আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দুর্ঘটনা এবং একটি ফেইক........

সব কিছুতেই স্বচ্ছতা চাই। দুর্ঘটনা বরাবরই বাজে একটা ব্যাপার। আমার জীবনে খুব বড়সর কোন দুর্ঘটনা না ঘটলেও, টুকটাক যা ঘটছে তা মনে হলে ভারাক্রান্ত হওয়ার বদলে কেমন যেনো ঠোটের কোনে কেমন যেনো একটা হাসি আসে ( অবশ্যই মেয়েদের মত ইঙ্গিতপূর্ন মুচকি হাসি না)। যদি হাতে সময় থাকে তাহলে ফালতু পোস্ট টা পড়তে পারেন....... ১। তখন ক্লাস ফোরে পড়ি।

বান্দরামীর জন্য খুব বেশী বিখ্যাত না হইলেও বান্দরামীর অভিজাত ক্লাবে আছিলাম। আমরা যে জায়গায় থাকতাম তার চারপাশে অনেক জাম গাছ ছিলো। একটা ছোট্ট কৌট্টা নিয়া গাছে উইঠ্যা জাম পাইড়া ঝাকাইয়া খাইতাম। জাম ঝাকানী খাইলে কুনু অসুবিধা নায় তবে অন্য কুনু ঝাক্কি কিন্তু খাওন যায়বোনা। তাইলে ২দিন বলদ হইয়া থাকন লাগবো।

যা বলছিলাম, একদিন প্রচুর বৃষ্টি হলো। তারপরের দিন টিউটোরিয়াল পরীক্ষা। বাসা থেইক্কা ১১ টার দিকে বাইর হইলাম। আম্মাজান উনার স্বভাবসুলভ ভংগীতে হালকা চিল্লানি দিয়া কয়লেন, পড়ালেখা বাদ দিয়া বাইরে যাইয়া ঘাস কাট। তখন মাঝে মাঝে চিন্তা করতাম, ঘাস কাটতে কয় ক্যা !!! কোনদিন তো বাসায় ঘাস রান্না করতে দেখি নাই।

যাই হোক, আম্মার এইসব কথা বার্তায় কান না দিয়া বাইরে আসলাম। প্রচুর বৃষ্টি হওনের কারনে গাছ অনেক পিছলা। তারপরো রিস্ক নিয়া গাছে উঠলাম। গাছে উইঠা জাম বানাইয়া খাইতাছি। এখন অন্য গাছে জামু।

এক ডাইল থেইক্কা অন্য আরেকটা গাছের ডাল ধরা মাত্রই........................................................... তিন তলা সমান উচু থেকে টারজানের মত ভুপৃষ্ঠে ল্যান্ড করলাম কোন আওয়াজ ছাড়াই। শুধু টারজানের মত আমার কুনো দড়ি আছিলোনা। মানে হয়তাছে পিছলা খাইয়া ধরনীতলে ধপাস। তাও আবার লেবু গাছের উপরে পরছি। উইঠাই হাত পা ঝাকাইলাম।

দেখলাম, নাহ হাত পা ভাঙ্গে নাই। যাক কালকার পরীক্ষা টা দেওন যায়বো। কিন্তু লেবু গাছে কাটা আমার শরীরের জায়গা মত কয়েকটা স্পটে ঢুইক্যা গেছে। এটাই আমার পরথম দূর্ঘটনা। ২।

বহুতদিন নিরিবিলি থাকার পর, ভার্সিটি তে আইস্যা আরেকটা দূর্ঘটনায় পরছিলাম। এইটা অবশ্য রাজনীতি করার কারনে। এক রাইতে নিজ দলের কিন্তু অন্য গ্রুপের পুলারা আমারে বেশ ভালোই ছেচা দিছিলো। যারা ভার্সিটি তে রাজনীতি করছেন তারা গ্রুপিং স্বমন্ধে ভালোই জানেন। ইশশশ ১৫-১৬ টা পুলা আমারে মারছিলো।

