আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হিরু ও রক্তাক্ত প্রান্তর

যা শিখেছি, সেখান থেকেই কিছু বলার ও করার চেষ্টা করি হিরু। কলেজে আমাদের সাথে পড়ত। আজব এক পাবলিক । সবসময় এমন এক ভাব নিয়ে থাকত যেন সে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে। মাঝে মাঝে আবার এমন সব কাজ করে বসতো সবার মেজাজ খারাপ।

একদিনের কথা বলি। ক্লাসে আসছেন বাংলার শর্মিলি মেডাম। উনি ক্লাস নিবেন রক্তাক্ত প্রান্তর। উনার ক্লাস নেবার আবার স্টাইলটা ভিন্ন। ক্লাসে এসেই বলবেন, নাটক শিখতে হবে নাটক করে করে।

যেহেতু ক্লাসের হর্তাকর্তা তিনিই তো আমাদের তো আর কিছু বলার থাকতে পারে না। চরম অনিচ্ছা সত্ত্বেও নিজেদের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে গিয়ে বাধ্য হয়েই ক্লাসে মনোযোগী হতে হবে। রক্তাক্ত প্রান্তরের অভিনয় করার জন্যে তিনি আগ্রহীদের ডায়াসে আসতে বললেন। অনেকেই এগিয়ে গেল। এগিয়ে গেল আমাদের হিরুও।

বিচিত্র আচরনের জন্যে সবাই তাকে চিনতো, ম্যাডামও। হিরুর আগ্রহ দেখে ম্যাডামও কিছুটা অবাক সাথেসাথে আতঙ্কিতও হলেন। কোন একটা অঘটন নিশ্চই ঘটবে। যাই হোক, হিরুর ভরাট গলার জন্যে তাকে দেয়া হলো ইব্রাহীম কার্দির পাঠ। আর জোহরার পাঠ দেয়া হলো ক্লাসের অন্যতম নরমশরম মেয়ে নিপাকে।

শুরু হলো অভিনয়। চরিত্র বন্টন দেখে আমরা ক্লাসের সকলেই মুটামুটি নিশ্চিত যে রক্তাক্ত প্রান্তর মুনির চৌধুরী সাহেব যত গুরুগম্ভিরভাবেই লিখুন না কেন, আজকের জন্য সেটা কমেডি নাটক। অভিনয়ের শুরু থেকেই হারুর উচ্চারনে গাম্ভির্যের আধিক্য থাকায় নিপার অবস্থা কাহিল । যেন ইব্রাহীম কার্দি জোহরার সাথে কথা বলছে না, হিরু নিপাকে বকছে পড়া না শিখে আসার জন্যে। ক্রমেই হিরুর গলার আওয়াজ দরাজ হয়ে উঠছে আর নিপা নিরিহ।

যেন জেরী টমের হাতে ধরা খেয়েছে। অভিনয়ের এক পর্যায়ে হিরু যখন জোহরা বলে ডাক দিল( এবার ডাকটা একটু বেশিই জোড়ে হয়ে গিয়েছিল) জোহরা ম্যাডামতো আতকে উটে ডায়াস থেকে নিচে পরে আহত। যদিও নাটকে কোন আহত হবার ঘটনা নেই কিন্তু শর্মিলি ম্যাডামের পরিচালিত রক্তাক্ত প্রান্তর নাটকে ইব্রাহীম কার্দির ধমকে জোগরা আহত। ঘটনা দেখেতো আমরা পেছনের বেঞ্চের মানুষগুলো হাসতে হাসতে খুন। আর ম্যাডামতো হিরুর উপর রেগেমেগে আগুন।

ম্যাডাম দৌড়ে গিয়ে ধরলেন নিপাকে। ক্লাসের অন্যান্য মেয়েরাও গিয়ে ধরলো তাকে। নিপাকে ধরে তুলে তার সিটে বসিয়ে যখন হিরুকে বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করানোর প্রস্তুতি চলছে তখন দেখা গেল হিরু নেই। কই হিরু। খোজ নিয়ে জানা গেল নিপা পরার সাথে সাথেই হিরু এক দৌড়ে ক্লাস ছেড়ে চলে গেছে।

ইব্রাহীম কার্দি পলাতক। এই যে ইব্রাহীম কার্দি শর্মিলি ম্যাডামের ক্লাস থেকে পলাতক হলেন এর পর তিনি আর কোনদিন শর্মিলি ম্যাডামের সামনে পরেননি। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১২ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।