আমার কিন্তু স্বপ্ন দেখতে আজও ভাল লাগে ।
ঈশান কোনে জমে থাকা কালো মেঘ, মেঘ তুমি কান্না হয়ে ঝরে যাও । আমার আকাশ আবার নীল করে দাও । মেঘ তুমি বৃষ্টি হয়ে ঝরে যাও । মেঘ তুমি কান্না হয়ে ঝরে যাও ।
আষাঢ়ে গল্পঃ
হঠাৎ ধেয়ে আসা দমকা বৃষ্টি আমাদের দলটাকে পুরো লন্ডভন্ড করে দিলো । যে যেদিকে পারে দৌড়ে আশ্রয়ের খোঁজ করছে । আমি কোন রকম আধ ভিজে হয়ে জাস ক্যান্টিনের বারান্দায় এসে পৌছলাম । বন্ধ ক্যান্টিনের বারান্দায় চকচকে ইস্পাতের রেলিং দু'হাত দিয়ে ধরে ঠায় দাঁড়িয়ে আছি । চোখে মুখে এসে লাগছে বৃষ্টির ছাঁট ।
এমন সময় নন্দিতা এলো ।
নন্দিতা আমার পাশে এসে আমার ভঙ্গিতেই দু'হাত দিয়ে রেলিং ধরে দাঁড়ালো । দুজনে নিশ্চুপ বৃষ্টি পড়া দেখছি, বৃষ্টির স্বাদ নিচ্ছি । হঠাৎ খেয়াল করি নন্দিতার হাত আমার হাতকে আলতো স্পর্শ করে আছে । একটা বিদ্যুৎ পুলক যেন বয়ে যায় আমার সারা শরীর জুড়ে ।
আমি অন্য দিকে তাকানোর ভান করে ওর হাতটা চেপে ধরি । নন্দিতা অমনি ফিক করে হেসে দেয়, অতপর আরো ঘনিষ্ট হয়ে আসে । প্রচন্ড বৃষ্টির সাথে দমকা বাতাসে ভেসে আসছে মহুয়া ফুলের মাতাল গন্ধ ।
আমি নন্দিতার মুখের দিকে তাকাই, চোখে মুখে সলাজ হাসি নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে আছে । সেই হাসিতে আমি বারবার বিভ্রান্ত হয়ে যাচ্ছি ।
আমি নন্দিতাকে খুব কাছে থেকে দেখছি, তার চোখ মুখ ভ্রু ওষ্ঠ জুড়ে ফোটা ফোটা বৃষ্টির জল চুইয়ে পড়ছে । তার মোহন চাহনি আমাকে ক্রমে গ্রাস করে নিচ্ছে । হঠাৎ আমার সারা গায়ে কাঁটা দিয়ে উঠে । নন্দিতা বুঝতে পেরে আমার হাত তার দু'হাত দিয়ে শক্ত করে চেপে ধরে, সেই হাতের উপর আলতো করে থুতনি রাখে । ওর ভেজা চুল হাওয়ায় দোলে আমার চোখে মুখে মাতাল পরশ বুলিয়ে দেয় ।
এই ভেজা ঠান্ডা দিনেও ওর শরীর থেকে আগুনের হলকা বের হয়ে আমার শরীরে লাগছে । এই উত্তাপে আমি পুড়ে যাচ্ছি গলে যাচ্ছি ক্রমশ..
আচমকা দৈবাৎ কে যেন আমাকে দিয়ে বলিয়ে নিলো, চুমু খাব । কথাটা আমিই বলেছি কিনা নিশ্চিত হতে চেয়ে দেখি নন্দিতার চোখ থেকে এক অপার্থিব আনন্দআলোর ঝলকানি ঠিকরে পড়ছে । লাজুক হাসি দিয়ে আমার ভেজা বুকে মাথাটা গুজে দেয় । আর আমিও জীবনে প্রথম পুরুষ হয়ে উঠি ।
পাগলের মত চুমু দিতে থাকি কপাল ভ্রু ওষ্ঠ চোখ অধর নাসিকায়, আর নন্দিতা আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কাঁপতে থাকে ।
ক্রমশ টাইম এন্ড স্পেইস অবজ্ঞা করে আমি উড়তে থাকি মহাকাশে । কানের লতি থুতনি গলা বেয়ে নামতে থাকি যক্ষের পাতাল পুরিতে । নন্দিতা দুহাত দিয়ে আমার মাথার পেছনে চুলের গোছা ধরে হ্যাচকা টান দিয়ে বলে, আহা কি হচ্ছে ? তার মৃদু বাঁধা ডিঙ্গিয়ে আমি পাগলের মত খুজতে থাকি ঐ নরম তুলতুলে শরীরের ভিতর লুকিয়ে থাকা সোনার কাঠি রুপোর কাঠি নামক অধরা মনটাকে ।
হঠাৎ পশ্চাতদেশে একটা প্রচন্ড আঘাত, সাথে সাথে নাক-মুখ ঠোকর খেলো ইস্পাতের শক্ত রেলিংয়ে ।
দাঁতে দাঁত চেপে কোন রকম মাথাটা মাথাটা ঘুরিয়ে দেখি, শাহেদ !
"শালা পারভার্টেড কোথাকার ! রেলিং চেপে ধরে কার কথা কল্পনা করছিলি শালা ??"
আষাঢ়ে কাব্যঃ
-
-
----------------------------------------
----------------------------------------
চুপিসারে মাস আষাঢ়ে
হৃদয় খুলে দেখি !
সংগোপনে মনের কোনে
কার ছবি দেয় উঁকি ?
-
বর্ষা আকাশ বাউলা বাতাস
বৃষ্টি ভেজা গায়,
এলোকেশে লাজুক হেসে
বিজুলি চমকায় !
-
রেলিং ধরে মনের ঘোরে
দাঁড়িয়ে আছি ঠাঁয়,
মিষ্টি স্পর্শ জাগায় হর্ষ
পুলক বয়ে যায় ।
-
ভেজা চুলে আঙুল দোলে
ভেজা চোখে ওষ্ঠ,
পরিপাটি সোঁদা মাটি
জড়িয়ে শোধায় 'দুষ্ট' !
-
অঝোর ধারায় হৃদয় হারায়
পলাতক প্রেম ফেরে নব্য,
বিজুলি তর্জনে মেঘের গর্জনে
ফুরায় আষাঢ়ে কাব্য ।
আষাঢ়ের কান্নাঃ
"বেদনাকে সাথী করে
পাখা মেলে দিয়েছো তুমি
কত দুরে যাবে বল, কত দুরে যাবে বল
তোমার পথের সাথী হব আমি.."
আজ এই বৃষ্টির কান্না দেখে- নিয়াজ মুহম্মদ চৌধুরী ।
*************************************
উৎসর্গঃ সেই সব ব্লগার, যারা নিঃশ্বাসে-প্রশ্বাসে ভালোবাসার মানুষ খুঁজে ফিরছেন । ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।