০১.
হাসির শব্দটা দেয়াল ছাপিয়ে যাচ্ছে!!
শঙ্খখোলের শাড়ি পরে গালে টোল ফেলে হাসছে সুদন্তী; হাত দু খানা মেহেদী মাখানো। আজ শীত নেই মরে গেছে ফাগুনের আগন ঝরা দিনের কাছে হার মেনেছে।
আমি আর সুদন্তী।
সুদন্তী মানে জানো? জানো না , তুমি বোকা কিংবা হাদারাম হতে পারে দু টোই।
আলো আধারিতে সুদন্তী খুব করে জড়িয়ে বসে শোবার ঘরটার মেঝেতে;
আলতো করে আমার গ্রীবা ছুয়ে বলল- সমু একটা কথা বলবো;
ধর্মাভরম,বোমকাই,জামেবার কিংবা একটা পিলকুঠি বেনারসী এনে দেবে আমায় ? আমি বধূ সাজবো প্রসাধনী হীন!! সেদিন রাধবো তোমার জন্য চিকেন চিল্লা আর তোমার প্রিয় কড়াই শুটির পাটিসাপটা; কি খাবে তো ?
আমি বললাম হ্যাঁ; তবে তন্দুরি বেবিকর্ন আমার চাই-ই-চাই; সন্ধ্যের স্ন্যাক্সে যা জমবে না !!!
সেদিন তোমার ক্যাপসিকাম পনির র্যাপটা যা হয়েছিলো না।
- সে রাতে আলো আধারিতে তোমার পরশ পড়েছিলো ব্যাকলেস কালো ল্যুরেস্ক ড্রেসে; চুমকি গুলো ঝলকাচ্ছিল।
সুদন্তী উঠে দাড়ালো; হাতে হাত ছাড়িয়ে বললো
এ্যাই শোন আমাদের নতুন বাড়িটা হবে ডুপ্লেক্স কায়দায়। রান্নাঘরের দরজায় থাকবে ষ্টেন গ্লাস জ্যামিতিক নকশায়। ফুলের টবে ভরা বারন্দার একপাশ।
০২.
চুড়ির ঝন ঝনানি আমার শুনতে বেশ লাগে।
ব্যালকনির পাশে দাড়িয়ে সুদন্তি হাসছে।
শোন ; পালোলম সৈকতে আমায় বেড়াতে নিয়ে যাবে? তুমি আমি কাটাবো রাত। হোটেল কে.জি ন্যুক কিংবা ডি মেল্লো ট্যুরিষ্ট হোমে।
তুমি কিন্তু উদ্ভিন্ন যৌবনাদের রোদমাখা ঢেউস্নানের দিকে একদম তাকাবে না। চোখ উপরে নেবো।
ঠিক আছে।
ভাবছি আমি আমার কন্ঠ শীতল হচ্ছে । খেই হারিয়ে যায়। আমার সেই পুরোনো স্মৃতি ক্যানভাস । সদ্য সবুজ ডাবে ষ্ট্র ডুবিয়ে শীতল মিঠে জলে চুমুক দেয়া।
আইসি ব্ল্যাক থান্ডারে জিভ ঠেকানো । ছোটবেলার ছোটাছুটি। জলের ঝপাং ঝপ কিংবা ডুব সাতার !! কিচ্ছু ভূলিনি।
খেই এর জগৎ থেকে ফিরে বলি সুদন্তী আমি তোমাকে নিয়ে যাবো।
০৩.
রাত-দুপুর-ভোর কাটে আমাদের স্বপ্নরা পালকের ডানায় রঙমাখে।
কিন্তু হঠাৎ এ-কি !!!
মুখ ঘোমরো সুদন্তীর। মেজাজ খিচে আছে।
আমি ধারে গিয়ে বলি কি হয়েছে? অমন ব্যাঙ্গের মতো কেন মুখটা !! এদিকে ফিরে তাকাও !! কি হয়েছে তোমার
জোর নিশ্বাসে কপালের চুল গুলো উড়ে ওর।
চোখ রাঙ্গিয়ে বলে আমার কিচ্ছু হয়নি। যাও সামনে থেকে।
দেখি হাতে পুরোনো আমার ডাইরিটা হেসে বলি ও এই কথা।
এটা আমার নিজের প্রেমপত্র নয় সুদন্তী
তোমার সুদন্তী মরে গেছে। একটা প্রেম করা হয়েছিলো আগে তাইনা। ভেবেছিলাম বিশ্বামিত্র...রাসকেল কোথাকার।
০৪.
ঘর শূন্য।
সুদন্তী নেই চলে গেছে; মেয়েটার এতো রাগ !!
কমলাকুসুম ভোর আর নেই। কাকডাকা ভোর এখন আমার কাঠফোটা রোদ্দোর।
আমি বেড়িয়েছি আজ। পুরোনো কাসুন্দি ঘেটে রাখিকে বের করেছি। রাখি চল তো,
- কোথায় ?
- জাহান্নামে ! তোর গচ্ছিত চিঠি আজ আমার সংসার ভাঙতে চলেছে।
এই জন্য বলি, উপকারের নাম পচাঁ বাদাম; ।
গেট পেড়িয়ে প্রণাম ঠুকে জননীকে ছেড়ে একেবারে সামনে সুদন্তীর। এই যে, ওকে জিজ্ঞেস করো। হাত দুটো সামনে তুলে রাখি বলে,
বৌদি মিছি মিছি রাগ করেছেনও চিঠি গুলো তো রাজুর লিখেছিলো আমাকে; আমি জমা রেখেছিলেম; সমু’র কাছে।
সত্যি বলছি !!!
০৫.
আমি আর সুদন্তী একসাথে;
পালোলেম যাইনি।
বিশাখাপত্তনমে ঋৃষি কোন্ডার পথে। কণ্যাকুমারি এক্সপ্রেস মিস্ করেছি।
ট্রেনের জানালায় চোখ না রেখে সুদন্তী আমার মুখের দিকে চাইলো আচ্ছা এ, কদ্দিন তোমার খুব খারাপ লেগেছে তাইনা? তা,কি আর বলতে হয়!! আচ্ছা ভালোবাসায় এতো সুখ কেন ?
- হয়তো আলো আছে বলে।
-সমু আমরা থাকবো কোথায়?
-কেন ? আমাদের অপেক্ষায় “তাজ রেসিডেন্সি” ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।