আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নীড়

পাখিটা ছিল কার্নিশের উপর। ডানা ঝাপটে উড়তে চাইছিল কিন্তু পারছিলনা। সন্ধার কালবৈশাখী ঝড়টা ভেঙে দিয়েছে পাখিটার ছোট্ট ডানা দুটোর একটি। যতবার ডানা ঝাপটাতে ততবার ব্যাথায় কুকড়ে ওঠে ছোট্ট দেহটা। পাখিটার চোখ দুটো জুড়ে স্পষ্ট হতাশা।

কিছুটা শঙ্কাও হয়ত আছে। হয়ত এখনই কোনো কাকের দল ঝাপিয়ে পড়ে মধ্যাহ্ন ভোজটা সেড়ে নেবে। ঐ যে হলধে বাড়িটা দেখা যায়, তার পাশের বড় আম গাছটায় পাখিটার খড়কুটোয় তৈরি ছোট্ট নীড়। ছানা দুটো হয়ত ক্ষিদের জালায় চিঁ চিঁ করে ডাকছে। পাখিটা তাদের জন্যই খাবারের খোজে বের হয়েছিল।

ফেরার পথে কালবৈশাখীর ঝাপটা আর তার পর থেকেই সে এখানেই পড়ে আছে। ছানা গুলোর কথা মনে পড়তেই দূশ্চিন্তা শুরু হয় তার। ছোট্ট বাসাটা কি ঠিক আছে? নাকি, ঝড়ো হাওয়ায় নিচে পড়ে গেছে? ছানা দুটো কি ভালো আছে? নাকি,কাক-চি্লেরা তুলে নিয়ে গেছে? ধুর, এসব কি ভাবছে সে !! অলক্ষুনে সব কথা। কিছুই হয়নি। আর ভাবতে পারেনা সে।

শঙ্কাটা কিছুতেই যাচ্ছেনা। যে করে হোক তাকে পৌছতেই হবে ছানা দুটোর কাছে। এবার কার্নিশের একেবারে শেষ প্রান্তে এসে দাড়াল সে। জোর করে ডানা ঝাপটায় পাখিটা। এইতো শূণ্য়ে ভেসে আছে পাখিটা।

সামনে এগুঁতে থাকে দ্রুত। এক ফুট, দু ফুট কিন্তু হঠাৎ দ্রুত নিচের দিকে পড়তে থাকে। একটুপর... পাখিটা নিজেকে খুঁজে পায় ঘাসের উপর। মিট মিট করে চোখ খোলে। সবকিছু ঝাপসা লাগে।

ঝাপসা চখে ভেসে অঠে গাছের ডালে খড়কুটোয় তৈরি ছোট্ট একটি নীড়, দুটো ক্ষুধার্ত ছানা। আর শুনতে পায় চিঁ চিঁ শব্দ। তার্পর ধিরে ধিরে পাখিটার চারপাশটা অন্ধকার হয়ে আসে। একসময় পুরো পৃথিবীটাই অন্ধকার হয়ে যায়। বন্ধ চোখে পাখিটা দেখে, সাদা একটা পাখি উড়ে যাচ্ছে আকাশে।

হারিয়ে যাচ্ছে মেঘেদের দেশে। (সমাপ্ত) ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।