চট্টগ্রামে জলাবদ্ধতা ও আমাদের করনীয়
গত ২৪ ২৫ জুন তারিখে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারনে চট্টগ্রাম মহানগরী ও এর আশেপাশের জেলাসমুহ বন্যায় কবলিত হয়। এর অনেক নিচু জায়গা পানির নিচে তলিয়ে যায়। সৃষ্টি হয় জলাবদ্ধতার এবং অনেক বাসাবাড়ি ও ব্যাবসায় প্রতিষ্ঠান ডুবে যায়। ক্ষতি হয় জানমালের, কয়েকশত কোটি টাকার এবং মানুষের মুল্যবান সময়ের। এর কারন জানার জন্য আমরা শুধু দুই জন মানুষের নিকট যাই এর মধ্যে এক জন হলেন আমাদের নগরপিতা জনাব এম মনজুর আলম এবং অপর জন হল চ. উ. ক. সভাপতি।
আমরা কি একটি বার চিন্তা করে দেখেছি যে এই জলাবদ্ধতার কারন আমি নিজেও। সবাই মিলে সিটি করপোরেশনের অদক্ষতা, অপরিকল্পিত নগরায়ন কে দায়ি করি। আসলে প্রকৃত পক্ষে এগুলো অনেক পরের বিষয়। যা আমরা সবার আগে চিন্তা করি। একটি বার নিজের দিকে তাকান এর উত্তর আপনি নিজেই দিতে পারবেন।
আপনার বাসার ময়লা আবর্জনা আপনার কাজের লোক কোথায় ফেলছে? তিনি হয়তো এই সব ময়লা আবর্জনা বাসার আশেপাশের ড্রেনে,রাস্তার ধারে ফেলছে। নিদিষ্ট জায়গায় ফেলছে না। যার ফলে ড্রেন জ্যাম হয়ে পানির স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা দিচ্ছে। যার ফলে ঘটে জলাবদ্ধতা। আমাদের মত উন্নয়নশীল ও সল্পবাজেট ভুক্ত দেশে সিটি করপোরেশনের দ্বারা প্রতিদিন এই প্রচুর পরিমানের ময়লা পরিষ্কার করা সম্ভব নয়।
জনগনের দোষগুলো কি সিটি করপোরেশন নিজের ঘাড়ে নিয়ে তা পরিষ্কার করবে।
অপরদিকে প্লাস্টিক ব্যাগ যা আজ আমাদের জন্য কাল হয়ে দাড়িয়েছে। গত ২০০১ সালে এই পলিথিন ব্যাগ নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু আজও আমরা তা ব্যাবহার করছি লাগাহীন ভাবে। যা ড্রেনে জমে গিয়ে তৈরী করে জলাবদ্ধতার।
এর জন্য দায়ী কি সিটি করপোরেশনের না আমরা নিজে? আমরা জদি দোকানিকে বলি আমাকে কাগজ ও পাটের ব্যাগে জিনিস দিন তবে কি আমাদের মারাত্নক ক্ষতি হয়ে যায়? আমরা জদি এগুলো ব্যাবহার করি এতে করে পরিবেশের ক্ষতিও কমবে এবং অনেক মানুষের কর্মসংন্থান ও হবে।
অপরদিকে আমাদের এই চট্টগাম পাহাড়ের আদুরে কন্যা। আর আমরা লাগামহীনভাবে পাহাড়ের মাটি ও এর গাছ কেটে তৈরী করছি বিলাসবহুল বাড়ি ও আসবাবপত্র । যার ফলে অতিবৃষ্টির সময় পাহাড়ের মাটি পানি দ্বারা প্রবাহিত হয়ে ড্রেন,নদী,নালা, খাল ভরাট করে এবং পানির স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা দিচ্ছে। যার ফলে ঘটে জলাবদ্ধতা।
তাই আমাদের সকলের উচিত অন্যের দিকে তাকানোর আগে নিজেকে একবার আয়নায় দেখা। নিজের এলাকার পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার জন্য সিটি করপোরেশনকে সহায়তা করা। আর সিটি করপোরেশনের উচিত জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আরও প্রচার প্রচারনা করা এবং পরিকণ্পিত ড্রেনেজ ব্যাবস্থা কারা এবং খাল গুলো দখল মুক্ত করে একে বর্ষার আগে খননের ব্যাবন্থা করা। বর্ষার সময় তোরজোড় করে জোড়াতালি দিয়ে কাজ কারার ঐতিহ্য আমারাদের পরিহার করা উচিত। কাউনসিলরদের উচিত নিজ নিজ এলাকার ড্রেনেজ পরিকল্পনা নিয়ে সিটি করপোরেশনের মাধ্যমে এলাকার কাজ বর্ষার আগে শেষ করা।
আসুন আমরা সকলে মিলে এগিয়ে আসি এই সংকট উত্তরনে এবং চট্টগ্রামকে অন্যতম সুন্দর নগরী হিসেবে গড়ে তুলি আগামী প্রজন্মের জন্য।
আবদুল্লাহ আল মাহামুদ হোসেন নিপুন
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।