কবিতা ১)
কন্যা, তোর ভালো লাগে বাতিঘর?
নোনা বায়ু, ঘোলা জল, আচমকা ঝড়?
এতো যে ব্যথিত! লাগে না তো?
ওহে কন্যা, ধৈর্য ধর
তোরই গর্ভে জন্ম নেবে
অমিয় জলদ ফল।
২)
বেলা দ্বিপ্রহর। কন্যা
বিবাহিত বোশেখের উপচীয়মান
হরিদ্রাভ রোদ মাখবে মুখে
এঁটেল মাটির ভাঙা সিডাইক থেকে
একটু দূরে যে দলছুট ডাব গাছ
তার স্থির বিযুত ছায়ায় বসা
একটি মুমূর্ষু কাক, নির্নিমেষ চেয়ে-
পাঁচদিন আগের আমাবস্যায়
লবণ পানিতে ডোবা
বিস্তীর্ণ ধানের ক্ষেতে।
এখন সবুজ ধান- বিবর্ণ হলদে
আহা! কতকাল কাক এমন হলুদ যে দেখেনি!
সুউঁচু আকাশে ওই, পালকের মতো
নরম হালকা মেঘ
ঘনীভূত হয়ে হয় কামার নেহাই।
সহসাই
দক্ষিণ-পশ্চিম থেকে প্রগাঢ় শীতল বায়ু বয়
হরিদ্রাভ রোদ ক্রমে লালচে-কালো মেঘে দেয় ডুব।
এ কেমন রঙ! মেঘের কেমন রঙ এই!
ওহে কন্যা , মেঘ দেখে পেয়েছিস ভয়?
পেয়েছিস ভয় খুব?
৩)
গভীর রাতেতে কন্যা ভয়ে চোখ মেলে
অনালোক বাতিঘরে ঘর্ষ আলো জ্বলে
পাঁচ ছয় সাত আট- কন্যা জ্বরে কাঁপে
জলেরও অনেক জ্বর, তাই সেও ফুঁপে।
মুরলী ঘাটেতে আজ জল হোলি খেলা
পোড়ামুখী, কিরে তোর, চুল কেন খোলা?
দীঘল চুলেতে বাঁধ, বরের শরীর
মথিত পালঙ্ক হবে, চকোরের নীড়।
৪)
ভেবেছিল কন্যা-
ব্যথাতুর ঝিনুকের গর্ভে
মুক্তোর সবাক বিচ্ছুরণ হবে
এ জীবন।
এখন আকাশে টেরিকাটা চাঁদ;
অশেষ ছড়ানো মুক্তো।
তবু তুমি মাথাকাটা নোনাঝাউ
কেওড়ার মতই যে নির্লিপ্ত!
যেন কেটে গেছে আকাঙ্ক্ষার সব মেঘ;
ললাটে বিধৃত শুধু ডুবন্ত সূর্যের অপভ্রংশ;
আর মাডস্কিপারের শরীরে তোমার
রুদ্ধশ্বাস বায়ুভুক জীবন-আশ্বাস।
তুমি পরিপূর্ণ পরিশুদ্ধ আজ।
বারেক প্রসন্ন হও, কন্যা
বারেক প্রসন্ন হও, মুক্তমেঘ মেঘলীনা।
৫)
তোমার বিশুষ্ক চোখে স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হয়
ঝড়াহত ডানিশের দাঁড়ে উড়োন্মুখ ঝিরিহাঁস। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।