মুখে ফেনা তুলে স্লোগান দিয়ে মানবতার বুলি ফোটে. অথচ নিজেদের বিবেকেও মানবতাবোধ বলে কিছু আছে কি না ? জানিনা আমরা. এমন অসংখ্য ঘটনাই আছে, মুখে বলে চলেছি আমরা; কিন্তু নিজেরাই সেটা করতে পারছি না.
বাংলা. আমাদের ভাষা. অথচ এ ভাষার স্বীকৃতি পেতে রক্ত দিতে হয়েছে. তবুও কতটা শ্রদ্ধা ভক্তি রয়েছে আমাদের. এফএম রেডিও সহ কিছু জায়গায় ঘাটাঘাটি করলে এমন প্রশ্নের জন্ম নেয়.
বাংলাদেশ. বিশ্বের মানচিত্রে এই নামটি জায়গা নিতে অংসখ্য প্রাণ হারাতে হয়েছে. পরাধিনতার জিঞ্জির থেকে মুক্তি পেতে দিতে হয়ে ইজ্জত. আজ স্বাধিন বাংলাদেশ. আমি কি মিথ্যা বলেছি ? যদি মিথ্যা বলে না থাকি, তবে আরও একটি প্রশ্ন করি- আপনি কি স্বাধিন ?
এ দেশের সরকার ব্যবস্থা গণতান্ত্রিক. এখানে গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে প্রতিটি মানুষের. স্বাধিন ভাবে রাজনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনার অধিকার রয়েছে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধিত দল গুলোর. কি হয়েছে, কি হচ্ছে; সেটা না বলেই আরও একটি প্রশ্ন করি- রাজনৈতিক দল গুলোর কর্মসূচি পালনে বাস্তবতা কি ? জানিনা কি উত্তর মিলিয়েছেন আপনি ? তবে কিছু কর্মসূচি যে স্বাধিন তারও একটা তথ্য তুলে ধরি. ১৮ ডিসেম্বর যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও ধর্ম ভিত্তিক রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাতিলের দাবীতে কমিউনিস্ট পার্টি ও বাসদ হরতাল আহ্বান করেছে। বাম মোর্চা'র এই কর্মসূচিকে অপতৎপরতা উল্লেখ করে ২০ ডিসেম্বর হরতাল আহ্বান করেছে ইসলামিক সমমনা ১২দল। দু'দলের জন্য যে প্রশ্নের জন্ম নিয়েছে- কি এমন জনস্বার্থে এই দাবী, যার কারণে এ কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে.
ছোট বেলার একটা গল্প বলি. আমি তখন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী. বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক চাকুরীর শেষ বয়সি. অনেকটা উদাসিন তার কর্মকান্ড. একদিন ধর্ম স্যার না থাকায় ক্লাসের সময় আমরা চিৎকার করছিলাম. এতে অন্য ক্লাসের সমস্যা হওয়ায় এগিয়ে আসলেন হেডস্যার. ক্লাসে ঢুকেই তিনি রাগা-রাগি করে বললেন বই দাও. একজন বই দিয়ে দেখিয়ে দিলেন এই পাতায় আজ পড়ানো হবে. স্যার সরাসরি পড়ে যাচ্ছিলেন. এই পড়ার মধ্যে কখন তিনি ধূমপান বিরোধী বক্তব্য ও এর কুফল বলে গেছেন, তা হয়তো স্যার টের পাননি. কিন্তু সেদিন আমার দৃষ্টি এড়াইনি, তখনও স্যারেরা হাতে ছিলো জলন্ত সিগারেট.
যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাই. বাংলাদেশের স্বাধিনতা যদি গর্ব আর অহংকার হয়, তবে এদেশে যুদ্ধাপরাধীর শাস্তি না হওয়া মানে আমাদের লজ্জা. আমি ব্যক্তিগত ভাবে বিশ্বাস করি এই বিচারের পক্ষে দেশের অধিকাংশ তরুণ সমাজও। ট্রাইবুনালে চলছে বিচার কার্যক্রম আর রাজনৈতিক মঞ্চে আগাম বক্তব্য। কবে কখন বিচারের রায় এবং বাস্তবায়ন হবে এমন ঘোষনাও দিচ্ছেন কিছু নেতৃবৃন্দ।
এতে অনেক প্রশ্নের সৃষ্টি হয়; হয় বিতর্ক। বিচার স্বাভাবিক চলুক, আপনারা কি স্বাভাবিক বক্তব্য দিতে পারেন না।
বিএনপি-জামায়াতের হরতালকেও সমর্থন করি আমি. তবে নেতৃবৃন্দের কাছে খুব জানতে ইচ্ছে করে, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি কেন নয় ? কেন হরতালের আগে রাজধানীতে গাড়ীতে আগুন লাগে। হরতালে গাড়ী বের করা চালককে থামিয়ে কেন গাড়ী বের করেছে তা জানতে না চেয়ে, হরতালে গাড়ী বের না করার বিষয়টি না বুঝিয়ে হামলা করা হয়। মারধর করা হয় গাড়ী চালক, যাত্রীদের।
ভাংচুর ও অগ্নিকান্ড ঘটিয়ে অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধন করা হয় ? জনগনের জান-মালের ক্ষতি করার এ কর্মসূচিকে কি জনস্বার্থের কর্মসূচি বলবেন ? হরতাল আহ্বান করার গণতান্ত্রিক অধিকার আপনাদের রয়েছে. জনগণ সমর্থন করলে হরতাল পালন করবে, আর যদি সমর্থন না করে তবে কি তারা ঘরে বসে থাকবে ? থাকবে না; আর এ কারণেই গণতান্ত্রিক সমর্থনে সবার মাঝেই ভীতির সৃষ্টি হয়।
যে প্রশ্নের উত্তর দিতে পারিনি :
আমি পেশায় একজন সংবাদকর্মী. পেশাগত কাজে একদিন সেনাক্যাম্পে যেতে হয়েছে. সেখানে আপ্যায়ন করার সময় গল্প করছিলেন এক সেনা কর্মকর্তা. হঠাৎ তিনি আমায় প্রশ্ন করলেন- বিশ্বজিৎ হত্যাকান্ডকে কি ভাবে দেখছেন ? প্রশ্নের সাথে জানিয়েও দিলেন, এটা একজন মানুষ হিসেবে তার জানতে চাওয়া. আমিও সংবাদকর্মী নয়, সাধারণ মানুষ হিসেবেই উত্তর দিয়েছিলাম. জানিনা, উত্তর গুলোর তার সঙ্গে মিলেছে কি না ? বিদায় নেওয়ার আগ মুহুর্তে তিনি বললেন, মিডিয়া কত এগিয়েছে. বিশ্বজিৎ হত্যাকান্ডের খবর গুলোতে চোখ বুলাতেই বোঝা যায়. মাথা ঝুঁকিয়ে তার এ কথায় সমর্থন জানালাম, কারন; মিডিয়া কর্মী হিসেবে তখন বুকের মধ্যে একটু সুখের অনুভূতি পেলাম. তিনি বললেন, ঘটনাস্থলে নিস্ক্রিয় পুলিশের ভূমিকা মিডিয়ায় প্রকাশের কথা. জানালেন সেখানে উপস্থিত আনুমানিক সাংবাদিকের সংখ্যা. প্রশ্ন করলেন- মানবতা আর মানবধিকার রক্ষায় নিয়োজিত এত গুলো সংবাদকর্মীর মধ্য থেকে একজন সাংবাদিক কি বিশ্বজিৎকে রক্ষার চেষ্টা করেছে ?
আমিনুল শ্রাবণ
সংবাদকর্মী
১৮১২২০১২ ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।