আরে আমার যে স্বাস্থ্য আছিলো একজন মারলেই আমি শেষ আর শালারা মারছে আমারে এত্তজন মিল্লা। পরথম ঘুসিটা পরছে আমার চোখে। দেখলাম শুধু লাল নীল তারা জলতাছে। এত্ত সুন্দর তারা গুলান। ভাবলাম একটা ধরি।

যেই তারা ধরার লাইজ্ঞা হাত বাড়াইছি...... ভাগ্য খারাপ হইলে যা হয় আরকি হাত গিয়া পরছে আরেকজনের গালে। আমারে যারা তারা দেখাইতেছিলো তারা গেলো আর চেইত্যা। পরে বেশ ভালো কইরা আমারে আরো অনেক তারা দেখাইয়া তারা বিদায় নিলো। যারা চোখে কুনুদিন ঘুসি খান্নায় উনারা তারার ব্যপারটা নাও বুঝবার পারেন। ৩।

আমার আগের পোস্ট টা যারা পড়ছেন তারা জানেন আমি মাঝখানে কিছুদিন খুব ভাবের জগতে আছিলাম। তো একদিন এই ভাবের জগতে থাকা অবস্থায় হোন্ডা চালাচ্ছিলাম। হঠাত দেখলাম একটু দূরে একজন লোক রাস্তায় উঠলো। রাস্তা আমার বাপের না। সো যে কেউ উঠতে পারে।

কিন্তু রাস্তাই উইঠ্যা আমার সাথে টিলুস্প্রেস খেলাটা অন্যায়। আর আমি রেডিও আছিলাম না। ফলে যা হবার তাই হইলো। মানে হইলো গিয়া, আমি সমানে হর্ন দিতাছি। আর ওই লোক একবার সামনে যায়, আরেকবার পিছে যায়।

আমি তো পইরা গেলাম ফাপরে। মনে মনে কয়, আরে শালা করস কি!! আমার কি এখন খেলার মুড আছে !!!আমি খেলতাম না !!! হেই আমার মনের কথা বুঝলোনা। আমিও অনেক চেষ্টা করছিলাম হের লগে না খেলতে। কিন্তু আর পারলাম্না। হোন্ডা নিয়া একেবারে উনার গায়ের উপ্রে।

উনি মুটামুটি ৩ হাত দূরে গিয়া পরছিলো। আর আমরাও পরছি। পিনিক ততক্ষনে পুরা শেষ। আশ্চর্যজনক ভাবে দেখলাম, উনার কিছুই হয়নাই। শুধু কাছে গিয়া কইলাম, ভাই খেলার তো একটা টাইম টেবিল আছে নাকি... ৪।

আরেকদিন, মাত্র কাশীর ঔষুধ খাইয়া এক দোকানে বইস্যা চা খাইতাছি আমরা তিনজন। রাত তখন ৯ টা। হঠাত দেখলাম একটা গাড়ি আইস্যা টঙ্গয়ের সামনে থামলো। অতীব সুন্দরি না হইলেও বেশ ভালো রকমের সুন্দরী একটা মেয়ে চা খায়তে নামলো। আমরা তিনজন ভাব দেখাইয়া তাকাইলামনা।

কিন্তু ট্যারাইয়া ট্যারাইয়া তাকানোর চেষ্টা করতেছিলাম বিস্তর। যাই হোক ভাব দেখাইয়া চা শেষ হওয়া মাত্রয় আমরা আর না বসিয়া নিজ গন্তব্যে রওয়ানা দিলাম। হোন্ডায় উঠিয়া অতীব ভাবের সহিত স্টার্ট দিলাম। পিকাপ বাড়াইয়া একটু আওয়াজও করিলাম ঐ সুন্দরির দৃষ্টি আকর্ষনের জন্য। তারপর ভাবের সহিত ক্লাচটা ছাইরাই যেই টান দিতে যামু আর সাথে সাথেই ধপাস।

