আমি একজন অলস মানুষ। কথা বেশি বলি। কাজ করি কম। তবে নিজের পায়ে হাটি। এবারের মেডিকেল ভর্তি নিয়ে সরকার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে আমি তার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।
কোচিং সেন্টার এর প্রভাব কমানোর জন্যে সরকার এমন একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানি । আর সব মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষগন এত বেশি ছাত্র ছাত্রীর ভর্তি পরীক্ষা না নেয়ার ব্যাপারে সন্মতি জানিয়েছেন। তাই তারা এই ভর্তি পরীক্ষার প্রথাটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
যদি আপনাদের বেশি মনে হয়, তাহলে একটা নির্দিষ্ট সংখ্যক ছাত্র ছাত্রীদের পরীক্ষার সুযোগ দিতে পারেন। এটা হতে পারে যতগুলো আসন আছে তার ১০ অথবা ১৫ গুন ছাত্র ছাত্রী পরীক্ষার জন্যে মনোনীত হবে ।
এটা যে কোনও একটা মানদণ্ডে করা যেতে পারে। শুধু এস এস সি এবং এইচ এস সি এর ফলাফল দিয়ে তো মেধার মূল্যায়ন করা যায়না। এজন্যেই তো যুগ যুগ ধরে ভর্তি পরীক্ষার প্রথা চালু আছে। নাকি আজকে ২০১২ সালে এসে আপনারা (সরকার এবং মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষগন ) অতিতের এত বড় ভুল (!!!) ধরতে আসলেন?
আমার এক বন্ধুর ছোট বোন খুবই মেধাবী। এস এস সি তে গোল্ডেন এ্+ পেয়েছে।
কিন্তু এইচ এস সি তে জি পি এ ৪ দশমিক ৮০ পেয়েছেন। যতদূর জানি দিন রাত পড়াশুনা করে যাচ্ছে বাবা মায়ের স্বপ্ন পুরনের পাশাপাশি নিজের মেধা টাকে কাজে লাগিয়ে দেশের মানুষের সেবা করার অভিপ্রায়ে। যদি ফলাফলের ভিত্তিতে মেডিকেল এ ভর্তি করানো হয়, তবে কি তার ভর্তি পরীক্ষার ফর্ম কেনার প্রয়োজন আছে ? যেখানে ৬১ হাজার ছাত্র ছাত্রী জি পি এ ৫ পেয়েছে সেখানে তো তার অবস্থান এমনিতেই ৬১ হাজার এর পর । যে ছাত্রী এস এস সি তে গোল্ডেন এ্+ পেয়েছে আমি তো তাকে মেধাহীন অথবা মেডিকেল এ ভর্তির অযোগ্য বলতে পারিনা। তাহলে আজ কেন সে এই সুযোগ থেকে বঞ্ছিত হবে?
তাই বর্তমান সাজেশনভিত্তিক পবলিক পরীক্ষায় যেখানে মূল বইয়ের দশ শতাংশ পড়ে জিপিএ-৫ পাওয়া যায় সেখানে শুধু ফলাফল দিয়ে মেডিকেলে ভর্তি করালে অনেক মেধাবী ছাত্র - ছাত্রী মেডিকেল এ পড়ার সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে এতে কোনও প্রকার সন্দেহ নেই।
ধুলোয় মিশে যেতে পারে বিগত ১৮ বছরের বোনা অনেক ভাই বোন মা বাবার স্বপ্ন । এ রকম ঠুনকো কারনে এমন একটা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে সরকারের মাথা মোটা নীতিনির্ধারক দের আরও ভাবা উচিৎ ছিল।
যাদের কাছে নিরাপত্তা চাইলে বলে - বাসায় নিজ দায়িত্তে তালা লাগান
যাদের কাছে খাবার চাইলে বলে - কম খান
যাদের কাছে দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতির জবাব চাইলে বলে - বাজারে কম যান
তারা এর চেয়ে আর কি ভালো সিদ্ধান্ত নিবে ?
অতএব এখনও সময় আছে । চাইলে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে প্রয়োজনে যতগুলো আসন আছে তার ১০ অথবা ১৫ গুন ছাত্র ছাত্রী কে পরীক্ষার জন্যে মনোনীত করতে পারেন । তবুও দয়া করে এমন একটি আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিবেন না।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।