের হয়েছে তাহলঃ- চট্টগ্রামে যারা সুন্নী দাবী করে তারা সুন্নী নয়।

যাদের কে ওহাবী বলা হয় তারা ওহাবী নয়্ কি জটিল ব্যপার তাই না? হ্যা আগামি পরবে বিস্তারিত। >> ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.