আমরা তিনজনেই হোন্ডা সহিত এবং ভাবের সহিত রাস্তায় পইরা থাকলাম। সাথে সাথে কয়েকজন আসলো সাথে ঐ সুন্দরীটাও। মাইয়াটা এমুন একটা হাসি দিছে যে ওই হাসি দেইখায়াই মনে হইছে এইখানে আর থাকন যায়বোনা। ভাবের গুষ্ঠী কিলাইয়া অতঃপর খুব আস্তে আস্তে হোন্ডা ছারলাম। ৫।

ফেইক দূর্ঘটনা.......: যদিও আমার ফেবু তে ফেইক একাউন্ট নাই তারপরো আমার একটা ফেইক দুর্ঘটনা ঘটছিলো। অবশ্য ওইটা ছিলো কিঞ্চিত হৃদয় ঘটিত ব্যপার স্যাপার। আগের পোস্টে যার কথা বলছিলাম উনার জন্যই এই ফেইক দুর্ঘটনা। মেজাজ খারাপ থাকার কারনে আমার এক বড় ভাই দিয়া আমার মামাতো বইনেরে ফোন দেয়াইছিলাম যে আমি এক্সিডেন্ট করছি। যাতে ঐটা আমার পিরিতের মাইয়া টার কানে যায়।

আমার মামাতো বোন আবার আমগোর ব্যাপারে জানতো। ইচ্ছা ছিলো আমার মামাতো বইন আমার পিরিতের মাইয়াডারে ফোন দিবো আর সাথে সাথে ঐ মাইয়া কান্নাকাটি শুরু করবো। ছিনেমা হইলে তো দৌড়াইয়া আমার কাছেই চইল্যা আসতো। কিন্তু হায়, মানুষ ভাবে এক আর হয় আরেক আমার ঐ বেকুব মামাতো বোনটা ওই মাইয়াডারে ফোন দিছে ঠিকি। আর ওই মাইয়াও আমারে ইচ্ছা মত ফোন দিতেছিলো।

আমি তো মনে মনে চরম পুলকিত। একসময় ভাবলাম নাহ, এইবার রিসিভ করা উচিত। মাইয়াডা খুব টেনশন করতাছে। কথা কইয়া যা বুঝলাম, মাইয়াডা আসলেও খুব টেনশন করতাছিলো কিন্তু আমার জইন্য না। হেই কুনু বিপদে পরে কিনা এল্লাইগা।

মনডায় গেলো ভাইঙ্গা। যাউকগা এক্সিডেন্টের ঘটনা বাদ। কুনো কামই হইলনা। কিন্তু এখন হয়ছে আরেক ভেজাল। আমার ওই মামাতো বোনটা বুদ্ধি কইরা আমার বাপেরেও দিছে ফোন।

আর আমার বাপে তো ইচ্ছা মতন আমার ফোনাইতে লাগলো। আমার বাপ মা, মামাতো বোন, ভাই সবাই গাড়ি নিয়া রেডী আমার এইখানে আইসা আমারে বাসায় নিয়া যায়বো। এখন আমি করি কি !!! কুনুমতে উনাদের বুঝাইলাম এক্সিডেন্ট তা গুরুতর কিছু না। একটু শুধু ছিলছে। পরে মনে হইলো খুব খারাপ একটা কাজ করছি।

মা বাপ, আত্মীয়স্বজন আমাদের কত্ত ভালোবাসে। আর একটা মাইয়ার লাইজ্ঞা এতো নাটক করলাম। তাও আল্লাহ পাকের কাছে হাযার শুক্রিয়া যে ঐটা শধু নাটক ছিলো। অনেকে সত্যি সত্যি এমন হয়তো করে। আপনার যারা এইটা পড়বেন তাদের কাছে ছোট্ট একটা অনুরোধ, আপনার বন্ধু মহলে এমন যদি দেখেন অবশ্যয় তাকে ফেরাবেন।

একটা মেয়ে থেকে নিজের পরিবার অনেক বড়। সময় নষ্ট কইরা এতক্ষন এইটা পড়ার জইন্য আপনাদের সবাইরে ধইন্যবাদ। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।