যদিও আমার প্রিয় জন্মভূমি, দেশমাতৃকা বারংবার শীর্ষ দুর্নীতিগ্রস্থ দেশ হিসাবে কলঙ্কিত হয়েছে। সন্তান হিসাবে প্রিয় মাতৃভূমির মর্যাদা রক্ষায় আমরা ব্যার্থ হয়েছি। তাই এ কলঙ্ক আমাদের, মাতৃভূমি নিষ্কলঙ্ক।
এখন প্রশ্ন হল, যে সমস্ত দুর্নীতি পরায়ণ ব্যাক্তি বা গোষ্ঠী দ্বারা প্রতিনিয়ত সাধারণ খেটে খাওয়া, সৎ পথচারী মানুষ নির্যাতিত, বঞ্চিত, শোষিত হচ্ছে তাদের সংখ্যা কত?
আপনি কোন ধরনের জটীল পরিসংখ্যান ছাড়াই সাধারণভাবে চিন্তা করলেই দেখতে পাবেন, আপনার আশে পাশে দু-একজন লোক, জনপ্রতিনিধি ও তাদের দোসর অথবা গুটি কয়েক দুর্নীতি পরায়ণ আমলা, গোটা এলাকাকে শোষন ও চোষন করছে। ১ জন শোষকের বিপরীতে কম করে হলেও ১০০০ জন সাধারণ বঞ্চিত মানুষ দাঁড়িয়ে আছে।
আরো ভালোভাবে বলতে গেলে, ২টি কালো হাত রুখে দেওয়ার জন্য বিপরীতে আছে খেটে খাওয়া মানুষের লৌহসম ২০০০ হাত। তারপরেও কেন আমরা তাদের রুখতে পারছি না?
এর সবচেয়ে বড় কারণ হল আমাদের নিরবতা, প্রতিবাদহীনতা। ওরা শক্তিশালী, আমরা ওদের সঙ্গে পারবো না। তাই নীরবে সকল অনিয়ম সহ্য করি। আর সহ্য করতে করতে অনিয়মই আমাদের কাছে নিয়ম হয়ে গেছে! কিন্তু একবার ভাবুন তো, আসলেই কি ২টি হাত ২০০০ হাতের চেয়ে অধিক শক্তিশালী?
বড় কারণ হল, শোষক শ্রেনী তাদের স্বার্থে সংগবদ্ধ, কিন্তু আমরা প্রতিবাদের জন্য সংগবদ্ধ নই, প্রস্তুত নই।
আমাদের একজনের উপর অন্যায় অবিচারে অন্যজন শুধু নীরব দর্শক হয়ে চেয়ে থাকি। মনে করি এগিয়ে গেলে আমিও ঝামেলায় জড়িয়ে পড়তে পারি। কিন্তু আসলেই কি আপনি নির্বিঘ্নে বাঁচতে পারছেন? কাল আপনিও ঐ একই অবস্থার শিকার হচ্ছেন। শরীরের কোন অঙ্গে পঁচন ধরলে তা ক্রমান্বয়ে সকল অঙ্গেই বিস্তার লাভ করে। তাই সুস্থভাবে বাঁচতে হলে যে অঙ্গে পঁচন ধরেছে সেই অঙ্গের সঠিক চিকিৎসা করতে হবে, বিফলে অঙ্গটি কেটে ফেলতে হবে, নাহলে অন্য অঙ্গের শুভত্ব কামনা বৃথাই হবে।
শোষিতের কাতারে দড়িয়ে আমার অনুরোধ রইলে-
>> যে সমস্ত সৎ পথচারী মানুষের ক্ষমতা আছে, তারা তাদের ক্ষমতা দিয়ে ক্ষমতাহীন, সাধারণ মানুষকে নির্যাতন, নিষ্পেষণ, শোষনের হাত থেকে রক্ষা করুণ।
>> যারা অর্থ বৈভবে সমৃদ্ধ, তারা অনাহারী, অসহায়, গরীব মানুষদের সামান্য অর্থ হিয়ে সাহায্য করুণ।
>> খাবার অন্ন, গরু-ছাগল বিক্রি করে বা দেনা করে কোন দুর্নীতি পরায়ণ ব্যাক্তিকে ঘুষ দিবেন না। আগে থেকেই ঘুষ দিতে হবে বলে টাকা সঙ্গে করে নিয়ে যাবেন না। একবার অন্তত প্রতিবাদ করুণ, দশজনকে বলুন, একজনকে হলেও আপনি আপনার পাশে পাবেন।
বাঙ্গালী যে প্রতিবাদ করতে পারে এটা শোষক শ্রেনী ভুলে গেছে!
আমাদের জীবন থেকে হারিয়ে যাচ্ছে দিন, মাস, বছর কিন্তু সত্যিকারের জীবনের স্বাদ পেলাম কি? বাঁচার মত করে বাঁচতে পারলাম কি? স্রষ্টার সৃষ্টিতে একই মানুষ হয়ে কেন একজন হায়েনা আর একজন তাদের বিষ থাবায় রক্তাক্ত?
[ আমার এই লেখা যাদের নিয়ে তাদের বড় অংশই হয়ত এই লেখা পড়বে না। আপনি তাদের প্রতিনিধি, তাদের পাশে দাড়ান, তাদের সজাগ করুণ ]
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।